১৫ বছরেও নেই ডেপুটি সেক্রেটারি
সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের ওপর ফিফার নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বেশ সমস্যার মুখে পড়ে। কেননা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ নিয়ে বিপাকে ছিল বাফুফে। গত এক দশক সোহাগের ওপর ফেডারেশন পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল। যার কারণে তার বিকল্প তৈরি বা ডেপুটি নিয়োগ দেয়নি দেশীয় ফুটবলের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা!
২০০৮ সালের আগে মূলত নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকই বাফুফে পরিচালনা করতেন। ওই বছর গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনের বদলে পেশাদার সাধারণ সম্পাদক পদ সৃষ্টি করা হয়। এর আগে ফুটবল ফেডারেশনে নব্বইয়ের দশকে দুটি যুগ্ম সম্পাদক পদও ছিল। ২০০৮ সালের গঠনতন্ত্রে ডেপুটি ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নামে দুটি বেতনভুক্ত পদের কথা উল্লেখ রয়েছে।
ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারির বিষয়টি বলা হয়েছে বাফুফের গঠনতন্ত্রের ৬১ নম্বর অনুচ্ছেদে। সেই অনুচ্ছেদে বলা হয়, ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি সাধারণ সম্পাদককে দৈনন্দিন কাজে সহায়তা করবে এবং সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করবে। ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ ও সম্মানীর ভিত্তিতে বাফুফে নির্বাহী কমিটি কর্তৃক মনোনীত হবেন।
আরও পড়ুন >> ফিফার চোখে সোহাগ-বাফুফের অসঙ্গতিগুলো
২০০৮ সালে গঠনতন্ত্রে এটি থাকলেও ১৫ বছরে বাফুফে এই পদে কাউকে নিয়োগ দেয়নি। এই পদে নিয়োগ না দেওয়ার ফলে আল মুসাব্বির সাদীর মৃত্যু এবং আবু নাইম সোহাগের নিষেধাজ্ঞার পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ নিয়ে গলদঘর্ম অবস্থায় পড়তে হয় বাফুফেকে। নির্বাহী কমিটি এক্সিকিউটিভদের মধ্যে যে কাউকে নিয়োগ দিতে পারে, তবে শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন ব্যক্তিই দু’বার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে বলেন, ‘অবশ্যই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই পদে নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। আমরা নির্বাহী কমিটি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্তও নিয়েছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’
আরও পড়ুন >> সোহাগের ভুলের জন্যই ফিফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে: সালাউদ্দিন
কাজী সালাউদ্দিনের চলতি মেয়াদের প্রথম বছরেই ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি নিয়োগের জন্য নির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল। গতকাল ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ইমরান হোসেন তুষার ডেপুটি হওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত নানা কারণে সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি।
গঠনতন্ত্রের ৬২ অনুচ্ছেদে সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদের কথাও রয়েছে। সহকারী সাধারণ সম্পাদক ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারির অধীনে থাকবেন। সাধারণ সম্পাদক ও ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারির অনুপস্থিতিতে সহকারী সাধারণ সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি নিয়োগ নিয়ে খানিকটা আলোচনা হলেও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ নিয়ে কখনো আলোচনাই হয়নি।
আরও পড়ুন >> নিষেধাজ্ঞায় সোহাগ : বাফুফে সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে যারা
বাফুফের নির্বাহী কমিটির এক সহ-সভাপতি বলেন, ‘ফুটবল ফেডারেশনে গত কয়েক বছরে অনেক স্টাফ নিয়োগ হলেও অর্গানোগ্রাম ঠিক হয়নি। যার ফলে অনেক পদে শূন্যতা, আবার অনেক পদে অতিরিক্ত লোক রয়েছে।’
ইমরান হোসেন তুষারকে তিন থেকে ৬ মাসের জন্য ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদকের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেবে ফেডারেশন। তবে ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদ শূন্য থাকার সম্ভাবনাই বেশি!
এজেড/এএইচএস