রোনালদোর জার্সি চেয়ে মিলেছিল উপেক্ষা, গোসেন্সের ভিন্ন ‘প্রতিশোধ’
২০১৯, জানুয়ারির শেষ দিন। কোপা ইতালিয়ায় সেদিন আটালান্টার কাছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জুভেন্তাস হেরেছিল ৩-০ গোলে। সে আটালান্টা দলেরই একজন ছিলেন রবিন গোসেন্স। খেলা শেষে রোনালদোর জার্সি চেয়েছিলেন; রোনালদো জার্সি দেননি, উল্টো মুখ অন্যদিক করে না-ই করে দিয়েছিলেন তাকে। নিজের আত্মজীবনীতে এমনটাই বলেছিলেন গোসেন্স।
কাল রাতে পর্তুগালকে তার দল জার্মানি হারিয়েছে ৪-২ গোলে। রোনালদোর লক্ষ্যভেদে এগিয়ে গিয়েও লাভ হয়নি পর্তুগীজদের। উল্টো গোসেন্সের গোল-যোগানে এসেছে ‘ডি ম্যানশ্যাফট’ দের দুটো গোল। আটালান্টা মিডফিল্ডার গোসেন্স রোনালদোর বিপক্ষে অন্যরকম এক বদলাই নিলেন বটে!
মহাতারকাদের উপেক্ষা পেলে কেমন লাগে? তার জবাবটা আপনি পাবেন গোসেন্সের আত্মজীবনি ‘ট্রয়মেন্ট লন্ট সিখ’ বা ‘স্বপ্নগুলো মূল্যবান’ বইটাতে। সেখানে জানিয়েছিলেন, নিজেকে এর চেয়ে ক্ষুদ্র আর কখনোই মনে হয়নি তার। বলেছিলেন, ‘রোনালদোর জার্সি সংগ্রহে রাখাটা আমার স্বপ্ন ছিল। সেটা পূরণ করতে সে ম্যাচটা শেষে আমি রোনালদোর কাছে ছুটে গিয়েছিলাম। এজন্য আমি তখন উদযাপন করতেও ছুটে যাইনি। ‘রোনালদো, আমি কি আপনার জার্সিটা পেতে পারি?’ আমি গিয়ে বলেছিলাম।’
তার উত্তরে যা পেয়েছিলেন সেটা নিশ্চয়ই আশা করেননি তিনি। বলেছিলেন, ‘তিনি আমার দিকে তাকানওনি, না দেখেই ‘না’ বলে দিয়েছিলেন।’ এরপর তিনি নিজে কী করেছিলেন? গোসেন্সের উত্তর, ‘নিজেকে খুব ক্ষুদ্র মনে হচ্ছিল। আমি একপাশে সরে গিয়েছিলাম, আর লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলাম। এমন হয় না? যখন আপনি চারপাশে দেখে নেন, ‘কেউ দেখে ফেলেনি তো’ ভেবে? আমারও তখন এমনই মনে হচ্ছিল, নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিল।’
In his biography, Gosens recalls the time when Ronaldo did not agree to swap jerseys with him in the 2019 Coppa Italia:...
Posted by Plaantik on Saturday, June 19, 2021
তবে গত রাতে মিউনিখে যা করেছেন, তার পর নিশ্চয়ই আর নিজেকে লুকোতে ইচ্ছে করবে না তার! সেই স্মৃতিই যেন রোনালদোর পর্তুগালের বিপক্ষে তাঁতিয়ে রেখেছিল।
জুভেন্তাস তারকার গোলে পর্তুগাল এগিয়ে যাওয়ার আগেই একবার বল জড়িয়েছিলেন প্রতিপক্ষ জালে। কিন্তু সেটা বাতিল হয় অফসাইডের খড়্গে। তবে তাতে কী, গোসেন্স আরও দুটো গোলে এরপর অবদান রেখেছেন, একটা করেছেন, করিয়েছেন আরও একটা। তাতে পর্তুগালকেও তার দল দেয় চার গোলের লজ্জা। নিজে বনে গেলেন ম্যাচসেরা।
— ESPN FC (@ESPNFC) June 19, 2021
ম্যাচ শেষে যা বললেন, তাতে প্রতিশোধ অবশ্য উঠে এল না। কিন্তু জানালেন, অজানা কারণে ম্যাচের শুরু থেকেই অনুপ্রাণিত বোধ করছিলেন। গোসেন্সের ভাষ্য, ‘বিশ্বাসই হচ্ছে না। আমার জন্য এটা অবিশ্বাস্য সন্ধ্যা। একটা বাঁচা মরার লড়াইয়ে এক গোল, দুটো গোলে সম্পৃক্ততা; এর বেশি কিছু চাইতেই পারেন না আপনি। ম্যাচের শুরু থেকেই আমি অনেক বেশি রোমাঞ্চিত ছিলাম, খেলায় আরও বেশি সম্পৃক্ত ছিলাম। অবশ্যই আমি এতে উচ্ছ্বসিত, দিনশেষে এটা বিশ্বমানের একটা পারফর্ম্যান্স। এই সন্ধ্যেটা আমি কখনোই ভুলব না।’
না ভোলারই তো কথা। মধুর ‘প্রতিশোধ’ কি আর এত সহজে ভোলা যায়?
এনইউ