জাল সনদ ধামাচাপা দিত খোদ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড!
অফিস সহকারী থেকে পিএইচডি ডিগ্রি, সর্বত্র জাল সনদের ছড়াছড়ি। ভুয়া সনদে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এমনকি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন অনেকে। এমন খবর প্রায়ই সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়। সম্প্রতি কারিগরি বোর্ডের একজন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে জাল সনদ তৈরির খবরে নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ শিক্ষা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জাল সনদের বৈধতা দিত খোদ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। সনদ যাচাইয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য না দিয়ে জাল সনদধারীদের সুরক্ষা দিত তারা। ফলে জাল সনদধারী হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষকরা থাকতেন তদন্তের ঊর্ধ্বে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কারিগরি বোর্ড সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, নিয়োগের বৈধতা ও একাডেমিক সনদ যাচাই করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। গত এক দশকে কয়েক হাজার জাল সনদধারী শিক্ষককে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তারা।
২০২৩ সালে সংস্থাটির সুপারিশে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৬৮ শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়।
সংস্থাটি শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষসহ সনদ ইস্যুকারী যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের সনদ যাচাইয়ের এখতিয়ার রাখে। অভিযোগ রয়েছে, কারিগরি বোর্ড সংস্থাটিকে সনদ যাচাই করতে সহায়তা করে না। দীর্ঘ এক দশকে কয়েক হাজার শিক্ষকের সনদ যাচাই করে দিতে বললে কারিগরি বোর্ড থেকে নামমাত্র কিছু সনদ যাচাই করে দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, একাধিকবার চিঠি দিলেও কারিগরি বোর্ড থেকে সদুত্তর মেলেনি।
দীর্ঘদিন ধরে জাল সনদের বৈধতা দিত খোদ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। সনদ যাচাইয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য না দিয়ে জাল সনদধারীদের সুরক্ষা দিত তারা। ফলে জাল সনদধারী হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষকরা থাকতেন তদন্তের ঊর্ধ্বে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও কারিগরি বোর্ড সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে
সংশ্লিষ্টরা জানান, কারিগরি বোর্ড থেকে যত জাল সনদ তৈরি হয়েছে তার সিংহভাগই কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সনদ। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি শিক্ষক পদে এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য এ সনদ বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া দেশের বাইরে পড়াশোনা বা চাকরির জন্য কম্পিউটার সনদের বেশ কদর রয়েছে। এ সুযোগে কারিগরি বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেদারসে আইসিটির ওপর বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদের কোর্সের নামে সনদ বিক্রি শুরু করে। সেসব সনদের বৈধতা দেয় কারিগরি বোর্ড। শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন শিক্ষকরা সেই সনদ দেখিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন এবং পরে তা দেখিয়ে এমপিওভুক্ত হন।
আরও পড়ুন
ডিআইএ কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার ২০১১ সালে প্রতিটি স্কুলের জন্য একজন কম্পিউটার শিক্ষক আবশ্যক বলে ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণার পর এ পদে নিয়োগ পেতে দেশের বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ কেনার হিড়িক পড়ে যায়। এ সুযোগে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইসিটি বিষয়ে সনদ বিক্রি শুরু করে। হঠাৎ গজিয়ে ওঠে বিভিন্ন পলিটেকনিক ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। তারাও দেদারসে কম্পিউটার সনদ বিক্রি শুরু করে। সেই সনদ নিয়ে শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হন।
শিক্ষকদের শিক্ষাগত ও পদোন্নতির জন্য বিভিন্ন সনদ যাচাইকালে ডিআইএ দেখে যে, বেশিরভাগ সনদের অনুমোদনকারী কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। সনদ যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হলে তা যাচাই করা হয় না। ফলে জানার পরও সেসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা সম্ভব হয় না। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো পর মাঝেমধ্যে কিছু সনদ যাচাই করে দিলেও তারা সময় নিত এক থেকে দেড় বছর। এর মধ্যে তদন্তের সময়ও পার হয়ে যেত। ফলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে জাল সনদধারীরা।
সারা দেশে প্রায় ৩৬ হাজার এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। এর মধ্যে প্রায় ২৬-২৮ হাজার কম্পিউটার শিক্ষক রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই জাল সনদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে
সর্বশেষ চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয় কারিগরি বিভাগের সচিবকে। চিঠিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়। জানতে চাইলে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, চিঠি পাওয়ার পর কারিগরি বোর্ডকে সনদ যাচাইয়ের সব ধরনের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এত দিন কেন যাচাই করে দেয়নি, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সনদ যাচাই না করা প্রসঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মামুন উল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি নতুন যোগ দিয়েছি। বিষয়টি একদমই জানা নেই। সরকারি যেকোনো সংস্থা সনদ যাচাইয়ের জন্য আসলে তা করতে আমরা বাধ্য। এমনটি কেন হয়েছে, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গায়েব হয়ে যেত সনদ যাচাইয়ের চিঠি
জানা গেছে, সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ যাচাইয়ের চিঠি আসলে তা গায়েব হয়ে যেত। কারিগরি বোর্ডের পত্রগ্রহণ বা সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে চিঠি গায়েবের জন্য কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ ও দপ্তর বদল করা হয়। এরপরও সেই কাজ বন্ধ হয়নি।
