এমবাপের সান্ত্বনা পুরস্কার গোল্ডেন বুট
দুর্ভাগা, নিজেকে দুর্ভাগাই ভাবতে পারেন কিলিয়ান এমবাপে। ফাইনালে হ্যাটট্রিক করলেন অথচ তার দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারল না। কিন্তু তিনি ঠিকই পেয়ে গেলেন গোল্ডেন বুট। তাও আবার লিওনেল মেসিকে হারিয়ে।
ফাইনালের প্রথমার্ধের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল নিজ হাতে যেন কাতার বিশ্বকাপের গল্পটা লিখেছেন মেসি। যা চেয়েছেন ঠিক তাই পেয়েছেন। গোল করেছেন, গোল করিয়েছেন। এরপর অতিরিক্ত সময়েও গোল পেলেন। মনে হচ্ছিল সোনার বুট উঠবে তার হাতেই। কিন্তু এমবাপে ক্ষিপ্র চিতার মতো পাল্টে দিলেন দৃশ্যপট। ফাইনালে করে বসলেন ৩ গোল।
মেসি আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ ট্রফি এনে দিলেও সর্বোচ্চ গোলদাতা এমবাপেই। অধরা সোনার কাপ জয়ের রাতে একসঙ্গে অনেক প্রাপ্তি এসে ধরা দিয়েছে এই ফুটবল জাদুকরের হাতে।
কাতার বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট জেতার দৌড়ে সমান্তরালে ছিলেন দুই মহাতারকা, আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি ও ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপে। ফাইনালে এই দ্বৈরথটা জমে উঠতে পারে এমন একটা সম্ভাবনার মঞ্চ ছিল তৈরি। জমলও বেশ। এমবাপে মেষ খেলায় বাজিমাত করলেন। মেসিকে পেছনে ফেলে কাতার বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা ফ্রান্সের এমবাপে।
মেসি-এমবাপে দু'জনেরই ফাইনালের আগে গোলসংখ্যা ৫টি। লুসাইল স্টেডিয়ামে ২২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল পেতেই মেসি উঠে যান চূড়ায়। তিন ম্যাচ পর একাদশে ফেরা আনহেল ডি মারিয়া এদিন ছিলেন অপ্রতিরাধ্য। বাম পাশ দিয়েই মূলত বেশিরভাগ আক্রমণে উঠেছে কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির দল। ২২তম মিনিটে আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি এনে দেন সেই ডি মারিয়াই। বক্সের ভেতর তাকে ফাউল করেন ফ্রান্সের উসমান দেম্বেলে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি শিমন মারচিনিয়াক।
পেনাল্টি নিতে ধীরপায়ে এগিয়ে আসা মেসিকে বুঝতে পারেন নি ফরাসি গোলরক্ষক উগো লরিস। ঝাঁপিয়ে পড়েন নিজের ডান পাশে, একটু থেমে গিয়ে সময় নিয়ে মেসি শট নেন তার বাম পাশ দিয়ে। বলটা গিয়ে আছড়ে পড়ে জালে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মেসিও পেয়ে যান তার তার ক্যারিয়ারের আরাধ্য এক গোল। এরপর আরেকটা গোল পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু এমবাপে মেসির ২ গোলের বিপরীতে করেন তিনটি।
৮ গোল করে গোল্ডেন বুট এমবাপের। ৭ গোল করে তার পেছনেই মেসি। এই বিশ্বকাপে পেনাল্টি থেকেই গোল বেশি তার। মেসি-আর এমবাপ্পে কাতার বিশ্বকাপে ৭টি করে ম্যাচ খেলেছেন। পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ ছাড়া বাকিগুলোতে গোল পেয়েছেন মেসি। যদিও ৬ গোলের চারটিই স্পটকিক থেকে এসেছে।
২৩ বছর বয়সী এমবাপে ডেনমার্ক ও পোল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোল। অন্য গোলটি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এরপর ফাইনালে হ্যাট্রিক। গতি আর ড্রিবলিংয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন আসছে সময় শুধু তারই।
এটি