বেসরকারি আরও দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন হচ্ছে
আরও দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ বা ট্রাস্টি বোর্ড (বিওটি) পুনর্গঠন করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে আর্থিক, প্রশাসনিক, একাডেমিক অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতি করার মতো গুরুতর অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠনে করণীয় ঠিক করতে সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। গোপনীয় এ বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সংশ্লিষ্ট তিনজন কর্মকর্তাও উপস্থিত থাকবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডে যারা আসবেন তাদের নাম চূড়ান্ত করা হতে পারে। নাম চূড়ান্তের পর সরকারপ্রধানের সম্মতি নিয়ে অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতির কাছে। তার অনুমতির পর নতুন ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠনের গেজেট প্রকাশ করা হবে। তবে, দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বিওটিতে যারা আসছেন তাদের নাম জানা সম্ভব হয়নি।
এর আগে নর্থ সাউথ ও মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনর্গঠিত বিওটিতে সরকার সমর্থিত ব্যবসায়ী, আমলা, শিক্ষাবিদ ও ছাত্রনেতাদের রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন : ৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা আসছে
জানা গেছে, গত বছর একই পদ্ধতিতে নর্থ সাউথ ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিওটি পুনর্গঠন করা হয়। আগের ট্রাস্টির সবাইকে বাদ দিয়ে সরকার ঘেঁষা বা সমর্থকদের দিয়ে নতুন ট্রাস্টি বোর্ডে গঠন করা হয়। পরে চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতির অনুমতির পর গেজেট প্রকাশিত হয়।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখা- ১) ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্র ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠন সংক্রান্ত একটি সভা ঈদের আগে হওয়ার কথা থাকলেও সেটি আগামীকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত হবে।’
সভার এজেন্ডা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক, একাডেমিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুতিসহ ট্রাস্টি বোর্ডের নানা দুর্নীতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে তদন্ত করানোর পর সত্যতা পাওয়া গেছে। সেই বিওটি পুনর্গঠনের সুপারিশ করার পর শিক্ষামন্ত্রী সভা ডেকেছেন। এটি অনানুষ্ঠানিক সভা।’
যেসব অভিযোগে বিওটির পুনর্গঠন
>> বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
২০০৫ সালে রাজধানীর গোপীবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন জামায়াত ঘরানার লোকজন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামাল উদ্দীন আবদুল্লাহ জাফরী যুদ্ধাপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বেয়াই। ২০১৯ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা বিষয়টি বেআইনি দাবি করে ইউজিসিতে অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) বিশ্বজিৎ চন্দকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- ইউজিসির সদস্য (অর্থ) আবু তাহের, পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ওমর ফারুক, উপ-পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) রোকনুজ্জামান ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক শরীফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন : উপাচার্যের দৌড়ে চৌর্যবৃত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষক!
তদন্ত কমিটি চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিল করে। ইউজিসির তদন্তে ‘কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসে’। তদন্ত কমিটি বিওটির কোটি কোটি টাকার অনিয়ম, দুর্নীতির প্রমাণ পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি বিওটি ভেঙে দেওয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করে। একই সঙ্গে বিওটি সদস্যদের হাতিয়ে নেওয়া অর্থ আদায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্তসহ নয় দফা সুপারিশ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন বিওটি সদস্যরা
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ১০ জন শিক্ষককে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করায় শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার অজুহাতে তাদের (শিক্ষকদের) চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
বিওটি চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব মিলে গত ১১ অর্থবছরে মাসিক সম্মানী বাবদ ছয় কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়েছেন। বিওটি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন জাফরী বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ১১ বছরে মাসিক সম্মানী ও গাড়ি সুবিধাবাবদ তিন কোটি ৬৬ লাখ ছয় হাজার টাকা নিয়েছেন। বিওটি ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আ ন ম রফিকুর রহমান এক কোটি ৩৩ লাখ ১৬ হাজার, সদস্য সচিব সৈয়দ শহীদুল বারী এক কোটি ১৪ লাখ নয় হাজার ৯৪০ টাকা নিয়েছেন।
অথচ বিওটির ডিডে (দলিল) উল্লেখ করা হয়েছিল, এ ট্রাস্ট জনহিতকর, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিকভাবে ইসলামি আদর্শে পরিচালিত হবে। কিন্তু বিওটির কয়েকজন সদস্য এটাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। সম্মানী ছাড়াও সিটিং অ্যালাউন্সবাবদ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। অথচ চারজন সদস্য মাত্র এক কোটি ৫৬ লাখ ২৯ হাজার ৮৫৬ টাকা বিনিয়োগ করেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী এ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব অনিয়ম বিশদভাবে খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডে যারা আসবেন তাদের নাম চূড়ান্ত করা হতে পারে। নাম চূড়ান্তের পর সরকারপ্রধানের সম্মতি নিয়ে অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতির কাছে। তার অনুমতির পর নতুন ট্রাস্টি বোর্ড পুনর্গঠনের গেজেট প্রকাশ করা হবে। তবে, দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বিওটিতে যারা আসছেন তাদের নাম জানা সম্ভব হয়নি
ইউজিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়নি। পাঁচ কোটি টাকা ব্যাংকে এফডিআর জমা রাখা বাধ্যতামূলক থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের এফডিআরের সুদ ও আসল উত্তোলন করা হয়েছে। সাধারণ তহবিলও আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনা করেনি। স্থায়ী ক্যাম্পাসের জমি কেনা ও ভবন নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেওয়া হলেও জমি কেনা হয়েছে তিন কোটি টাকায়। প্রত্যেক অর্থবছরে নিরীক্ষার (অডিট) বিধান থাকলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পর আর্থিক নিরীক্ষা করা হয়নি। রাজধানীর মুগদা গ্রিন মডেল টাউনে স্থায়ী ক্যাম্পাসে ভবন নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে বিওটি চেয়ারম্যানের আত্মীয়কে দিয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।
যেসব সুপারিশ করেছে ইউজিসি
সাময়িক সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ৩০ দিনের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে হবে। চাকরিচ্যুত ১০ জন শিক্ষককে পুনর্বহাল এবং তাদের প্রাপ্য সকল পাওনা পরিশোধ করতে হবে। বিওটি সদস্যদের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দিতে হবে। অনিরীক্ষিত অর্থবছরের নিরীক্ষা শেষ করতে হবে। অবৈধভাবে ভবন নির্মাণকাজে জড়িতদের দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণতে হবে।
‘দৈন্যদশার খপ্পরে’ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
বিওটি সদস্যদের অদূরদর্শিতা ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি আর্থিকভাবে জটিল দৈন্যদশার খপ্পরে পড়েছে। বিওটি সদস্যদের খেয়ালখুশি মতো বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির চলমান অচলাবস্থা নিরসনে চ্যান্সেলরের এখতিয়ার প্রয়োগ করে জরুরিভিত্তিতে বিওটি পুনর্গঠনের সুপারিশ করেছে ইউজিসি।
জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য বিশ্বজিৎ চন্দ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৩৫/৭ ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটি পুনর্গঠনের সুপারিশ করেছি। এখানে কারা আসবেন, কারা বাদ পড়বেন, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
জানতে চাইলে ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-সচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সোমবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।’
প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি
রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম এবং ভাইস চেয়ারম্যান রায়হান আজাদ টিটুর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া কারও কারও বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়টির টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে। সম্প্রতি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষকের ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি চিহ্নিত হয়। কিন্তু তারা আছেন বহাল তবিয়তে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক দফা তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে ইউজিসি।
ইউজিসির তদন্তে ‘কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসে’। তদন্ত কমিটি বিওটির কোটি কোটি টাকার অনিয়ম, দুর্নীতির প্রমাণ পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি বিওটি ভেঙে দেওয়াসহ বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করে। একই সঙ্গে বিওটি সদস্যদের হাতিয়ে নেওয়া অর্থ আদায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্তসহ নয় দফা সুপারিশ করে
বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব), লাইব্রেরিয়ানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে কেউ নেই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব নয় বলে মত দিয়েছে ইউজিসির তদন্ত কমিটি।
মানারাত ও নর্থ সাউথে নতুন বিওটি গঠন
গত বছরের সেপ্টেম্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ভেঙে নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান করা হয়। নতুন বিওটিতে সাবেক সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্কুল অব বিজনেসের অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত (ঢাকা- ১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী), জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ, হাসুমনির পাঠশালার সভাপতি সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী মারুফা আক্তার পপি, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন ও সোশ্যাল ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিহির কান্তি ঘোষাল রয়েছেন।
প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম এবং ভাইস চেয়ারম্যান রায়হান আজাদ টিটুর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষকের ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি চিহ্নিত হয়। কিন্তু তারা আছেন বহাল তবিয়তে
গত বছরের ১৬ আগস্ট শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটি পুনর্গঠন করে দেয় সরকার। নর্থ সাউথের আগের ট্রাস্টিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিয়ে ইউজিসির সুপারিশের আলোকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে তা সম্পন্ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিওটি পরিবর্তনের বিষয়ে যা বলা আছে আইনে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ এর ৩৫ (৭) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো কারণে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা দেখা দিলে কিংবা উহার স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখিবার স্বার্থে চ্যান্সেলর কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে প্রয়োজনীয় আদেশ ও নির্দেশ দিতে পারিবেন এবং এতদ্বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।’
এনএম/এসকেডি/এমএআর/