ভারত-শ্রীলঙ্কার আধিপত্য, অপেক্ষা ফুরোবে বাংলাদেশের?
সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পর্দা উঠছে ক্রিকেটের অন্যতম প্রেস্টিজিয়াস টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপের। ৬ জাতির এই টুর্নামেন্টে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া ৫ এশিয়ান দেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা নেপাল। এবারের এশিয়া কাপকে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই দেখছে দলগুলো।
১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের। দুই বছর পরে অনুষ্ঠিত আসর থেকেই বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে আসছে। এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপের ১৫টি আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে দুটি আসর ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের। বাকি ১৩টি ছিল ওয়ানডে সংস্করণের।
এশিয়া কাপে সবচেয়ে সফল কারা?
এশিয়া কাপ ক্রিকেটে সবচেয়ে সফলতম দল ভারত ও শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে, তিনবার এশিয়া কাপের ফাইনালে খেললেও এখনো শিরোপাখরা ঘোচাতে পারেনি বাংলাদেশ।
১৯৮৪ সালে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টের প্রত্যেক আসরেই অংশ নেওয়া একমাত্র দল শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপে একবার করে অংশ নেয়নি ভারত ও পাকিস্তান। তিনটি আসরে ছিল না টিম টাইগার্সের উপস্থিতি। ওয়ানডে ফরম্যাটে গত ১৩টি আসরে ৫০ ম্যাচ খেলে ৩৪টিতে জয়, ১৬টি হারের রেকর্ড রয়েছে শ্রীলঙ্কার। অর্থাৎ ৬৮ শতাংশ জয় রয়েছে লঙ্কানদের।
আরও পড়ুন: অনলাইনে যেভাবে দেখবেন এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপের ইতিহাসে ৪৯টি ম্যাচের মধ্যে ৩১টিতে জয় ও ১৬টিতে হেরে দ্বিতীয়স্থানে আছে ভারত। এছাড়া ১টি করে ম্যাচ টাই ও পরিত্যক্ত হয়েছে টিম ইন্ডিয়ার। ভারতের শতকরা জয়ের হার ৬৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। কিন্তু ক্রিকেটে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ভারত সর্বোচ্চ সাতবার ও শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছয়বার শিরোপা জিতেছে। ভারত ওয়ানডেতে ছয়বার ও টি-টোয়েন্টিতে একবার ট্রফি জিতেছে। শ্রীলঙ্কা ওয়ানডেতে পাঁচবার ও টি-টোয়েন্টিতে একবার শিরোপার স্বাদ পেয়েছে।
ওয়ানডে ফরম্যাটে ২০০০ এবং ২০১২ আসরে তৃতীয় সর্বোচ্চ দু’বার শিরোপা জিতেছে পাকিস্তান। ৪৫ ম্যাচে অংশ নিয়ে ২৬টি জয় ও ১৮টিতে হেরে যাওয়ায়, পাকিস্তানের শতকরা জয় ৫৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। তাদের ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। এ তালিকায় জয়ের দিক দিয়ে চতুর্থস্থানে আছে বাংলাদেশ। ৪৩টির মধ্যে মাত্র ৭টিতে জয় ও ৩৬টিতে হার রয়েছে টাইগারদের। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ হার বাংলাদেশেরই। তাদের শতকরা জয় ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপে ৬ দলের পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড
২০১৪ এবং ২০১৮ সালে দু’বার ওয়ানডে ফরম্যাটে খেলেছে আফগানিস্তান। ৯ ম্যাচের মধ্যে ৩টিতে জয়, ৫টিতে হার ও ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে আফগানদের। তাদের শতকরা জয় ৩৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ২০০৪, ২০০৮ এবং ২০১৮ ওয়ানডে ফরম্যাটে তিনবার এশিয়া কাপে খেলে ৬ ম্যাচের সবক’টিতে হেরেছে হংকং। ওয়ানডে ফরম্যাটে ২০০৪ এবং ২০০৮ সালে দু’বার অংশ নিয়ে ৪ ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই হেরেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এবারের এশিয়া কাপে প্রথমবারের মত খেলবে নেপাল।
বাংলাদেশের অপেক্ষা ফুরোবে?
তিন তিনবার শিরোপার খুব কাছাকাছি গিয়েও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের। এবারো সাকিব বাহিনীকে ঘিরে বড় প্রত্যাশা। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স কিংবা পরিসংখ্যানও টাইগারদের পক্ষে কথা বলছে।
২০১৮ সাল থেকে ওয়ানডে ম্যাচের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, টুর্নামেন্টে অংশগ্রহনকারী ছয় দলের মধ্যে সবচেয়ে সফল হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশ। বিগত ৫ বছরের পরিসংখ্যানে ভারতের জয়ের হার ৬১.৯০ শতাংশ। এই সময়ে মোট ৮৪টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ভারত জয় পেয়েছে ৫২টি ম্যাচে। অপরদিকে বাংলাদেশের জয়ের হার ৫৯.০৯ শতাংশ। ৬৬টি ম্যাচ খেলে ৩৯টিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা।
৫৭টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ৩০ ম্যাচে জয় পাওয়া পাকিস্তানের জয়ের হার ৫২.৬৩ শতাংশ। ৭১ ম্যাচে অংশ নিয়ে শ্রীলংকা জয় পেয়েছে ৩১টি ম্যাচে, জয়ের হার ৪৩.৬৬ শতাংশ। আফগানিস্তানের জয়ের হার ৪০.৯০ শতাংশ। তারা ৪৪টি ম্যাচ খেলে জিতেছে ১৮টিতে।
এফআই