কিশোরকে হত্যার পরের দিন পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা চায় আসামি

নোয়াখালীর সদর উপজেলার কিশোর আবদুল হামিদ রায়হানের (১৬) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি ৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ জানায় ওই কিশোরকে হত্যার পরের দিন পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা চায় আসামি।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে সুধারাম মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ আল-ফারুক।
জবানবন্দি দেওয়া মো. মারুফ হোসেন (২২) সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের হুগলী গ্রামের মো. সেলিমের ছেলে। তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক বলেন, নিহত কিশোর আবদুল হামিদ রায়হান ২৫ মার্চ রাতে তারাবির নামাজ পড়ার জন্য ঘর হতে বের হয়। নামাজ শেষে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও বাড়ি না ফিরলে তার বাবা ও পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করে এবং থানায় নিখোঁজ সংবাদ জানায়। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীর বন্ধু-বান্ধব, স্থানীয় এলাকার লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোনো সন্ধান না পাওয়ায় পরের দিন তার ভাই হারুন অর রশিদ শান্ত তার ফেসইবুক আইডি হতে নিখোঁজের বিষয়ে মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে পোস্ট করে।
মো. আব্দুল্লাহ আল-ফারুক আরও বলেন, ২৬ তারিখ সকালে মো. মারুফ হোসেন তার পরিচয় গোপন রেখে রায়হানের ভাইয়ের নম্বরে কল করে বলে ‘তোর ভাইকে পাইতে হলে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে, না হলে তোর ভাইকে পাবি না“। একই তারিখ বিকেল ৩টায় তার ভাই শান্তকে ফোন করে বলে যে, টাকার ব্যবস্থা হলে তুমি একা চৌমুহনী রেললাইনের ওপরে আসো। পরিবারের লোকজন বিষয়টি সুধারাম থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি মারুফ হোসেনকে আটক করে।
বিজ্ঞাপন
হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করে রায়হানকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে সেফটি ট্যাংকে ফেলে দেওয়ার কথা আসামি আমাদের কাছে স্বীকার করে। আসামির দেওয়ার তথ্য মতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এই বিষয়ে ভুক্তভোগীর বাবা আলমগীর হোসেন থানায় এজাহার দায়ের করলে সুধারাম থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। আসামি মারুফ হোসেন স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তারপর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন, সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলামসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/আরকে