কোয়ার্টারে সেনাবাহিনী, মোহামেডানের বিদায়
চলমান স্বাধীনতা কাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ঘরোয়া ফুটবলে সবচেয়ে অনিয়মিত টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপ। এই প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক তিনবার চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান এবার গ্রুপ পর্ব থেকেই ঝরে পড়ল।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সি গ্রুপের দুই ম্যাচ ছিল আজ (সোমবার)। দিনের প্রথম ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বিপক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১-১ গোলে ড্র করে। এই ড্রয়ের পর মোহামেডানের সাইফের বিপক্ষে জয় ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
মোহামেডান সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে জিততে পারেনি। ১-১ গোলে ড্র করেছে। তিন ম্যাচ শেষে মোহামেডান ও সেনাবাহিনীর চার পয়েন্ট। টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী হেড টু হেড আগে বিবেচনা হয়েছে। হেড টু হেডে সেনাবাহিনী মোহামেডানকে হারিয়েছিল। ফলে সমান পয়েন্ট থাকলেও মোহামেডানের পরিবর্তে সেনাবাহিনী কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে। আর সাত পয়েন্ট নিয়ে সি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।
ম্যাচের শুরু থেকেই সাইফ স্পোর্টিং প্রাধান্য বিস্তার করে। সাইফ স্পোর্টিংয়ের ফাহিম দুর্দান্ত খেলেন। গোল পেতে সাইফ স্পোর্টিংকে ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বাড়ানো বলে ফাহিম বক্সের মধ্যে দুর্দান্তভাবে বল ফেলেন।
নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমফোন দারুণভাবে রিসিভ করে গোল করেন। বাকি সময় সাইফ আরো কয়েকটি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করলেও ব্যর্থ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে কর্ণার থেকে মোহামেডান গোল করে ম্যাচে সমতা আনে। ইনজুরি সময়ের শেষ পাচ মিনিট মোহামেডান আপ্রাণ চেষ্টা করে জিততে ব্যর্থ হয়। রেফারির শেষ বাঁশির সঙ্গে মোহামেডানের টুর্নামেন্টের বিদায়ের বাঁশি বেজে যায়।
বিদেশি খেলোয়াড়হীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী টুর্নামেন্টে দারুণ পারফরম্যান্স করেছে। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানকে হারানোর পর আজ মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে ড্র করেছে। মুক্তিযোদ্ধা ম্যাচে এগিয়ে গেলেও শেষ দিকে গোল করে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে সেনাবাহিনী। মাথার ওপর বৃষ্টি, টার্ফের জায়গায় জায়গায় জমে থাকা পানি, বল পাস দিলেও অনেক ক্ষেত্রেই সেটা পৌঁছাচ্ছে না সতীর্থের কাছে।
ম্যাচের ৮ মিনিটে মিশরীয় ফরোয়ার্ড আহমেদ আইমানের গোলে লিড নেয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। ফ্রি কিক থেকে একদম ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন আইমান। বল জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি। ৩৩ মিনিটে ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট হয় মুক্তিযোদ্ধার।
তাদের জাপানিজ ফুটবলার তেতসুয়াকির শটে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। এরপর ফিরতি বলে ভালো সুযোগ এসেছিল রুমানের সামনে। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি রুমান। ৭৩ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু স্পট কিক থেকে গোল করতে পারেন নি তেতসুয়াকি।
বল পাঠিয়ে দেন বাইরে দিয়ে। ৭৮ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধার মতো সেনাবাহিনীও পেনাল্টি থেকে গোল পায়নি। স্পট কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন মেহেদী হাসান। ম্যাচে ফেরার সুযোগ হাতছাড়া হয় আর্মির।
তবে ৮৮ মিনিটে ম্যাচে সমতা আনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করেন সামিউল। ৯০ মিনিটে দশ জনের দলে পরিণত হয় সেনাবাহিনী। সোমাকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড অর্থাৎ লাল কার্ড দেখেন মাহবুব। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের ড্রয়ে শেষ হয় খেলা।
এজেড/এমএইচ