‘ক্লাস নয়, স্টোর রুম পরিদর্শন করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দিন শ্রেণিকক্ষ অপরিষ্কার পেয়ে আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হাছিবুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
মন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে প্রতিষ্ঠান অপরিষ্কার রাখার দায়ে অসদাচারণের অভিযোগ এনে কারণ দর্শাতে নোটিশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। সম্প্রতি সেই নোটিশের জবাব দিয়েছেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হাছিবুর রহমান।
জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, মন্ত্রী প্রথমে যে কক্ষটি পরিদর্শন করেন সেটি ছিল স্টোর রুম। এ রুমে কোনো শ্রেণি কার্যক্রম চলে না। নির্মাণাধীন একটি ভবনের প্রয়োজনীয় ও পরিত্যক্ত মালামাল স্টোর রুমে রাখা হয়েছে। এ রুমটি সবসময় বন্ধ থাকে। প্রতিষ্ঠানের অফিস সহায়কের অসুস্থ স্ত্রী সেদিন সবার অজান্তে রুমটিতে ছিলেন। মন্ত্রীর আগমনের খবরে তিনি রুমের দরজা খোলা রেখে চলে যান। এরপর স্টোর রুমটি মন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়। মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় এ স্টোর রুমের সংস্কার কাজও চলমান ছিল।
অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাছিবুর রহমান বলেন, প্রথমে মন্ত্রী শ্রেণীকক্ষে না ঢুকে স্টোর রুমে ঢুকে পড়েছিলেন। রুমটি অপরিষ্কার দেখে তিনি উত্তেজিত হয়েছিলেন। কিন্তু এটি যে স্টোররুম ছিল, তা মন্ত্রীকে বলতে পারিনি। মাউশির কর্মকর্তারাও কেউ বলেননি।
হাছিবুর রহমান শোকজের জবাবে আরও বলেন, আমি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর চাকরি থেকে অবসর নেব। দীর্ঘ কর্মজীবনে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। আমি কখনো সরকারি কর্মচারী বিধিমালার বিরুদ্ধে কোনো কর্মে লিপ্ত ছিলাম না। অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনে কোনো অসদাচারণ বা দায়িত্বে অবহেলা আমি করিনি। মন্ত্রী পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠানের সব শ্রেণিকক্ষ পরিচ্ছন্ন ছিল।
১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে একটি কক্ষ অপরিষ্কার থাকায় আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা যায়। সঙ্গে তদারকির দায়িত্বে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) কর্মকর্তা সেলিনা হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া হয় বলেও জানা যায়।
পরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, অধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরে এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, অধ্যক্ষের আর চাকরি রয়েছে ১৩ দিন। সে কারণে তাকে শোকজ করার নির্দেশ দিয়েছি। শোকজের জবাব পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের যে কর্মকর্তা মনিটরিয়ের দায়িত্বে ছিলেন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছি।
এনএম/আরএইচ