কারিগরি বোর্ডে সাবেক একজন চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা সনদ যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হলে তা পত্রগ্রহণ শাখা থেকে গায়েব হয়ে যেত। কিছু কিছু যদিও আসত, তা সংশ্লিষ্ট শাখা বা সচিবের দপ্তর পর্যন্ত। এরপর সেই চিঠির কোনো হদিস পাওয়া যেত না।
‘আমার সময় পুলিশ পরিচালিত একটি কলেজের কম্পিউটার বিভাগের শিক্ষকদের সনদ যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু যাচাইয়ের চিঠি ও সনদ গায়েব হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, পত্রগ্রহণ শাখা থেকে তা গায়েব করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর ওই শাখা থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণবদলি করা হয়।’
ভুয়া সনদের রক্ষক কারিগরি শিক্ষা বোর্ড
সারা দেশে প্রায় ৩৬ হাজার এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। এর মধ্যে প্রায় ২৬-২৮ হাজার কম্পিউটার শিক্ষক রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই জাল সনদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১১ সাল থেকে দেশের প্রত্যেকটি স্কুলে একজন কম্পিউটার শিক্ষক আবশ্যক ঘোষণা করার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আইসিটির শিক্ষক নিয়োগের তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু ওই সময় কম্পিউটারের ওপর এত সংখ্যক ডিগ্রি নেওয়া ব্যক্তি ছিল না। ফলে যে যার মতো করে সনদ বিক্রি শুরু করে। কারিগরি বোর্ডের মাধ্যমে নেওয়া, লেখা থাকত সেই সনদে।
কম্পিউটার শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে, সরকার অনুমোদিত চারটি প্রতিষ্ঠান জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার), জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার বগুড়া), ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি মেহেরপুর এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর (মশরপুর নওগাঁ)— এসব প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া সনদধারীদের এমপিওভুক্ত করা যাবে।
ডিআইএ কর্মকর্তারা বলছেন, মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করার সময় সরকার অনুমোদন নয়— এমন প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিয়ে চাকরি করছেন বেশিরভাগ শিক্ষক। গত এক বছরে শুধু কম্পিউটার শিক্ষকের সনদ জাল ধরা পড়েছে সাড়ে পাঁচশ। প্রতিনিয়ত এ সনদ ধরা পড়ছে। কিন্তু কারিগরি বোর্ড এসব সনদ যাচাই করে না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া যাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নামমাত্র ছয় মাসের একটি কোর্স করে এমপিওভুক্ত হচ্ছেন এসব শিক্ষক। নিয়োগের পর তারা কম্পিউটার চালু করতে পারেন না— এমন অভিযোগ পেয়েছেন ডিআইএ কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে ডিআইএ পরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) বিপুল চন্দ্র সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমপিওভুক্ত যেকোনো শিক্ষক-কর্মচারীর শিক্ষাগত কিংবা অভিজ্ঞতার সনদ যাচাইয়ের দায়িত্ব সরকার এ প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে যে কারও সনদ আমরা যাচাই করতে পারি। সেভাবে আমরা যাচাই করে আসছি। কিন্তু কারিগরি বোর্ড এখানে সর্বোচ্চ অসহযোগিতা করে আসছে। বেশিরভাগ সনদ তারা যাচাই করে দেয় না। যদিও দিত সেটি এক থেকে দেড় বছর পর। ততক্ষণে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়ে যেত।
পিছিয়ে নেই বিএডধারীরা
সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১৫০টি প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড) ডিগ্রি দেওয়া হয়। এমপিওভুক্ত হওয়ার পর এ ডিগ্রি নিলে একটি গ্রেড অর্থাৎ ১১ থেকে দশম গ্রেডে যান শিক্ষকরা। বিএড ডিগ্রি নিয়েও মহা-কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। গত দেড় বছরে সরকারের অনুমোদন নেই এবং দারুল ইহসানের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান থেকে বিএড ডিগ্রি নিয়েছেন ১১ হাজার শিক্ষক। ডিআইএ বলছে, বিএডধারীদের সনদ জাল প্রমাণিত হলে এমপিও বন্ধ না করে গ্রেড এক ধাপ কমিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে জাল সনদ ইস্যু হতো
ডিআইএ’র তদন্তকালে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন সনদ জাল ও ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। এ ছাড়া বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ), জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার) বগুড়া, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং লিমা কম্পিউটার সায়েন্স একাডেমি পাবনা। এমনও প্রতিষ্ঠানের সনদ রয়েছে যেসব প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পায়নি তদন্ত কমিটি।
রাজশাহীর সেন্টার ফর ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কম্পিউটার্স-এর কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। ডিআইএ বলছে, এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রচুর সনদ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু তদন্তকালে প্রতিষ্ঠানটি বর্ণিত ঠিকানায় পাওয়া যায়নি। এমন আরেকটি প্রতিষ্ঠান হলো কমার্শিয়াল কম্পিউটার সেন্টার। এর অবস্থান এ হামিদ রোড, পাবনা বলা হলেও বর্ণিত ঠিকানায় পাওয়া যায়নি।
যা বলছেন শিক্ষাবিদরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, জাল সনদ দিয়ে শিক্ষকতা করবেন— এমনটা চিন্তা করাও মহাপাপ। যে শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের নীতি-নৈতিকতা শেখান, তারা নিজেরাই যদি অনৈতিক পন্থায় এ পেশায় প্রবেশ করেন তাহলে তিনি শিক্ষার্থীদের কী নৈতিকতা শেখাবেন?
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ভুয়া সনদে শিক্ষক হওয়া মানে তিনি ওই বিষয়ে পাস করেননি। যিনি নিজেই পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি, তিনি শিক্ষার্থীদের কী শেখাবেন? ভুয়া সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ পেশা থেকে তাদের বের করে দেওয়া উচিত।
এনএম/এমএআর