দারুণ সাড়া পাচ্ছে স্বপ্ন, আইডিয়া সাব্বির হাসান নাসিরের
স্বপ্নেরও স্বপ্ন আছে তবে সেই স্বপ্নের পরিধিটা অনেক বড়। স্বপ্ন প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে স্থান পাওয়ার স্বপ্ন দেখে। দেশের জনপ্রিয় সুপারশপগুলোর অন্যতম একটি স্বপ্ন। যারা গ্রামের কৃষকের সঙ্গে নগরের মধ্যবিত্তের মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।
রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’ গ্রাহকদের চাহিদার সংযোগ ঘটিয়ে এনেছে গরুর মাংস ও আলুর সাশ্রয়ী এক কম্বো অফার। তাও আবার মাত্র ১৬০ টাকায়। যা রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে ঢাকা শহরে।
এই কম্বো অফার একদিকে যেমন নিম্ন আয় থেকে মধ্যবিত্তের গ্রাহকদের চাহিদা মেটাচ্ছে, তেমনি সুপারশপ স্বপ্নও এর মাধ্যমে তাদের বিক্রি বাড়িয়ে নিয়েছে।
১৬০ টাকার আলোচিত কম্বো প্যাকেজের আইডিয়া স্বপ্নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের। রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে স্বপ্নের কার্যালয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।
সাব্বির হাসান নাসির বলেন, প্যাকেজটি শুরু করার পর থেকে এই কয়দিনে গরুর মাংস ও আলুর কম্বো বিক্রি করেছি প্রায় ৭৫ হাজার প্যাকেট। সেইসঙ্গে স্বপ্নে প্রতিদিদের বিক্রি বেড়েছে। এটা বৃদ্ধি পেয়েছে গরুর মাংস আর আলুর কম্বো প্যাকেজের মাধ্যমে। আগামী তিন মাসের মধ্যে আমরা সব আউটলেটে এই কম্বো বিক্রি শুরু করব। আমাদের ৫০০টিরও বেশি আউটলেটের মধ্যে বর্তমানে ১০০ আউটলেটে এটি বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের হাতে পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দিতে চাই। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের পণ্যকেন্দ্রিক সব চাহিদা যেন পূরণ করতে পারি আমরা, সেই অনুযায়ীই আমাদের এগিয়ে চলা। আমরা লক্ষ্য করেছি কিছু শ্রেণির মানুষ অনেক কিছু খাওয়া বাদ দিয়ে দিয়েছে বা খুব কম খাচ্ছে। এসব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বা পুরোটা কিনে খেতে মানুষের কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেসব জিনিসকেই একটি প্যাকেজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে আমরা পৌঁছে দিতে চাইছি।
স্বপ্নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, গরুর মাংস, আলুর যে প্যাকেজটি আমরা এনেছি এখানে আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। আমাদের কর্মীরাও খুব খুশি। কারণ আমাদের আউটলেটগুলোতে অনেক ক্রেতা আমরা আনতে পেরেছি। রিকশাচালক থেকে শুরু করে গার্মেন্টস কর্মী, দিনমজুর সব শ্রেণির মানুষ আমাদের আউটলেটগুলোতে আসছেন এবং এই প্যাকেজটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন এসব কাস্টমারের চোখে মুখে আনন্দের ছাপ আছে, তারা কিনতে পারছে! আর এখানেই স্বপ্নের সার্থকতা।
সাব্বির হাসান নাসির বলেন, গরুর মাংস আর আলুর কম্বো ছাড়াও বর্তমানে আরও বেশ কয়েকটি প্যাকেজ আমাদের আউটলেটগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই পিস রুই মাছ, একটি আলু, যার প্যাকেজ মূল্য ৬০ টাকা। ল্যাটকা খিচুড়ির সব উপাদানের সঙ্গে দুটি ডিম, যার প্যাকেজ মূল্য ৬৫ টাকা। সাত রকমের সবজি দিয়ে সাজানো প্যাকেজ, যার মূল্য ৫০ টাকা। বিস্কুট চাসহ বিকেলের নাস্তার প্যাকেজ মূল্য ২০ টাকা। এমন আরও কয়েকটি কম্বো আমাদের আউটলেটগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তো বটেই, আউটলেটগুলোতেও আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। আমাদের নতুন ক্রেতা আসছে, বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। গেল কয়েকদিনে আমরা শুধু গরুর মাংস আর আলুর এই ১৬০ টাকার প্যাকেজটি প্রায় ৭৫ হাজারের বেশি প্যাকেট বিক্রি করেছি। তার মানে এটা মানুষের চাহিদা মেটাচ্ছে; সাধারণ ক্রেতারা এ ধরনের প্যাকেজ চেয়েছিলেন, যা স্বপ্ন আনতে পেরেছে।
গরুর মাংসের প্যাকেজটি বাজারে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই থিম স্বপ্ন কীভাবে পেল– এমন প্রশ্নের জবাবে স্বপ্নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা মানুষের চাহিদার কথা প্রথমে বিবেচনা করেছি। অনেকেই গরুর মাংস খাওয়া বাদ দিয়েছেন অথবা খুব বেশি খেতে পারেন না। আমরা এসব বিষয় নিয়ে রিসার্চ করেছি, আমরা মানুষের চাহিদার কথা মূল্যায়ন করছি। যার ফলে জনসম্পৃক্ত এমন প্যাকেজ আমরা উদ্ভাবন করে কাস্টমারদের হাতে পৌঁছে দিতে পারছি। নিম্ন আয়ের অনেক ক্রেতা এটা কেনার পর আমাদেরকে বলেছে, আমরা কোরবানির ঈদ ছাড়া গরুর মাংস কিনে খেতে পারিনি। কিন্তু স্বপ্নের মাধ্যমে গরুর মাংস এখন আমরা কিনতে পারছি, তাও আবার মাত্র ১৬০ টাকায়। এসব মানুষ যে কিনতে পারছে, এটাই আমাদের প্রাপ্তি।
সাধারণ ক্রেতাদের জন্য এমন আর কোনো প্যাকেজ নিয়ে স্বপ্ন পরিকল্পনা করছে কী– এমন জবাবে সাব্বির হাসান নাসির বলেন, মানুষের চাহিদার সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন আরও বেশ কিছু প্যাকেজ স্বপ্ন আনতে যাচ্ছে। যদিও ইতোমধ্যে গরুর মাংস আলুর প্যাকেজের মতো আমাদের চার-পাঁচটি প্যাকেজ আউটলেটগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া আমরা চাহিদায় থাকা আরও অনেকগুলো প্যাকেজ আগামীতে শুরু করতে যাচ্ছি।
স্বপ্নের পণ্যের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে গরুর মাংস ও আলুর সাশ্রয়ী কম্বো অফারটি। ছোট পরিবারের কেনার সুবিধার্থে এই কম্বো রাখা হয়েছে। এই প্যাকেজে থাকছে গরুর মাংস ২০০ গ্রাম এবং আলু ১০০ গ্রাম (১০ পিস গরুর মাংসের সঙ্গে ১০ পিস আলু), যার বিক্রয় মূল্য ১৬০ টাকা।
এএসএস/এসএসএইচ