আত্মবিশ্বাস বাড়ছে আকাশপথে
২০২০ সালের মার্চ মাস। সারাবিশ্বে মহামারির আকার ধারণ করে করোনাভাইরাস (কোভিড- ১৯)। সংক্রমণের আতঙ্কে বাতিল হয় একের পর এক ফ্লাইট। কমে যায় যাত্রী সংখ্যা, বাংলাদেশে আসা বন্ধ করে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশেও বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব (চারটি রুট বাদে) আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের চলাচল। সেসময় দু-একদিন পরপর বাংলাদেশে আসত সর্বোচ্চ একটি করে বিশেষ ফ্লাইট। থমকে যায় বিমানবন্দরগুলোর সার্বিক কার্যক্রম। ২৪ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় অভ্যন্তরীণ রুটের সব ফ্লাইট। নীরব ও ভূতুড়ে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় দেশের বিমানবন্দরগুলোতে।
করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ১ জুন থেকে চালু হয় অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট। এরপর পর্যায়ক্রমে চালু হতে থাকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো। বর্তমানে প্রায় স্বাভাবিক দেশের আকাশপথ।
করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে দিনে ২২০টি ফ্লাইট ওঠা-নামা করত। অভ্যন্তরীণ রুটে দিনে ১১৪-১১৫টি ফ্লাইট এবং আন্তর্জাতিক রুটে ১১০টি ফ্লাইট পরিচালিত হতো। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটে ১১০টি এবং আন্তর্জাতিক রুটে শতকরা ৫০ ভাগ ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানায়, করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে স্বাভাবিক সময়ে বিমানবন্দর দিয়ে দিনে ২২০টি ফ্লাইট ওঠা-নামা করত। এগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ রুটে দিনে ১১৪-১১৫টি এর মতো ফ্লাইট চলত। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ১১০টি করে ফ্লাইট যাচ্ছে। অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের হার প্রায় শতভাগ।
পাশাপাশি আগে যেখানে দৈনিক ১১০টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠা-নামা করত, বর্তমানে সেই সংখ্যা প্রায় ৫০ ভাগ। মাঝে সৌদি সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই সপ্তাহ ফ্লাইট চলাচল কিছুটা কম থাকলেও সংখ্যাটা এখন আগের মতো।
বর্তমান সময়ে বিশ্বের কোনো দেশেই এখনও ফ্লাইট চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। অনেক এয়ারলাইন্স নিয়মিত লোকসান করছে। তবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। যাত্রীদের আস্থা বাড়ছে
এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, চেয়ারম্যান, বেবিচক
ঢাকার পাশাপাশি সিলেট বিমানবন্দর থেকে লন্ডন এবং চট্টগ্রাম থেকে দুবাই, কাতার ও ওমানে ফ্লাইট চলাচল করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের যেকোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের এভিয়েশন পরিস্থিতি তুলনামূলক সন্তোষজনক।
সার্বিক পরিস্থিতি যাচাই করে দেখা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশের তিনটিসহ মোট ২৩টির মতো এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ফ্লাইট চালুর অনুমতি পাওয়ার পরপর যেসব এয়ারলাইন্স সপ্তাহে দুটি বা তিনটি ফ্লাইট নিয়ে চলাচল শুরু করেছিল তাদের মধ্যে সবাই ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়েছে। দৈনিক সর্বোচ্চ দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে এমিরেটস ও কাতার এয়ারওয়েজ। টার্কিশ এয়ারলাইন্স দৈনিক একটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, অনেকে কোভিড- ১৯ এর আগে বিভিন্ন দেশে ঘুরতে যাওয়ার টিকিট কেটে রেখেছিলেন। তুরস্ক, দুবাইয়ের মতো যেসব রুটে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে সেগুলোতে যেতে শুরু করেছেন ভ্রমণপিপাসুরা।
বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট করোনাপূর্ববর্তী সময়ের মতো শতভাগ স্বাভাবিক হয়েছে। করোনার আগে যে সংখ্যক যাত্রী যেত বর্তমানে প্রায় সমান সংখ্যক যাত্রী যাচ্ছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের প্রায় ৫০ ভাগ স্বাভাবিক হয়েছে
গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ উল-আহসান, পরিচালক, শাহজালাল বিমানবন্দর
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল-আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফ্লাইট চলাচলের পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। একদিকে যাত্রীদের আকাশপথে চলাচলের আস্থা ফিরেছে, অন্যদিকে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের যাত্রী বহনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় যাত্রী ও ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট করোনাপূর্ববর্তী সময়ের মতো শতভাগ স্বাভাবিক হয়েছে। করোনার আগে যে সংখ্যক যাত্রী যেত বর্তমানে প্রায় সমান সংখ্যক যাত্রী যাচ্ছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের প্রায় ৫০ ভাগ স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই আগের মতো স্বাভাবিক হবে আকাশপথ।
