কুবা একটি কূপের নাম। এই কূপকে কেন্দ্র করে যে বসতি গড়ে উঠেছে তাকে কুবা মহল্লা বলা হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে মর্যাদাবান ও ঐতিহাসিক স্থান হওয়ায় মসজিদে কুবা মুসলিম পর্যটক ও হজযাত্রীদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।
মসজিদের মূল আকর্ষণ বিশাল গম্বুজ ও চার কোনায় চারটি সুউচ্চ মিনার। ১৯৮৬ সালে মসজিদটির পুনর্র্নির্মাণ ও সংস্কারকালে ব্যাপকভাবে সাদা পাথর ব্যবহার করা হয়। মসজিদের চতুর্দিকের সবুজ পামগাছের বলয় মসজিদটিকে বাড়তি সৌন্দর্য দিয়েছে।
মসজিদে কুবার বর্তমান আয়তন ১৩ হাজার ৫০০ স্কয়ার মিটার। ২০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। মূল মসজিদ ছাড়াও এখানে রয়েছে আবাসিক এলাকা, অফিস, অজুখানা, দোকান ও লাইব্রেরি।
প্রতিষ্ঠার পর উসমান বিন আফফান (রা.), ওমর বিন আবদুল আজিজ (রহ.), উসমানি সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ ও তার ছেলে প্রথম আবদুল মাজিদ প্রমুখ শাসকরা মসজিদে কুবার সংস্কার কাজ করেন। বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ আলে সৌদের সময় সর্বশেষ সংস্কার করা হয়।
হিজরতের প্রথম দিন কুবা অবস্থানকালে রাসুল (সা.) এই মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন। মসজিদের নির্মাণকাজে সাহাবাদের সঙ্গে স্বয়ং তিনি অংশগ্রহণ করেন। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম প্রতি শনিবার এই মসজিদে দু-রাকাত নামাজ আদায় করতে গমন করতেন।
মসজিদে কুবা ইসলামের ইতিহাসের প্রথম নির্মিত মসজিদ। মহানবী (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার সময় মদিনার অদূরে কুবায় এ মসজিদ নির্মাণ করেন।
মসজিদুল হারাম, মসজিদে নববি ও মসজিদুল আকসার পর ইসলামের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন মসজিদ মসজিদে কুবা। এই মসজিদে নামাজ আদায় করলে ওমরাহ সমপরিমাণ সওয়াব হওয়ার কথা হাদিসে বলা হয়েছে।
কোরআনে এই মসজিদের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘যে মসজিদ প্রথম দিন থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাকওয়ার ওপর (মসজিদে কুবা) -তাই বেশি হকদার যে, তুমি সেখানে নামাজ কায়েম করতে দাঁড়াবে। সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অজন করতে ভালোবাসে। আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তওবা, আয়াত : ১০৮)
রাসুল (সা.)-এর অনুসরণে কুবা মসজিদে আসা এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব। হজ পালন শেষে মদিনায় অবস্থানরত হাজিরাও মসজিদে কুবায় যেয়ে নামাজ আদায় করেন।