‘ভুল তথ্য’ প্রচারের অভিযোগে উইকিপিডিয়াকে জরিমানা
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রুশ সামরিক বাহিনী সম্পর্কিত ‘ভুল তথ্য’ প্রচার করছে এমন অভিযোগ উঠেছে উইকিপিডিয়ার বিরুদ্ধে। সেই তথ্য মুছে না ফেলার জন্য উইকিপিডিয়াকে ২ মিলিয়ন রুবল (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৬ লাখ) জরিমানা করেছে রুশ আদালত। বৃহস্পতিবার এ জরিমানা করা হয়।
তবে, এখনই অলাভজনক সংস্থাটিকে রাশিয়ায় নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে রুশ প্রশাসন।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বার রুশ আদালতের রোষের মুখে পড়ল সংস্থাটি। ঘটনার সূত্রপাত মাত্র ছয়দিন আগে। ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া অঞ্চল রাশিয়ার দখলকে কেন্দ্র করে। জাপোরিঝিয়া দখল নিয়ে উইকিপিডিয়াতে একটি প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছিল।
ভুয়া তথ্যের অভিযোগে প্রতিবেদনটি তুলে নেওয়ার জন্য রুশ সামরিকবাহিনীর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। যদিও সামরিক বাহিনীর এই অনুরোধ কর্ণপাত করেনি উইকিপিডিয়া। তারপরে রুশ আদালত সংস্থাটিকে জরিমানা করে।
এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভুয়া তথ্য দেওয়ার অভিযোগ করে ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে উইকিপিডিয়াকে ৪ লাখ রুবল জরিমানা করেছিল রাশিয়ার তাগানস্কি জেলা আদালত। উইকিপিডিয়াতে রুশ হামলার ইউক্রেনের মারিওপোলে একটি থিয়েটার হল ধ্বংসের কথা বলা হয়েছিল।
গত বছর ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর দেশের গণমাধ্যমগুলোর জন্য একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করে রুশ সরকার। সামরিক অভিযানকে 'যুদ্ধ' বলা যাবে না বলে সতর্ক করে দেয় পুতিন প্রশাসন। যুদ্ধের পরিবর্তে ‘স্পেশাল অপারেশন’ লিখতে হবে বলে জানায়।
একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় গণহত্যা কিংবা যুদ্ধাপরাধ লেখার ওপরও। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো খবর যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সে বিষয়েও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু উইকিপিডিয়ার ওপর মস্কোর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, সেই কারণে সামরিক বাহিনীর অনেক খবর রুশ ভাষায় ছাপানো হয়।
ফলে সমস্ত তথ্য রুশ জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন। উইকিপিডিয়ার বিরুদ্ধে তথ্য বিকৃতির অভিযোগ আনা হলেও এখন সেটি ব্লক করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন রুশ তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী মাকসুত শাদায়েভ। জরিমানা সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছে মাথা নোয়াতে রাজি নয় উইকিপিডিয়া।
বিশ্বে বসবাসকারী রুশদের স্বার্থে তারা কাজ চালিয়ে যাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। অভিযোগ, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোর ওপর চলছে দমনপীড়ন। ফলে অনেক প্রকৃত খবর পাচ্ছেন না রাশিয়ানরা। তাই, তাদের কাছে এখন উইকিপিডিয়া হয়ে উঠেছে তথ্য আদানপ্রদানের একমাত্র মাধ্যম।
এমএ