সিট ভরে উড়ছে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো
বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ারলাইন্সগুলো জানিয়েছে, বর্তমানে গড়ে প্রায় ৮০ ভাগ সিট ভরে ফ্লাইট পরিচালনা করছে তারা। যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা এবং আকাশপথে চলাচলের আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে তাদের। টিকিটের চাহিদা বেশি কক্সবাজার, সিলেট, চট্টগ্রাম, মাস্কাট ও দুবাই রুটের।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের প্রতি অনেকটা আস্থা রাখছেন যাত্রীরা। গত জুনের পর অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ধারাবাহিকভাবে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে প্রায় সব রুটে গড়ে শতকরা ৮০ ভাগ যাত্রী বহন করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
মো. কামরুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ), ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের প্রতি অনেকটা আস্থা রাখছেন যাত্রীরা। গত জুনের পর অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ধারাবাহিকভাবে যাত্রীসংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে প্রায় সব রুটে গড়ে শতকরা ৮০ ভাগ যাত্রী বহন করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ফ্লাইট পরিচালনা হচ্ছে। কক্সবাজার রুটে যাত্রীর চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপে যাত্রী বেশি
করোনার কারণে দীর্ঘদিন বিরতি দেওয়ার পর যখন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হয় তখন টার্কিশ এয়ারলাইন্স, এমিরেটস ও কাতার এয়ারওয়েজ ফ্লাইট চালু করে। এসব এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে প্রধানত বাংলাদেশি যাত্রীরা মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেন। আন্তর্জাতিক রুটে সেবা দেওয়া এমন ছয়টি এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে তারা ইউরোপ-আমেরিকার প্রচুর যাত্রী পাচ্ছেন। প্রবাসীদের পাশাপাশি অনেক পর্যটকও এখন ভ্রমণে বের হচ্ছেন।
টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশের সেলস অ্যান্ড ট্রাফিক অফিসার এজাজ কাদরি ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনাকালীন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু হয়ে বর্তমানে সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে টার্কিশ এয়ারলাইন্স। ফ্লাইট চালুর প্রথম দিন থেকেই আমরা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে শতভাগ যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছি। প্রথমদিকে যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা শঙ্কা থাকলেও বর্তমানে তারা পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আকাশপথে চলাচল করছেন। তুরস্ক ছাড়াও টার্কিশ এয়ার কানেক্টিং ফ্লাইটের মাধ্যমে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে যাত্রী বহন করছে৷ যুক্তরাজ্যের অনেক যাত্রী আমাদের ফ্লাইটে আসা-যাওয়া করেন। দেশটিতে করোনার প্রকোপ বাড়ায় বর্তমানে ওই রুটে যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কম। তবে সবমিলিয়ে মোটামুটি প্রতিটি ফ্লাইটে ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ যাত্রী থাকে। এছাড়া যেসব দেশ পর্যটকদের জন্য তাদের আকাশপথ খুলে দিয়েছে সেসব দেশে বাংলাদেশের অনেকেই ঘুরতে যাচ্ছেন।
করোনার কারণে এ খাত কিছুটা ধাক্কা খেলেও এখনপর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণেই ফ্লাইট বন্ধের ১১ বছর পর বাংলাদেশে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের মতো প্রতিষ্ঠান আসতে চায়। চার ফ্লাইট বন্ধ রেখে ইতিহাদও ফিরেছে। জাজিরা এসেছে, ওমান এয়ার এসেছে। আরও এয়ারলাইন্স আসবে। করোনাকালীন চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচক
কাজী ওয়াহিদুল আলম, এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ
এমিরেটস বাংলাদেশের প্রতিনিধি ঢাকা পোস্টকে জানান, বর্তমানে যাত্রীদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা ঢাকা-দুবাই-ঢাকা রুটে দিনে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতিটি ফ্লাইটই (বেবিচকের নির্দেশনা অনুযায়ী আসন বিন্যাসের পর) প্রায় পরিপূর্ণ থাকে। যাত্রীদের আকাশপথে আস্থা ফিরিয়ে আনতে এমিরেটস সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যাত্রী কম
