বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ওয়াজেদুল আরেফিন মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি রংপুর মহানগরীর হাজীরহাট থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) রাতে নগরীর কেরানীরহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নগরীর কেরানীরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলার আসামি।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর সিটি বাজার সংলগ্ন রাজা রাম মোহন মার্কেটের সামনে গুলিতে নিহত হন সাজ্জাদ হোসেন। এ ঘটনায় গত ২১ আগস্ট সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী জিতু বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মন্ত্রী হাছানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও আওয়ামী লীগ নেত্রী অপু উকিলসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া আরও ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এদিকে সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলায় ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও পরবর্তীতে আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে রংপুর মেট্রোপলিটন পুুলিশের ছয় কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের নাম মামলা থেকে প্রত্যাহার করে নেন বাদী জিতু বেগম। তারা হলেন- আরপিএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার (বাধ্যতামূলক অবসর) মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাঠান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উৎপল রায়, পরশুরাম থানা জোনের এসি ইমরান হোসেন, কোতয়ালী থানা জোনের এসি আরিফুজ্জামান আরিফ, কোতয়ালী থানার এসআই আকমল হোসেন, মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি এম এ মজিদ, মো. সুমন ওরফে রেডিও সুমন, মিঠাপুকুরের লতিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস আলী, আব্দুস সালাম, ইদ্রিস আলী, মানিক অধিকারী ও আশরাফুল ইসলাম সজিব।

মামলার আবেদনে বলা হয়, নিহত সাজ্জাদ হোসেন একজন ব্যবসায়ী। গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর নগরীর রাজা রাম মোহন মার্কেটের সামনে ১ থেকে ১০ নম্বর আসামির নির্দেশে অন্য নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাজ্জাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

নিহত সাজ্জাদের মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে আসামিদের বাধার মুখে পড়েন বাদী। পরে বাধ্য হয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই সাজ্জাদের মরদেহ দাফন করা হয়। দাফনের ৪৪ দিন পর আদালতের নির্দেশে ও তদন্তের স্বার্থে গত ২ সেপ্টেম্বর আবার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এফআরএস