যেসব দেশে VPN নিষিদ্ধ
ইন্টারনেটের মাধ্যমে একাধিক নেটওয়ার্কের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন-VPN)। বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিজিট করার জন্যও ভিপিএন ব্যবহার করা হয়।
বিশ্বের একাধিক দেশে ভিপিএন ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। আজ আপনাকে জানাবো বিশ্বের কোন কোন দেশে ভিপিএন ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
রাশিয়া
সমাজতন্ত্রের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত রাশিয়ায় ২০১৭ সালে আইন প্রণয়ন করে ভিপিএনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সরকার ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, দেশটির সরকার নাগরিকদের ডিজিটাল স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে আসছে। এছাড়া অন্যান্য ইন্টারনেটের ওপর ব্যাপক নজরদারি চালাচ্ছে দেশটির সরকার।
আরো পড়ুন - অনলাইনে করোনা পরীক্ষার আবেদন করবেন যেভাবে
বেলারুশ
২০১৬ সালে বেলারুশ ভিপিএন, টরসহ আরও অনেক গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং সাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কয়েক বছর ধরে দেশটির সরকার ডিজিটাল স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের জন্য সমালোচিত হয়ে আসছে। সমালোচকরা বলছেন, দেশটির সরকার একাধিক ওয়েবসাইট ব্লক করে দিয়েছে এবং নাগরিকদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া
বিশ্বে স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উদাহরণ উত্তর কোরিয়া। সে কারণে স্বাভাবিকভাবেই দেশটিতে ভিপিএনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে প্রেস ফ্রিডম আদেশ জারি করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের জন্য ভিপিএন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। তবে মজার বিষয় হলো দেশটিতে পর্যটকরা ভিপিএন ব্যবহার করতে পারেন।
ইরান
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ২০১৩ সাল থেকে নিষিদ্ধ করা রয়েছে ভিপিএন। দেশটিতে সরকারি কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ভিপিএন ব্যবহার করা হয়। ২০১৩ সালে নির্বাচনের সময় ইরান ভিপিএনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সময় জানায়, রাষ্ট্রীয় কাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের দমনের উদ্দেশ্যে এটি নিষিদ্ধ করা হলো।
চীন
বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম পরাশক্তি চীনে ভিপিএন ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক ও সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলের মতো আরও অনেক সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন বা ওয়েবসাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মানুষ যাতে এগুলো ব্যবহারের বিকল্প পথ অনুসন্ধান করতে না পারে সে কারণে দেশটির সরকার ভিপিএনের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ভিপিএন ছাড়াও দেশটিতে জিমেইল, ইউটিউব, উইকিপিডিয়া, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্টসহ আরও অনেক সাইট নিষিদ্ধ।
আরো পড়ুন - গোপনে কে আসে আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে জেনে নিন
সংযুক্ত আরব আমিরাত
আরব বসন্ত চলাকালীন ২০১২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিপিএন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞা কেবল বেসামরিক নাগরিকদের জন্য। দেশটির সামরিক বাহিনী ও ব্যাংক কর্মকর্তারা ভিপিএন ব্যবহার করতে পারেন।
ওমান
২০১০ সালে ওমানে আইন প্রণয়ন করে ভিপিএন ব্লক করে দেয়া হয়। আইনে বলা হয়, বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ভিপিএন ব্যবহার অবৈধ। তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে ভিপিএন ব্যবহারের আবেদন করতে পারে।
তুরস্ক
২০১৬ সাল থেকে ভিপিএন এবং টর ব্যবহারের ওপর তুরস্কে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে দেশটির সরকার নিরাপত্তাগত কারণে ভিপিএন ব্যবহার করে। ভিপিএন ও টর নিষিদ্ধ করার সময় দেশটির সরকার জানায়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমন্বিত যুদ্ধের কারণে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উল্লেখ্য তুরস্কের শহরাঞ্চলে ভিপিএন ব্যবহার করা না গেলেও সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে ভিপিএন ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুন - অনলাইনে করোনার টিকা সনদ সংগ্রহ করবেন যেভাবে
ইরাক
২০১৪ সালে ইরাক প্রজাতন্ত্র ভিপিএনের ওপর স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দেশটির সরকার জানায়, ভিপিএনের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামিক স্টেটসের (আইএস) উত্থান হচ্ছে। সে কারণে এর ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এইচএকে/এএ