কর্পোরেট কর আড়াই শতাংশ কমছে
আগামী অর্থবছর থেকে কর্পোরেট কর আড়াই শতাংশ কমছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির জন্য এই হার ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো একক লেনদেনে ৫ লাখ টাকা এবং বার্ষিক সর্বমোট ৩৬ লাখ টাকার বেশি সব খরচ ও বিনিয়োগ ব্যাংকের মাধ্যমে হতে হবে। বর্তমানে এ শ্রেণির প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ২৭ শতাংশ কর দিতে হয়।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বাজেট বক্তৃতায় কর্পোরেট কর কমানোর এ ঘোষণা দেন। তিনি সমবায় সমিতির করহার ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। তবে অন্যান্য খাতের কর্পোরেট কর অপরিবর্তিত আছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতিকে অধিকতর আনুষ্ঠানিক করা এবং এক ব্যক্তি কোম্পানির প্রতিষ্ঠা উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নন-লিস্টেড কোম্পানিগুলোর মতোই শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে আমি এক ব্যক্তি কোম্পানির করহার ২২.৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। পরিশোধিত মূলধনের নির্দিষ্ট পরিমাণের অধিক শেয়ার আইপির মাধ্যমে হস্তান্তর হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য করহার শর্তসাপেক্ষে ২২.৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। কর-জিডিপি হার বৃদ্ধির প্রচেষ্টা হিসেবে সার্বিক বিবেচনায় সমবায় সমিতির জন্য করহার ১৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করে অন্যান্য করহারের বিদ্যমান কাঠামোটি বহাল রাখার প্রস্তাব করছি।
আরও পড়ুন
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে, অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছর চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। করব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
দেশের ১৮তম অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবারই প্রথম বাজেট পেশ করেছেন। এটি দেশের ৫৩তম বাজেট।
আরএম/এসএসএইচ