নোয়াখালীর ডিসির নম্বর ক্লোন, সচিবের ইফতারের জন্য টাকা দাবি
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের সরকারি মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে অর্থ দাবি করেছে একটি প্রতারক চক্র। রোববার (১৮ এপ্রিল) জেলা প্রশাসনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।
জানা যায়, জেলা প্রশাসকের নম্বর ক্লোন করে চক্রটি নোয়াখালী পৌরসভা মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল, চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র খালেদ সাইফুল্লাহসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তার কাছে জেলা সার্কিট হাউসে সচিবের জন্য ইফতার মাহফিলের টাকা দাবি করা করে।
কেউ যেন এ চক্রের প্রতারণার শিকার না হন, সে জন্য সবাইকে সতর্ক করে জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জেলা প্রশাসক নোয়াখালী এর অফিসিয়াল মোবাইল ফোন নাম্বার (০১৭১৩......) ক্লোন করে একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এবং সাধারণ মানুষের কাছে অর্থ দাবি করছে এবং দাবিকৃত অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠাতে অনুরোধ জানাচ্ছে। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হয়ে সকলকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
এ বিষয়ে নোয়াখালী পৌরসভা মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, হুবুহু জেলা প্রশাসকের নম্বর থেকে আমার কাছে ফোন আসে। আমাকে জানায়, আজ জেলা সার্কিট হাউসে সচিবের ইফতার, আপনাকে কিছু কন্ট্রিবিউশন করতে হবে। কণ্ঠ আমার কাছে সন্দেহজনক হওয়ায় আমি বলেছি, সরাসরি বিকেল ৩টায় আপনার অফিসে এসে দিয়ে যাব।
চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, আমাকে ফোন দিলে আমি টাকা দেওয়ার জন্য কর্মকর্তাকে বলি। একপর্যায়ে সন্দেহ হলে টাকা দেওয়ার আগমুহূর্তে ডিসি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বুঝতে পারি আমি প্রতারকের খপ্পরে পড়তে যাচ্ছি।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি অসাধু চক্র এ ধরনের কাজের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই লিপ্ত আছে। ঈদের আগমুহূর্তে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার চেষ্টা করায় আমরা সতর্ক হতে পেরেছি। এসব প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে টাকার লেনদেনসহ কোনো ধরনের তথ্য আদান-প্রদান না করার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ইতিমধ্যে থানায় জিডি করা হয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মো. আনোয়ারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলা প্রশাসকের নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন লোকের কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে, এমন তথ্য পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে লোকেশন বের করতে পেরেছি। ঢাকার উত্তরা থেকে ফোন দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
হাসিব আল আমিন/এনএ