প্রকল্পে দ্বৈততা, এনজিওগুলোর পকেটে শত কোটি টাকা!
>> পরিকল্পনা কমিশনের দাঁতে অত ধার নেই : ড. জাহিদ
>> স্বাস্থ্যের কাজ কেন সমাজসেবা করবে : আইএমইডি
>> প্রকল্পের এতকিছু দেখা সম্ভব নয় : পরিকল্পনা কমিশন
>> নতুন প্রকল্পের ছাড়পত্র দেয় মন্ত্রণালয় : সমাজকল্যাণ সচিব
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলা অধিদপ্তর, জাতীয় মহিলা সংস্থা ও বিভিন্ন এনজিও প্রশিক্ষণের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প। প্রকল্প প্রস্তাবনা ও অনুমোদনে ‘বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ- এর (আইএমইডি) সুপারিশগুলোও হচ্ছে উপেক্ষিত।
এমন বাস্তবতায় ‘তৃণমূলপর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন’ শীর্ষক প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা সমাজসেবা অধিদপ্তরে বর্তমানে ৪৩টি প্রকল্প চলমান। এসব প্রকল্পের পেছনে মোট ব্যয় প্রায় হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পগুলোর মধ্যে মাত্র সাতটি প্রকল্প অধিদপ্তর নিজে বাস্তবায়ন করছে। বাকিগুলো বিভিন্ন এনজিও’র মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। নিজেরা না করে এনজিওগুলোর মাধ্যমে করালে লাভবান হন অধিদপ্তরের উপর মহলের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় বিভিন্ন এনজিও’র মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রকল্পের সঙ্গে দ্বৈততা আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাতীয় মহিলা সংস্থার ‘তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন’ প্রকল্প, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ‘আইজিএ’ প্রকল্প, মহিলা সংস্থার ‘৬৪ জেলায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ’ প্রকল্প, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ‘ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থান’ প্রকল্প এবং আইসিটি’র ‘কম্পিউটার প্রশিক্ষণ’ ইত্যাদি প্রকল্প।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, এ জাতীয় বেশির ভাগ প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়। অথচ আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগ প্রকল্পের দ্বৈততা পরিহার না করে এবং আইএমইডি’র সুপারিশ আমলে না নিয়ে অহরহ এমন প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা সমাজসেবা অধিদপ্তরে বর্তমানে ৪৩টি প্রকল্প চলমান। এসব প্রকল্পের পেছনে মোট ব্যয় প্রায় হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পগুলোর মধ্যে মাত্র সাতটি প্রকল্প সমাজসেবা অধিদপ্তর নিজে বাস্তবায়ন করছে। বাকিগুলো বিভিন্ন এনজিও’র মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
দেখা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তর নিজে বাস্তবায়ন না করে এনজিও’র মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি আগ্রহী। অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এনজিও’র মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলে অধিদপ্তরের উপর মহলের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা বেশি লাভবান হন। এনজিও’র মাধ্যমে বাস্তবায়িত বেশির ভাগ প্রকল্পই লুটপাটের। এসব প্রকল্পের ডিপিপি তৈরিতেও বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হয়।
কিন্তু এখানে যদি সিন্ডিকেট হয়ে যায়, এনজিওগুলোর নামে অন্য সুবিধাবাদীরা যদি জোট করে এখানে লুটপাটের জায়গা তৈরি করে…, তাহলে তো সমাজকল্যাণের যে উদ্দেশ্য সেটা অর্জিত হবে না। এনজিওগুলো সিলেকশনে একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়া থাকতে হবে। সিলেকশন যদি স্বচ্ছ না হয় তাহলে প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে না
অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন
পরিকল্পনামন্ত্রীর ক্ষমতাবলে যেসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়, সেগুলোর বেশির ভাগই সমাজসেবার। এগুলো ৫০ কোটি টাকার নিচের প্রকল্প। এখানে প্রকল্প যাচাই-বাছাইয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সিন্ডিকেট কাজ করে। ফলে কোনো কিছু আমলে না নিয়েই এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয় পরিকল্পনা কমিশন।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশন ‘তৃণমূলপর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন’ শীর্ষক প্রকল্পের উপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদনের পর চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৫ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় মহিলা সংস্থা।