নারীদের পোশাকের দোকানে ভিড়, পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি থ্রি পিস

ঈদের বাকি মাত্র কয়েক দিন। চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। ছোট-বড়, ধনী-গরিব কেউ পিছিয়ে নেই ঈদ কেনাকাটায়। ক্রেতাদের কেউ ছুটছেন ফুটপাতে, আবার কেউ যাচ্ছেন ছোট-বড় মার্কেট-বিপণিবিতানে। সবমিলিয়ে ক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে রাজধানীর ঈদ বাজার।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরুষের তুলনায় নারীদের পোশাকের দোকানগুলোতে বেশি ভিড় হচ্ছে। অন্য পোশাকের চেয়ে এবার তাদের পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি থ্রি পিস।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি-ইস্টার্ন প্লাজাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি শপিংমল ঘুরে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অভিজাত শপিংমলগুলোতে চলে ঈদ কেনাকাটা। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা। যেন নিশ্বাস ফেলারও সময় পাচ্ছেন না তারা। বিশেষ করে যেসব শোরুমে অফার চলছে সেগুলোতে ভিড় অনেক বেশি। ক্রেতাদের অনেকে ঈদে গরম থাকতে পারে সে বিবেচনায় আরামদায়ক পোশাক কিনছেন।
বিজ্ঞাপন
বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে আলবেলি, রিচম্যান, দর্জিবাড়ি, ভিকটর, নিউস্টাইল, জান্নাত ফ্যাশন, লামিসা কালেকশন, রুপ ফ্যাশন হাউজ, লাইভ শপিং, লুবনান, স্পিড লাইভসহ বেশ কিছু দোকান ঘুরে জানা গেছে, এবার পুরুষ ক্রেতাদের চাহিদা বেশি কটন আর নারীরা ভারতীয় এবং পাকিস্তানি পোশাক খুঁজছেন। এই মার্কেটে পুরুষ ক্রেতার চেয়ে নারী ক্রেতার সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, এবারের ঈদে মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে সারারা-গারারাসহ বেশ কিছু পাকিস্তানি পোশাক। তবে শাড়ি প্রেমীদের কাছে ভারতীয় শাড়িই বেশি পছন্দ। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, মার্কেটে ভিড়ের সুযোগে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী নিম্নমানের কাপড়সহ তৈরি পোশাক ও ভারতীয় পোশাক বেশি দামে বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন
আদিবা ইসলাম নামের এক নারী বলেন, ঈদের আনন্দ সবার মধ্যে ভাগ করে নিতে পরিবার, কাজের লোকসহ সবার জন্য নতুন কাপড় কিনতে এসেছি। যাতে সবার সঙ্গে ঈদ ভালো কাটে। ব্যবসায়ীরা বেশি দাম চাইছেন। কিন্তু ঈদে পোশাক তো কিনতেই হবে। তাই আমার সাধ্যের মধ্যে যা ভালো লেগেছে কিনেছি।
তিনি বলেন, গত বছর ঈদে যে পোশাক ১০ হাজার টাকায় কিনেছি, এবার একই মানের পোশাকের দাম ১২-১৩ হাজার টাকা। কোনো কোনো কাপড়ের ক্ষেত্রে আবার দ্বিগুণ দাম ধরা হচ্ছে।
নাদিয়া আক্তার নামক আরেক ক্রেতা বলেন, সবার মুখে এখন পাকিস্তানি পোশাকের নাম। তবে দাম অনেক বেশি। সবার পক্ষে কেনা সম্ভব না। বেশ কয়েকটি মার্কেটে ঘুরেছি, তবে বসুন্ধরায় ভালো কালেকশন আছে। দামে মিললে নেব।
কেমন জামা পছন্দ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরমের কারণে এবার একটু হালকা কাপড়ের পোশাক খুঁজছি। কারণ ঈদে ঘোরাঘুরিতে আরামদায়ক পোশাক প্রয়োজন।
গোলাম মোস্তফা নাম আরেক ক্রেতা বলেন, শপিংমল ঘুরে যা বুঝলাম, এবার সব ধরনের কাপড়ের দাম অনেক বেশি। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও চাহিদামতো ছেলে-মেয়েদের কাপড় কিনতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের জন্য জামা কিনলাম। পছন্দ তেমন হয়নি, তাও দাম ২৭০০ টাকা। ছেলের জামা-কাপড় এখনো কিনতে পারিনি। যে দাম তাতে আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ঈদ যেন ফিকে হয়ে গেছে।
এদিকে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর নারীদের ঈদ শপিংয়ে পাকিস্তানি পোশাকের চাহিদা বেশি। সিল্ক, জর্জেট ও অরগ্যাঞ্জা কাজের বিভিন্ন পোশাকের দাম ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে। পাশাপাশি পাকিস্তানি এসব পোশাকের মাস্টার কপিও পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর দাম আড়াই থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে।
সজীব আহমেদ নামের এক দোকানি জানান, তাদের দোকান ভারতীয় পোশাকে ভরপুর। লেহেঙ্গা, কটি, জামা, পুঁথির কাজ করা থ্রিপিস আছে। এসব পোশাকের দাম ৬ হাজার থেকে শুরু করে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তারা নারী ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। দিনে তেমন ভিড় না থাকলেও সন্ধ্যার পর তারা দম ফেলার ফুসরত পান না।
শাকিল নামক এক সেলসম্যান বলেন, পাকিস্তানি পোশাকগুলোর অধিকাংশ কাজ করা। সেগুলো নারীদের বেশি পছন্দ। এছাড়াও পাকিস্তানি কাপড়ের চাহিদাও বেশি তাদের কাছে, বিশেষ করে লেহেঙ্গা, কামিজ, গাউন ও থ্রি পিসের।
টিআই/এসএসএইচ