বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আস্থা ফিরে আসবে : এডিবি
জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে যে চিন্তা ছিল তা কেটে গেছে। নতুন সরকার গঠনের পর দেশের অর্থনীতিতে আস্থা ফেরার আভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংকটির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং বলেছেন, ‘গত ৭ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আস্থা ফিরে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে; নির্বাচন শেষ হয়েছে। এখন আস্থা ফিরে আসবে।’
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গিনটিং বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে—তবে এই নির্বাচনের পর সরকার আগের মতোই আত্মবিশ্বাসী হবে।’
আরও পড়ুন
প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যে অগ্রগতি হয়েছে, এতে এডিবি খুবই গর্বিত। তাই অতীতে অর্জিত উচ্চ প্রবৃদ্ধি ফিরিয়ে আনতে সরকারকে সাহায্য করতে আমরা উন্মুখ। আমরা যথেষ্ট আশ্বস্ত; আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও ভালো হবে।
বাংলাদেশকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে এডিমন গিনটিং বলেন, বাংলাদেশ সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সমস্যা মোকাবিলা করছে। এ জন্য সরকার যে নীতিগুলো বাস্তবায়ন করেছে—তারা ঠিক পথেই আছে। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী করা দরকার।
তিনি বলেন, এডিবি সাধারণত প্রতি বছর বাংলাদেশকে যে বাজেট সহায়তা দেয়, তা থেকে ৮০ কোটি ডলার সরাসরি রিজার্ভে যুক্ত হয়। এছাড়া এডিবি অন্যান্য বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীদের মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে আসে। এছাড়াও বেসরকারি খাত ও প্রবাসীরা সর্বাধিক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আনেন। তারা আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আনলে, এটি রিজার্ভকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ; এ জন্য সবার গর্ব করা উচিত। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। আমি মনে করি, এটি উল্লেখযোগ্য যে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব শক্তিশালী হয়েছে এবং বেসরকারি খাতে আস্থার পরিবেশ থাকায় এটি আরও শক্তিশালী হতে থাকবে।
এসময় অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সরকার ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এ জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমরা অতীতে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি উত্তরণ করেছি ভবিষ্যতেও করতে পারবো।
তিনি বলেন, এডিবি আমাদের ওপর তার আস্থা দেখিয়েছে।
প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ম্যানিলা ভিত্তিক ঋণদান সংস্থার কাছ থেকে উচ্চতর সমর্থন আশা করি, যদিও তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা আলাদা। তারা আমাদের সমর্থন দিচ্ছে এবং তাদের প্রাক্কলন অনুযায়ী, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ শতাংশ, যা আরও বাড়বে।
এর আগে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। সাক্ষাৎকালে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শেখ হাসিনার হাতে এডিবির প্রেসিডেন্টের অভিনন্দনপত্র তুলে দেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে এডিমন গিনটিং বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল। এডিবি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। আগামী দিনগুলোতেও আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
এমএসএ