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হচ্ছে- বেকার ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, আত্ম-নির্ভরশীলতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ ও সহায়তার পাশাপাশি নারী সমাজকে মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুই লাখ ৫৬ হাজার নারীর দক্ষতা উন্নয়ন করা। নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিপণনের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রকল্পের অধীনে ৮০টি বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র, ৮০টি ফুড কর্নার এবং ৮০টি বিউটি পার্লার স্থাপন করে এক হাজার ৬০০ নারী উদ্যোক্তাকে স্থায়ীভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিপণনে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে একটি ক্রয়/বিক্রয় সফটওয়্যার তৈরি করা এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সব প্রশিক্ষণার্থীকে নিয়ে একটি ডাটাবেজ সফটওয়্যার তৈরি করা।
প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে, অফিস সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র ক্রয়, কম্পিউটার সরঞ্জাম ক্রয়, মোটরযান ক্রয়, সফটওয়্যার ও ডাটাবেজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা ইত্যাদি।
পরিকল্পনা কমিশন প্রশ্ন তুলতে পারে। তারা যে প্রশ্নটা তুলল, সেটার ব্যাখ্যা দিল কি দিল না, সেরকম কোনো বাধ্যবাধকতা কিন্তু নাই। উনাদের (পরিকল্পনা কমিশন) দাঁতের ধার তো তত নাই
অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন
প্রকল্পটিতে আইএমইডি বেশকিছু মতামত দিয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের বিষয়, প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে উল্লেখসহ সময়োপযোগী বিষয়গুলো বিবেচনাপূর্বক সেগুলো নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইতোমধ্যে উপজেলাপর্যায়ের মহিলাদের জন্য ‘আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ’ নামে একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের কাজের ওভারল্যাপিংয়ের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে আইটেমভিত্তিক ব্যয় বিভাজনের ক্ষেত্রে ‘থোক’ উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রাক্কলনযোগ্য। থোক মূল্যের কোনো রেফারেন্স উল্লেখ করা নেই, ব্যয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে রেফারেন্স উল্লেখ করতে হবে। প্রস্তাবিত মালামাল নিটভিত্তিক করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে জাতীয় মহিলা সংস্থা কর্তৃক এ ধরনের কার্যক্রম/প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং ওইসব প্রকল্পে বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। সুতরাং প্রয়োজনের ভিত্তিতে ক্রয়প্রস্তাব সংশোধন করা প্রয়োজন।
আমারও একই প্রশ্ন, স্বাস্থ্যের কাজ কেন সমাজসেবা করবে। প্রকল্পের অনুমোদনের পর মূলত আইএমইডি’র কার্যক্রম শুরু হয়। তারপরও আমরা পিইসি সভায় অনেক প্রশ্ন তুলি
এস এম হামিদুল হক, মহাপরিচালক, আইএমইডি
এছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মহিলা অধিদপ্তর, জাতীয় মহিলা সংস্থা ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এক্ষেত্রে বিগত ১০ বছরে কী পরিমাণ সেবা দেয়া হয়েছে এবং মন্ত্রণালয়ের অর্জন কতটুকু টেকসই হয়েছে, সর্বোপরি মন্ত্রণালয়ের অভিজ্ঞতা, ব্যর্থতা, দক্ষতা সেন্ট্রালি মনিটরিং বা তথ্য সংরক্ষণ অ্যালোকেশন অব বিজনেসের মধ্যে পড়ে, যা অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমে কোনো ওভারল্যাপিং হলে তা সংশোধন করে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় রোধ ও অধিক ব্যবহার রোধ করা যাবে— মনে করছে আইএমইডি।
এ বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যেসব সেবা দেয়ার কথা, সেই সক্ষমতা তো তাদের নাই। কাজেই এনজিওগুলোর প্রয়োজন আছে। সেবা যাদের দেওয়া হবে তাদের এবং মন্ত্রণালয়ের মাঝামাঝি একটা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন আছে। যারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে পারে।’
‘কিন্তু এখানে যদি সিন্ডিকেট হয়ে যায়, এনজিওগুলোর নামে অন্য সুবিধাবাদীরা যদি জোট করে এখানে লুটপাটের জায়গা তৈরি করে…, তাহলে তো সমাজকল্যাণের যে উদ্দেশ্য সেটা অর্জিত হবে না। এখানে এনজিও সিলেকশনের ক্ষেত্রে একটা নির্দেশনা থাকার কথা, কারা কারা মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো পেতে পারে। আমার মনে হয়, এনজিও সিলেকশনে প্রবলেম (সমস্যা) রয়েছে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যদি সিলেকশন না হয় তাহলে প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে না।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যেসব সেবা দেয়ার কথা, সেই সক্ষমতা তো তাদের নাই। কাজেই এনজিওগুলোর প্রয়োজন আছে। সেবা যাদের দেওয়া হবে তাদের এবং মন্ত্রণালয়ের মাঝামাঝি একটা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন আছে। যারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে পারে
অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা কমিশন প্রশ্ন তুলতে পারে। তারা যে প্রশ্নটা তুলল, সেটার ব্যাখ্যা দিল কি দিল না, সেরকম কোনো বাধ্যবাধকতা কিন্তু নাই। উনাদের (পরিকল্পনা কমিশন) দাঁতের ধার তো তত নাই। আপনি একটা ডিপিপি পাঠালেন। আমি বললাম, এখানে এখানে প্রশ্ন আছে। আমি এটা দিয়ে ফেরত পাঠালাম। তারপর আপনি যদি বিভিন্নভাবে তদবির করে পরিকল্পনা কমিশনের ওপর একটা চাপ তৈরি করেন…, এটা বন্ধ করতে হবে। চাপ দিলে তো পরিকল্পনা কমিশনের আর উপায় থাকে না। এটা বাস্তবতা, এটা আমাদের আমলে নিতে হবে।’
‘পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্ব অবশ্যই আছে প্রশ্নগুলো তোলার। তারপর ওইটার ফলাফল কিছু পাওয়া গেল কি-না, সেটা নিশ্চিত করার ক্ষমতা পরিকল্পনা কমিশনের নাই। পরবর্তীপর্যায়ে কীভাবে এসব প্রকল্প পার পেয়ে যাচ্ছে…, এখানে সমস্যা অনেক গভীর। শুধু একটা পক্ষকে কেউ দায়ী করতে পারে না।’
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘কোনো প্রকল্পের দ্বৈততা থাকলে সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দেখবে। আমরা তো এত কিছু দেখতে পারি না। মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পের প্রস্তাব আসলে আমরা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিচ্ছি। তারপরও যদি আপনাদের চোখে কিছু ধরা পড়ে, সেগুলো লিখতে পারেন। তাহলে আমরা এবং মন্ত্রণালয়গুলো সর্তক হতে পারব।’
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক বিভাগ ২০টিরও বেশি এডিপিবহির্ভূত প্রকল্প পিইসি সভা করে অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা দিতে নয়টি প্রকল্পের ওপর পিইসি সভা করেছে কমিশন। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ‘ইনক্লুসিভ আই কেয়ার ফ্যামিলিটিস হাসপাতাল স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প, ‘দারিদ্র্য বিমোচন সংস্থা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, চরফ্যাশন’ প্রকল্প, ‘আমাদের বাড়ি কমিউনিটি হাসপাতাল, পাঁচঘোলা মাদারীপুর’ প্রকল্প, ‘খানবাড়ি কমিউনিটি হাসপাতাল, পাঁচখোলা মাদারীপুর’ প্রকল্প, ‘প্রফুল্ল প্রতিভা প্রবীণ নিবাস এতিমখানা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সাহায্য কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্প, প্রতিবন্ধী বিধবা ও দুস্থদের কল্যাণে শামসুদ্দিন গোলজান ট্রেনিং কমপ্লেক্স এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্প, ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল, নোয়াখালী’ প্রকল্প, চিকিৎসাসেবা ও বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প এবং ‘ছেতারা ছফিউল্লাহ কিডনি ও প্রতিবন্ধী সেবা’ শীর্ষক প্রকল্প। এর বাইরেও প্রশিক্ষণের নামে অনেক প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। যেগুলোর দ্বৈততা পরিহার না করে নামমাত্র যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হচ্ছে— অভিযোগ পরিকল্পনা কমিশনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
এনজিও’র মাধ্যমে আমরা যেসব কাজ করি, সেগুলো অনেক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দ্বৈততা হয়, আমি একমত। কিন্তু যেকোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ওভারল্যাপিং হলে তো মন্ত্রণালয়গুলোর জানার কথা। তারপরও আমরা কোনো তথ্য পেলে প্রকল্প গ্রহণে সতর্ক থাকব
মোহাম্মদ জয়নুল বারী, সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
এ বিষয়ে আইএমইডি’র মহাপরিচালক এস এম হামিদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমারও একই প্রশ্ন, স্বাস্থ্যের কাজ কেন সমাজসেবা করবে। প্রকল্পের অনুমোদনের পর মূলত আইএমইডি’র কার্যক্রম শুরু হয়। তারপরও আমরা পিইসি সভায় অনেক প্রশ্ন তুলি।’
অনেক সময় পিইসি সভায় আপনাদের সুপারিশ উপেক্ষা করা হয়— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা কীভাবে বলব। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন হয়। তারপরও আপনি আমাদের সচিবকে বিষয়টি অবগত করতে পারেন। আর এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় দিতে পারবে।’
যোগাযোগ করা হলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এনজিও’র মাধ্যমে আমরা যেসব কাজ করি, সেগুলো অনেক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দ্বৈততা হয়, আমি একমত। কিন্তু যেকোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ওভারল্যাপিং হলে তো মন্ত্রণালয়গুলোর জানানোর কথা। তারপরও আমরা কোনো তথ্য পেলে প্রকল্প গ্রহণে সতর্ক থাকব।
এসআর/এমএআর/ওএফ