অন্যান্য আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী থাকলেও মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যাত্রী যাওয়ার সংখ্যা খুবই কম। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো পর্যটকবান্ধব দেশগুলোর অবস্থা খুবই ভয়াবহ। এসব দেশের পর্যটন স্পটগুলো খুলে না দেওয়ায় ফ্লাইটগুলো প্রায়ই ফাঁকা যাচ্ছে। মাত্র ২০ থেকে ২৫ ভাগ যাত্রী পাচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো।
মালিন্দো এয়ারওয়েজের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) গোলাম মোহাম্মদ সাকলায়েন সেলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে মালিন্দো ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে সপ্তাহে দুদিন অর্থাৎ রোববার ও বুধবার দুটি ফ্লাইট পরিচালনার করছে। মালয়েশিয়া এখনও বাংলাদেশি শ্রমিক ও পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। এ কারণে এ রুটে যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। অন্য ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে যারা যাচ্ছেন তাদের সংখ্যা ২৫ ভাগের নিচে। মালয়েশিয়া সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে এ রুটে যাত্রীসংখ্যা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সাকলায়েন সেলিম আরও বলেন, মালয়েশিয়ার পাশাপাশি মালিন্দো কানেক্টিং ফ্লাইটের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি গন্তব্যে যাত্রী বহন করছে। এসব দেশে ট্রাভেল রেস্ট্রিকশন ও পর্যটক না যেতে পারায় যাত্রী কম।
এছাড়া শ্রমিকদের জন্য সিঙ্গাপুরের দ্বার খুলে দেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক যাত্রী পাচ্ছে না সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স।
দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান সময়ে বিশ্বের কোনো দেশেই এখনও ফ্লাইট চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। অনেক এয়ারলাইন্স নিয়মিত লোকসান করছে। তবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। যাত্রীদের আস্থা বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ রুটে প্রচুর যাত্রী আসা-যাওয়া করছেন। সরকার, এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দরগুলোর সমন্বিত সহযোগিতায় আমরা পরিস্থিতি সঠিকভাবে উত্তরণ করতে সক্ষম হয়েছি।
বিশিষ্ট এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম এ প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ভারত, সিঙ্গাপুর, নেপালের মতো দেশগুলো পুরোদমে তাদের ফ্লাইট চালু করতে করেনি। তবে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ফ্লাইট অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এভিয়েশন খাত অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। করোনার কারণে এ খাত কিছুটা ধাক্কা খেলেও এখনপর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণেই ফ্লাইট বন্ধের ১১ বছর পর বাংলাদেশে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের মতো প্রতিষ্ঠান আসতে চায়। চার ফ্লাইট বন্ধ রেখে ইতিহাদও ফিরেছে। জাজিরা এসেছে, ওমান এয়ার এসেছে। আরও এয়ারলাইন্স আসবে। করোনাকালীন চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের জন্য সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, আমাদের এক থেকে দেড় কোটি মানুষ প্রবাসী। এছাড়া প্রচুরসংখ্যক শিক্ষার্থী বিদেশে পড়াশোনা করে। করোনার সময়টাতে হলিডে ট্রিপ বা লেজার ট্রিপ না থাকলেও প্রবাসী ও শিক্ষার্থীদের কারণে এয়ারলাইন্সগুলো প্রচুর যাত্রী পাচ্ছে। এজন্য এ খাতে স্ট্রং গ্রোথ হচ্ছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ২১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে এবং অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ফ্লাইটগুলোর চলাচল বন্ধ করে বেবিচক। এরপর আরেকটি আদেশে চীন বাদে সব দেশের সঙ্গে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞা সরকারি সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে ১৪ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিল, ৭ মে, ১৬ মে, ৩০ মে এবং ১৫ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ১৬ জুন থেকে প্রথমবারের মতো ঢাকা থেকে লন্ডন এবং কাতার রুটে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য দেশের ফ্লাইটগুলো চালু করা হয়।
এআর/এমএআর/