উল্কার কর ফাঁকির সেই ৫০ কোটি টাকা আদায় করল এনবিআর
২০২০-২১ ও ২০২১-২২ করবর্ষের ফাঁকি দেওয়া ৫০ কোটি টাকা আয়কর অবশেষে আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর বিভাগ।
ওই টাকা আদায় করতেই গত ৩০ এপ্রিল ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান-১ শাখায় অভিযান পরিচালনা করেছিল কর অঞ্চল-১৫। যদিও ওই সময় আইনি জটিলতায় টাকা আদায় করা সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ সোমবার (২০ মে) আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ওই কর আদায় বাবদ ৫০ কোটি ৭৬ লাখ ৭১ হাজার ৪১১ টাকার পে-অর্ডার সংগ্রহ করে কর অঞ্চল-১৫।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, কর অঞ্চল-১৫ এর কর সার্কেল-৩১১ এর করদাতা উল্কা গেমস লিমিটেডের ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ করবর্ষের কর আদায়ে ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস মো. ফারজানুল ইসলামের নেতৃত্বে করদাতার জব্দ করা ব্র্যাক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আইনানুগভাবে কর আদায়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। পরে ওই কার্যক্রমের বিপরীতে দায়ের করা তিনটি রিট আবেদন ও একটি নিয়মিত মামলা হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চে শুনানি শেষে ১৯ মে রিট আবেদনগুলো খারিজ করা হয় এবং নিয়মিত মামলার রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে পে-অর্ডার সংগ্রহ করে কর অফিস।
আরও পড়ুন
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল এনবিআরের চেয়ারম্যানের লিখিত অনুমোদনপত্র নিয়ে কর অঞ্চল-১৫ এর দুই জন ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের টিম পাওনা টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান-১ শাখায় অভিযান পরিচালনা করে।
কিন্তু আদালতে চলমান মামলার অজুহাত তুলে শেষ পর্যন্ত টাকা ছাড় করেনি ব্র্যাক ব্যাংক। নাছোড়বান্দা কর্মকর্তারা লিখিত ব্যাখ্যা নিয়েই গুলশান শাখা ত্যাগ করেন। যদিও এনবিআর শুরু থেকেই দাবি করেছে মামলার বিষয় ও এনবিআরের পাওনা কর সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।
এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায়, সরকারের পাওনা ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় যায় কর অঞ্চল-১৫ এর একটি বিশেষ টিম। উল্কা গেমস লিমিটেড নামের একটি অনলাইন জুয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগে দুই বছর আগে তদন্ত শুরু করে এনবিআরের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি। টাকা নিয়ে কোম্পানিটি যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য উল্কা গেমসের ব্র্যাক ব্যাংকে থাকা ৫৩ কোটি টাকা ফ্রিজ করে সিআইসি। তদন্তে প্রায় ৫০ কোটি টাকা কর ফাঁকির প্রমাণ পায় সংস্থাটি।
এনবিআর সূত্রে আরও জানা যায়, ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখায় উল্কা গেমস লিমিটেডের নামে থাকে হিসাব ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ফ্রিজ করা ছিল। সিআইসির কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়ে যেতে পারে। সে কারণে হিসাব সচল করে টাকা আদায়ে কর অঞ্চল-১৫ কে নির্দেশনা দেয় সিআইসি। আদেশ পেয়ে গুলশান শাখায় যান কর্মকর্তারা। তবে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ প্রায় ১৩ ঘণ্টা ব্যাংকে অবস্থান করেও টাকা ছাড়াই শাখা ত্যাগ করতে বাধ্য হন কর কর্মকর্তারা। টাকা না পেলেও লিখিত ব্যাখ্যা নিয়ে যান কর অঞ্চল-১৫ এর কর্মকর্তারা।
আরএম/এসএসএইচ