নির্বাচনে হেরে ভোটারকে প্রার্থীর জুতাপেটা
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নে ভোট না দেওয়ায় প্রতিপক্ষের সমর্থককে জুতাপেটাসহ নানা রকম হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী নশর আলীসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন এক ভোটার।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) এ ঘটনায় সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (৮)-এ মামলা করেছেন লাঞ্ছনার শিকার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের রহমত আলীর মো. ইয়াছিন মিয়া।
ইউপি সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নশর আলীসহ (৫০) তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন তিনি। অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন ইউনিয়নের সোনাপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের কাঞ্চন বৈদ্য (৩০) ও সাকির মিয়া (২৩)।
বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ নভেম্বরের বোয়ালজুড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪ নং ওয়ার্ডে সদস্য পদে প্রার্থী ছিলেন পশ্চিম সোনারপাড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত আলকাছ উদ্দিনের ছেলে নশর (৫০)। ওই দিনের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। এতে পরাজিত সদস্য প্রার্থী নশর এবং তার সহযোগীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১৩ নভেম্বর স্থানীয় কামাল মিয়ার বাড়িতে ভোটার মো. ইয়াছিন মিয়া, আজমল আলী, রাসেল মিয়া, আলমগীর আলই, এনাম উদ্দিন ও আছাদ আলীকে ডেকে নিয়ে বেশ কিছু মানুষের সামনে জুতাপেটা করেন ও জুতার মালা গলায় দিয়ে লাঞ্ছিত করেন।
এ ছাড়া ইয়াছিনের কাছে নশর ও তার সহযোগীরা তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। এ টাকা না দিলে ইয়াছিনকে গ্রামছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে পরাজিত সদস্য পদপ্রার্থী নশর আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই মামলা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। যদিও গত নির্বাচনে আমি মাত্র ১১ ভোটে পরাজিত হয়েছি। তারপরও এলাকায় আমার তুমুল জনপ্রিয়তার কারণে আমার প্রতিপক্ষ বিজয়ী সদস্য প্রার্থী তজম্মুল আলী জনির ইন্ধনে মানুষিক বিকারগ্রস্ত ইয়সিনকে দিয়ে এই মামলা করিয়েছে।
১৩ নভেম্বর স্থানীয় কামাল মিয়ার বাড়িতে কী ঘটেছিল, প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই দিন ইয়াছিনের বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের দায়ে একটি সালিস বৈঠক ছিল। গ্রাম্য সালিসে গ্রামের মুরব্বিরা তাকে কান ধরিয়ে ওঠ-বস করিয়েছেন। সে ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে সিলেটের আদালতে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য বালাগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বালাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি শুনেছি একটি মামলা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে বিস্তারিত বলতে পারছি না। তদন্ত সাপেক্ষে আমরা পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এনএ