আইসিসির বণ্টন মডেলে অসন্তুষ্ট সহযোগী দেশগুলো!
মাসখানেক আগে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি তাদের রাজস্ব বন্টনে নতুন মডেল প্রকাশ করেছিল। যেখানে সংস্থাটির মোট আয়ের প্রায় ৩৮.৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের জন্য। আইসিসির পূর্ণ সদস্য ১২ দেশ সম্মিলিতভাবে পাবে মোট আয়ের ৮৮.৮১ শতাংশ। বাকি ১১ শতাংশ ৯৪টি সহযোগী দেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। যাতে অসন্তুষ্টি জানিয়েছে সহযোগী দেশগুলো। তাদের দাবি, ক্রিকেটের প্রসার থমকে যেতে পারে, নতুন এই মডেল অনুমোদন পেলে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন এই তথ্য জানিয়েছে। এর আগে আগামী ২০২৪ থেকে ২০২৭ চক্রের জন্য নতুন এই রাজস্ব বন্টন মডেলের কথা জানিয়েছিল সংস্থাটি। আগামী জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে আইসিসির বোর্ড সভায় এটি অনুমোদন পেতে পারে।
আরও পড়ুন >> ভারতের জন্য আইসিসির রেকর্ড বরাদ্দে ফুঁসছে পিসিবি!
মঙ্গলবার (৩০ মে) রয়টার্সকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আইসিসি প্রধান নির্বাহী কমিটির তিন সহযোগী সদস্য প্রতিনিধির একজন সুমোদ দামোদর। সেখানে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত এই কাঠামো সহযোগী দেশগুলির চাহিদা পূরণ করবে না। প্রস্তাবিত মডেলটি যদি অনুমোদন পায় তাহলে একজন সহযোগী সদস্য প্রতিনিধি হিসেবে আমি হতাশ হব। সহযোগী সদস্যদের জন্য এটি অপর্যাপ্ত হওয়ার অসংখ্য বাস্তবিক কারণ রয়েছে।’
— Reuters (@Reuters) May 30, 2023
বতসোয়ানা ক্রিকেট বোর্ডের এই ভাইস চেয়ারম্যান আও বলেন, ওয়ানডে ক্রিকেটের মর্যাদা পাওয়া সহযোগী দেশগুলোর হাই-পারফরম্যান্স কার্যক্রম চালু রাখতে আরও অর্থের প্রয়োজন। ছেলেদের ক্রিকেটে নেপাল ও মেয়েদের খেলায় থাইল্যান্ডের দ্রুত উত্থান হচ্ছে। এরকম প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হলে অন্য দেশগুলোও এগিয়ে যাবে।
ভানুয়াতু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী টিম কাটলারের মতে, প্রস্তাবিত এই কাঠামো ক্রিকেটের বড় ও ছোট দেশগুলির মধ্যে বৈষম্যই কেবল বাড়াবে। নতুন মডেলটি এখন বৃহত্তর ক্রিকেটীয় দেশগুলোকে আরও বেশি সুবিধা দেবে এবং প্রস্তাবিত পরিবর্তন এই ভারসাম্যহীনতাকে বাড়িয়ে তুলবে, খেলার ভবিষ্যৎ আরও ঝুঁকিতে ফেলবে।’
আরও পড়ুন >> ক্রিকেটকে অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করতে যা করছে আইসিসি
এর আগে পাকিস্তানি ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি নাজাম শেঠীও বিসিসিআইকে সিংহভাগ বরাদ্দের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘পিসিবি চায় আইসিসি জানাক কীভাবে এই টাকার ভাগ করা হবে। কোন কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিসিবি এই সিদ্ধান্তে একেবারেই খুশি নয়। জুন মাসে এই নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। পুরো তথ্য না জানানো হলে আমরা এই প্রস্তাব মানব না। ভারতের বেশি টাকা পাওয়া উচিত। এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু কীভাবে এই ভাগটা হলো তা পরিষ্কার করতে হবে।’
— Associate Cricket (@AssociateCric) May 30, 2023
তবে এই বিষয়ে জানতে রয়টার্স আইসিসি কর্মকর্তাদের মন্তব্য জানতে চাইলেও তারা সাড়া পায়নি।
আইসিসির আয়ের ভাগ পাওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। বেন স্টোকসদের বোর্ড বছরে আইসিসির আয়ের ৪১.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবে। যা শতাংশের বিচারে ৬.৮৯। তৃতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ডকে বছরে আয়ের ৩৭.৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে আইসিসি (৬.২৫ শতাংশ)। এছাড়া, বাংলাদেশ ২৬.৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪.৪৬ শতাংশ) এবং পাকিস্তান ৩৪.৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৫.৭৫ শতাংশ)।
এএইচএস