সোশ্যাল মিডিয়া কমবয়সীদের জন্য বিপদজনক : গবেষণা
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। লন্ডনভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক দ্য এডুকেশন পলিসি ইনস্টিটিউট ও দ্য প্রিন্সেস ট্রাস্টের এক গবেষণা নিবন্ধে সম্প্রতি এমন তথ্যই খুঁজে পাওয়া গেছে।
ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিক স্কুলে পড়ে, এমন বয়সী সময় কিশোরীর মানসিক অবস্থা ও সামগ্রিক মূল্যবোধের অবস্থা প্রায় একই রকম।
গবেষণা নিবন্ধে বলা হচ্ছে যে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের কারণে চৌদ্দ বছর বয়সেই কিশোর-কিশোরী উভয়েরই সুস্বাস্থ্যে ব্যাঘাত ঘটতে শুরু করলেও কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থের অবনতি ঘটে আরও কিছু পরে।
কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের এই অবনতির পেছনে অন্যতম একটি বড় কারণ শরীরচর্চার অভাব। মহামারি করোনায় ঘরবন্দি হয়ে পড়ায় এই সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে—
চৌদ্দ বছর বয়সী তিন জনের একজন কিশোরী তার নিজের শারীরিক গঠন নিয়ে সন্তুষ্ট নন।
একই বয়সী কিশোরদের ক্ষেত্রে প্রতি সাত জনে একজন এমন অসন্তুষ্টিতে ভোগেন।
২০১৭ সালে প্রতি নয় জন কিশোর-কিশোরীর একজন মানসিক অসুস্থতায় ভুগলেও এ বছর এই সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছে প্রতি ছয় জনে একজন।
দেখা যাচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার আগে এদের মধ্যে যে মূল্যবোধগুলো তৈরি হয় চৌদ্দ বছর বয়সে এসে সমবয়সীদের তুলনায় তাদের এই মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে।
বয়ঃসন্ধিকালে উভয়ের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে সাধারণত এটি বেশি হয়। তবে আর বয়ঃসন্ধিকালের শেষদিকে মেয়েদের এটি কমতে থাকলেও ছেলেদের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা রয়ে যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ইমানুয়েল কলেজের রিসার্চ ফেলো ডাঃ অ্যামি ওরবেন। তিনি বলেন, ‘যেসব কিশোর-কিশোরী সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার করছেন, তাদের অধিকাংশই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’
গবেষণার জন্য ইংল্যান্ডের মিলেনিয়াম কোহর্ট স্টাডি ৫ হাজার কিশোর-কিশোরীর তথ্য নেয়া হয়েছে। যাদের কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই মহামারীর কারণে ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, কিশোর বয়সে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হওয়ার আরও কিছু কারণ পারিবারিক অসচ্ছ্বলতা, ব্যায়াম না করা ও মার্তৃত্বকালীন ঝুঁকি।
বলা হয়, নিয়মিত ব্যায়াম করলে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব। লকডাউনে খেলাধুলা স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে ভূমিকা রাখবে।
যুক্তরাজ্যের দ্য প্রিন্সেস ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী জোনাথন টাউনসেন্ড বলেন, ‘বয়ঃসন্ধির সময় কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুব স্পর্শকাতর। মহামারীর কারণে কিশোর-কিশোরীরা ঘরের মধ্যে আবদ্ধ জীবনযাপন করার কারণে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে। আর এর মাধ্যমেই তাদের মধ্যে মানসিকভাবে অসুস্থতা বেড়েই চলেছে।’
এইচএকে/এএস/এএ