সানলাইফকে ১৫ জুনের মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধের নির্দেশ
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডকে চলতি মাসের (জুন) ১৫ তারিখের মধ্যে সারাদেশের গ্রাহকদের বিমা দাবির অর্থ পরিশোধের নির্দেশনা দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। তা না হলে কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক নিয়োগ করবে।
মঙ্গলবার (১ জুন) এ নির্দেশনা দিয়েছে বিমা কোম্পানিগুলোর রেগুলেটর (নিয়ন্ত্রক) আইডিআরএ। গতকাল সোমবার ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে “গ্রাহক ‘প্রতারণায়’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি” শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আজ (মঙ্গলবার) প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরি তলব করে আইডিআরএ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডকে ওই নির্দেশনা দেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, ‘সানলাইফ গ্রাহকদের বিমা দাবির অর্থ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করবেন। এর পরের দিন অর্থাৎ ১৬ জুনের মধ্যে বিমা গ্রাহকদের টাকা পরিশোধের অগ্রগতির বিষয়টি জানাতে হবে। দাবি পরিশোধ সন্তোষজনক না হলে পরবর্তীতে বিমা কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্রশাসক নিয়োগসহ কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, সানলাইফ শত শত গ্রাহকের বিমা দাবির টাকা পরিশোধ না করায় আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান (স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোন) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত নয়টি মামলায় ওয়ারেন্ট জারি হয়।
অভিযোগ উঠেছে, বিমা কোম্পানিটির মালিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পরিবারের সদস্য হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না প্রশাসন। অন্যদিকে, বছরের পর বছর ধরনা দিয়েও গ্রাহকরা বিমার সমুদয় টাকা আদায় করতে পারছেন না। উল্টো গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে ১০ বছর মেয়াদি জীবন বিমা পলিসি করেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের মনিরুজ্জামান ডাবলু। মেয়াদপূর্তির পর এক টাকাও পাননি তিনি। আদালত ও বিমা কোম্পানিতে ঘুরতে ঘুরতে চার বছর পার হয়েছে। তার মতো আরেক ভুক্তভোগী দৌলতপুর উপজেলার মুক্তার হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সে ১০ বছর মেয়াদি জীবন বিমা পলিসি করেছিলাম। মেয়াদপূর্তির পর তারা টাকা দিচ্ছে না। কথা ছিল মেয়াদপূর্তি হলে একবারে ডাবল (দ্বিগুণ) টাকা দেবে। কিন্তু এখনও কোনো টাকা দেয়নি, উল্টো হয়রানি করছে। তাদের কাছে ঘুরতে ঘুরতে যখন কোনো কাজ হলো না তখন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’
এ নিয়ে কুষ্টিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দৌলতপুর) আদালতে দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের হাকিম জোয়ার্দ্দারের ছেলে বশির আহমেদ, একই ইউনিয়নের মো. শামসুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান ও মনিরুজ্জামান ডাবলু বাদী হয়ে পৃথক মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুবিনা হামিদ (স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বোন), প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসলাম রেজা, অডিট অফিসার মো. সাইদুর রহমান খান ও কোম্পানি সচিব মো. রবিউল ইসলাম, পরিচালক মো. রাহাত মালেক ও পরিচালক শাবানা মালেক। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে।
এমআই/এমএআর