ভ্যাটের বাড়তি ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ে নতুন ছক
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা।
যার মধ্যে এনবিআরের আদায় করতে হবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। ভ্যাট লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার বড় অংশ আসবে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট খাত থেকে। এটা করতে গত অর্থ বছরের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আর সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা বেশি আদায় করতে হবে।
অতিরিক্ত ভ্যাট আদায়ে ২০ ধরনের খাতে ভ্যাট বৃদ্ধি করে ঘাটতি পূরণের পরিকল্পনা নিয়েছে এনবিআর। যার মধ্যে রয়েছে— সিগারেটের সবগুলো স্তরে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আসবে ৬ হাজার কোটি টাকা।
টার্ন ওভার ১০ কোটি টাকা উৎস কর কর্তন করতে হবে, সেখান থেকে আসবে ২ হাজার কোটি টাকা। মোবাইলের টক টাইম ও সিম থেকে ধার্য কর থেকে আসবে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
দেশীয় এসি ও ফ্রিজের ভ্যাট অব্যাহতি বাতিল করে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। সেখান থেকে আসবে ৪০০ কোটি টাকা। কোমল পানীয়, কার্বোনেটেড বেভারেজ, এনার্জি ড্রিংকস, আমসত্ত্বের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। যা থেকে আসবে ২০০ কোটি টাকা। আইসক্রিমের শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, সেখান থেকে আসবে ৫০ কোটি টাকা। ই-ট্রেডে ভ্যাট ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, সেখানে থেকে আসবে ৫০ কোটি টাকা।
ট্যুর অপারেটর, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্ক, সিকিউরিটি সার্ভিস, লটারি টিকিট বিক্রয়কারী সেবাসহ এরূপ ১১ আইটেমে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হয়েছে, সেখান থেকে আসবে ২০০ কোটি টাকা।
এভাবে বাড়তি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের ছক বানিয়েছে এনবিআর। এছাড়া মেট্রোরেল থেকেও বড় অঙ্কের ভ্যাট সংগ্রহ করবে ভ্যাট বিভাগ। যার মাধ্যমে আগামী অর্থবছরের ভ্যাট লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা পূরণ হবে বলে মনে করছে ভ্যাট বিভাগ।
চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে মূসক থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা, আয়কর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ও আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে ১ লাখ ১৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়।
যদিও অর্থবছরের শেষ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়। রাজস্ব আদায়ের নতুন লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ভ্যাটের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৫১ হাজার ৭০০ কোটি, আমদানি-রপ্তানি শুল্ক খাত থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি এবং আয়কর থেকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি শুল্কে আহরণ হয়েছে ১১.১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ৮২ হাজার ৫২২ কোট ২৮ লাখ টাকা, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট খাতে ১৬.০১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ১ লাখ ১৩ হাজার ৭০৯ কোটি ৮১ লাখ এবং আয়করে ১৯.৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে আহরণ হয়েছে ৯৩ হাজার ১৪৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
আরএম/এমএ