হিলি সীমান্তে দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা
মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদ কিংবা হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজায় সীমান্তে বসে দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা। এ সময় সীমান্তের শূন্যরেখায় নাড়ির টানে দেখা করতে আসেন দুই বাংলার মানুষ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
সরেজমিনে দেখে গেছে, দুর্গাপূজা শুরুর দিন থেকে প্রতিদিন সকাল-বিকেল ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিলি সীমান্তে আসছেন দর্শনার্থীরা। বিজিবি-বিএসএফের অনুমতি না মেলায় সীমান্তে দাঁড়িয়ে ইশারায় কথা বলে কিংবা ছবি তুলে ফিরছেন তারা। দর্শনাথীদের পদচারণায় হিলি সীমান্ত মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
ঘোড়াঘাটের বর্ষা রাণী নামে একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারতে দাদা-বউদি সবাই থাকেন। তাদের সঙ্গে দেখা করতে হিলি সীমান্তের শূন্যরেখায় এসেছি। পূজার সময় সীমান্তে নাকি দেখা করতে দেয়। এ জন্য এসেছি। বিএসএফ ও বিজিবিকে অনেক অনুরোধের পর তাদের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছি। এত দিন পর দেখা হয়ে খুব ভালো লাগছে।
সীমান্তে আসা দর্শনার্থী আশোক কুমার বসাক জানান, আগে শুনেছিলাম সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে দুই দেশের মানুষের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার সুযোগ মেলে। এ জন্য হিলি সীমান্তে এসেছি। কিন্তু বিজিবি আমাদের সীমান্তের শূন্যরেখায় যেতেই দিচ্ছে না। তাই সীমান্তের পাশে রেললাইনের কাছ থেকে দাঁড়িয়ে চোখের দেখা দেখে ফিরে যাচ্ছি।
হিলি সীমান্তে বাংলাদেশের স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে আসা ভারতীয় নাগরিক অসীম রায় বলেন, সীমান্তে এসেছিলাম বাংলাদেশে থাকা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু এখানে তো ওই রকম কোনো সুযোগ নেই। ওপারে যাওয়ার ও আসার তেমন কোনো সুযোগ নেই। সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে অনেক মানুষ এসেছে, তারা দাঁড়িয়ে এপাশে থাকা স্বজনদের দেখছে, ইশারায় কথা বলছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই পূজার সময় অন্তত একটা দিন অথবা কিছু সময়ের জন্য হলেও সীমান্ত খুলে দেওয়া হোক। সীমান্তের ওপারে আমাদের অনেক স্বজন রয়েছে। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন দেখা হয়নি। একটু সুযোগ পেলে তাদের সঙ্গে দেখা করে মন খুলে কথা বলতে পারতাম। এটা যদি একটা শৃঙ্খলার ভেতরে বা কোনো সেক্টরের ভেতরে হতো তাহলেও অসুবিধা হতো না।
বিজিবির হিলি আইসিপি চেকপোস্ট ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার ইয়াসিন আলী ঢাকা পোস্টকে জানান, প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় দুই দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে ইশারায় কথা বলে। যদিও আইনগতভাবে তাদের দেখা করার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, শুধু যে তারা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তাই নয়। অনেকে আসেন সীমান্তের শূন্যরেখা ঘুরতে আবার কেউ আসেন সীমান্তের শূন্যরেখার পাশে রেললাইনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সীমান্ত পরিদর্শন করতে।
এসপি