বাস্কেটবলের বুলবুল আর নেই
মাহতাবুর রহমান বুলবুল আর বাস্কেটবল ছিল সমার্থক। প্রায় ৫০ বছর বাংলাদেশের বাস্কেটবলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। নিজে খেলেছেন, পরবর্তীতে কোচিংকে পেশা হিসেবে নিলেও রেফারি, সংগঠক সকল ভূমিকায় ছিলেন বুলবুল। মৃত্যু বাস্কেটবলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ ঘটাল তার। আজ (বুধবার) বাদ ফজর আজিমপুর কবরস্থানে চিরশায়িত হয়েছেন বাবা মাসুদুর রহমানের পাশে। মাসুদুর রহমান ছিলেন দেশের প্রথম ফিফা ব্যাজধারী।
বাবা ফুটবলের সঙ্গে জড়িত থাকলেও বুলবুল ছিলেন আগাগোড়া বাস্কেটবলের। সত্তর আশির দশকে বাস্কেটবল মানেই ছিল সেন্ট গ্রেগরি স্কুল। বুলবুল সেন্ট গ্রেগরিতে না পড়েও বাস্কেটবলের প্রেমে মজেছিলেন। ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের হয়ে খেলেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৮৫ সালের দিকে অবসর নেন। বাংলাদেশের বাস্কেটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় বলা হয় একে সরকার ও বাবলাকে।
একে সরকারের ওয়ান্ডারার্সের সতীর্থ ছিলেন বুলবুল। আর বাবলার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে শেষের শুরু বুলবুলের। খেলোয়াড় বুলবুলের চেয়ে কোচ বুলবুল ছিলেন আরো বড় মাপের। এক্ষেত্রে সমমানের কেউ নেই নিরদ্বিধায় বললেন বাবলা।
তিনি বলেন, ‘তিনি খেলা ছাড়ার পর তার কোচিং পায়নি এমন কোনো খেলোয়াড় নেই। জাতীয় দলের কোচিংয়ের পাশাপাশি খেলোয়াড় তৈরিতেও কাজ করেছেন।’ খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নেওয়ার পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে বাস্কেটবল কোচ হিসেবে কাজ করেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে অবসর নেওয়ার পরেও কাজ করে গেছেন বাস্কেটবলের জন্য।
বুলবুলকে বাস্কেটবলের পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের স্বীকৃতি দিলেন ফেডারেশনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক একে সরকার, ‘খেলোয়াড় যেমন ছিলেন তার চেয়ে বেশি কোচিং। এছাড়া ফেডারেশনের সাংগঠনিক কাজেও ছিল তার ভালো দক্ষতা। মাঝে মধ্যে রেফারিংও করেছেন।’
একে সরকারের চেয়ে বাবলা আরেকটু বাড়িয়ে বলেন, ‘বি ফর বুলবুল, বি ফর বাস্কেটবল। আমরা বাস্কেটবল মানে বুলবুল ভাইকে বুঝতাম। বাস্কেটবলের বর্তমান যে অবস্থান এর পেছনে বুলবুল ভাইয়ের অবদান অনেক।’
বিকেএসপিতে সদ্য কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছেন খালেদ আকাশ। তরুণ এই কোচও বুলবুলের মৃত্যুতে নিজেকে শূন্য মনে করছেন, ‘২০১৩ সালে সাবা (দক্ষিণ এশিয়ান বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপ) টুর্নামেন্টে তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। কোচিং জ্ঞান, সময়ানুবর্তিতা, আন্তরিকতা, শৃঙ্খলা সব কিছুর দারুণ সংমিশ্রণ ছিল তার মধ্যে।’
সত্তর উর্ধ্ব বুলবুল কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গতকাল রাতে সবাইকে ছেড়ে পরপাড়ে পাড়ি জমান। লকডাউনের জন্য তার অনেক কাছের মানুষ তাকে শেষ দেখা দেখতে পারেননি।
এজেড/এমএইচ