শৈশব থেকেই প্রোগ্রামিং ও ম্যাথ শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল যুগের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরির জন্য শৈশব থেকেই শিশুদের প্রোগ্রামিং ও ম্যাথ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবী, তারাই ডিজিটাল যুগের নেতৃত্ব দেবে এবং তারাই ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবে।
বুধবার (২৮ জুলাই) প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের হ্যাকাথন উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় শক্তির নাম ডিজিটাল শক্তি। শিশুদের শিক্ষা থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনযাপনের জন্য আজ এটি অপরিহার্য। কেননা ডিজিটাল যুগের উপযোগী হিসেবে নতুন প্রজন্মকে তৈরি করতে না পারলে, তারা যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমার দেশের ছেলেমেয়েরা রোবট বানাচ্ছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটছে। আমরা এখন ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) যুগে প্রবেশ করেছি। ব্লকচেইন প্রযুক্তিও এখন সময়ের ব্যাপার, যা দিয়ে অপারেটর ছাড়াই কথা বলা যাবে। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। এরপর বিস্ময়কর কী প্রযুক্তি আসে বলা কঠিন।
নতুন প্রজন্ম এই ডিজিটাল যুগে বসবাস করবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে শিক্ষায় আমূল রূপান্তর হয়েছে। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে এই প্রজন্মকে গড়ে তোলার এখন সময় এসেছে।
কাগজের বইয়ের চেয়ে ডিজিটাল পাঠ্যক্রম অত্যন্ত কার্যকর একটি উপায় উল্লেখ মোস্তাফা জব্বার বলেন, শিক্ষার্থী তার ডিভাইস থেকে ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে সহজে শিক্ষা গ্রহণে সক্ষম। ডিজিটাল কন্টেন্ট মানে পাওয়ার পয়েন্ট না। উন্নত দেশগুলো শিক্ষার ডিজিটাল কন্টেন্টের দৃষ্টান্ত।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জানান, একটি অ্যান্ড্রয়েড টিভি ও পেনড্রাইভে রাখা ডিজিটাল কন্টেন্ট দিয়ে সহজে শ্রেণিকক্ষ ডিজিটাল করা সম্ভব। ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা চালু করা হচ্ছে। মনে রাখতে হবে কন্টেন্ট হবে শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় এবং শৈল্পিক।
ডিজিটাল সংযুক্তিতে বাংলাদেশ উন্নত দেশসমূহের তুলনায় পিছিয়ে নেই উল্লেখ করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের ৮০টি দেশে সফটওয়্যার রফতানি করছে।
তিনি জানান, চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ মোবাইল ফোন দেশে উৎপাদন হচ্ছে। হাওর, দ্বীপ ও দুর্গম চরাঞ্চলসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি ওয়াইফাই জোন করা হয়েছে এবং ১২ হাজারেরও বেশি ফ্রি ওয়াইফাই জোন করার কাজ চলছে। করোনাকালে দেশের প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে শতভাগ বিটিএস ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।
প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক রেজাউল করিম বক্তব্য রাখেন।
একে/এসকেডি