১৫০ প্রকল্পে হংকংয়ের বিনিয়োগ ৮০০ মিলিয়ন ডলার
হংকংয়ের বেশকিছু বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ১৫০টি প্রকল্পে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশসমূহের মধ্যে হংকং অষ্টম স্থানে রয়েছে। আগামীতে বাংলাদেশ-হংকং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়— বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও হংকং ট্রেড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (এইচকেটিডিসি) যৌথভাবে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য উঠে আসে। ‘হংকংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ’ শীর্ষক সেমিনারে এইচকেটিডিসি’র দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক কনসালটেন্ট রাজেশ ভাগত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
উপস্থাপনায় তিনি বলেন, সহজতর কর ও শুল্ক কাঠামো, প্রায় ৭০টি বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও নামিদামি ব্র্যান্ডের কার্যালয়, বৃহত্তর পুঁজিবাজার, আধুনিক অবকাঠামো ও বন্দর সুবিধার উপস্থিতি হংকংকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিণত করেছে। হংকংয়ের বেশকিছু বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ১৫০টি প্রকল্পে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। ফলে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশসমূহের মধ্যে হংকংয়ের অবস্থান অষ্টম।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, জাহাজ নির্মাণ, ঔষধ, কৃষি, চামড়া ও পাদুকা, হালকা প্রকৌশল, অটোমোটিভ, ইলেকট্রিকাল ও ইলেকট্রনিক্স, লজিস্টিক অবকাঠামো, আর্থিক ও স্বাস্থ্য প্রভৃতি খাতে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়— বলা হয় প্রবন্ধে।
সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রধান অতিথি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান বিশেষ অতিথি হিসেবে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনসহ নানাবিধ শুল্ক সুবিধা প্রদান করেছে। যার সুযোগ নিয়ে হংকংয়ের উদ্যোক্তারা এ দেশে আরও বেশি হারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের অভিযাত্রাকে সক্রিয় করতে বিশেষ করে অবকাঠামো, আর্থিক, সেবা, উৎপাদনশীল প্রভৃতি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার বেশ বড় ও শক্তিশালী। এটা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করবে। প্রয়োজনে বিদেশি বিনিয়োগ আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার আইনের সংস্কার ও নতুন নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইআরডি সচিব শরিফা খান বলেন, বাংলাদেশ ও হংকংয়ের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি অত্যন্ত বেশি এবং তা কমিয়ে আনতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কার্যক্রম সম্প্রসারণে আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। সরকার দেশের অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে বেশকিছু বৃহৎ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে এবং প্রয়োজনের নিরিখে আরও নতুন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। এ ধরনের প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিতকল্পে হংকংয়ের স্বনামধন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে।
আরএম/এমএআর/