দেশের খেলা নাকি আইপিএল, কোনটি আগে?
আগামী ৩১ মার্চ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে আইপিএলের এবারের আসর। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার ডাক পেলেও তাদের অংশগ্রহণ নিয়ে বেঁধেছে বিপত্তি। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ছুটি নিয়েই সরগরম ক্রিকেটপাড়া। আইপিএলের শুরু থেকেই তারা যোগ দিতে চাইলেও, বিসিবি চায় চলমান সিরিজ শেষ হলেই তাদের ছুটি দিতে। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, দেশের খেলা নাকি আইপিএল, কোনটির প্রাধান্য পাওয়া উচিত?
আগামী ৪ এপ্রিল থেকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ থাকায় বিসিবি চাইছে না তার আগেই সাকিব-লিটনরা যোগ দিক আইপিএলে। এই প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও টাইগার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দুজনই একই মন্তব্য করেছেন। তারা বলছিলেন, আইপিএল বড় টুর্নামেন্ট হলেও, দেশের খেলা আগে।
আরও পড়ুন : সাকিব-লিটনরা না থাকলেও ক্ষতি হবে না, আইপিএল নিয়ে সুজন
কেবল এই বছরই নয়, প্রতি বছরই আইপিএল এলে দেশীয় ক্রিকেটারদের ছাড়পত্র দিতে চরম নাটকীয়তা দেখা দেয়। ফলে আইপিএল আর বাংলাদেশের খেলা হয়ে দাঁড়ায় সাংঘর্ষিক। আবার একই কারণে বাংলাদেশীদের যথাসময়ে না পাওয়ায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও যারপরনাই বিরক্ত। টাইগারভক্ত, দর্শক ও ক্রীড়াবোদ্ধাদের মনেও তখন একটাই প্রশ্ন বারবার ঘুরপাক খেতে থাকে যে, কোনটি আগে!
এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন বোর্ড পরিচালক ও সাবেক ক্রিকেট অপারেশন্সের প্রধান আকরাম খান। তিনি বলছেন, ‘দেখা যাক কী হয়, এই বিষয়ে বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে আমিও নিশ্চয়ই সেটার সঙ্গেই থাকব। তারাও নিশ্চয়ই চিন্তাভাবনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রত্যেকটা দেশের খেলোয়াড়দের জন্যই কিন্তু দেশ আগে।’
বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তাদের ছাড়া উচিত কিনা এমন প্রশ্নে আকরাম বলেন,
একই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক পেসার নাজমুল হোসেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের নামী এই কোচ মনে করেন সাকিব-লিটনদের আইপিএল খেলতে দেওয়া উচিত, ‘আমার কাছে মনে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন এমন এক জায়গায় পৌঁছে গেছে যে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে আমাদের যথেষ্ট খেলোয়াড় আছে। ইংল্যান্ডের কথাই ধরুন, ওদের ওয়ানডে দল খেলে এখানে আর টেস্ট দল খেলে নিউজিল্যান্ডে। আমার মনে হয় এই টেস্ট ম্যাচ থেকে আসন্ন বিশ্বকাপটা গুরুত্বপূর্ণ।’
নাজমুল আরও বলেন, ‘একটা আইপিএলে খেলা মানে নিজেকে অনেক এগিয়ে রাখা, এটা কিন্তু বাস্তব। যেহেতু ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ। ওই চিন্তা করলে আমার মনে হয় ছেড়ে দেওয়াই ভালো। আর যদি এমন হত যে দেশে ভারত, অস্ট্রেলিয়া বা সেরকম কোনো দল আসছে তাহলে দেশের কথা চিন্তা করতাম। এখন আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে খেলার মতো অনেক খেলোয়াড়ই আছে বলে মনে করি।
এখনই সাকিব-লিটনদের বিকল্প তৈরি করা উচিত দাবি করে নাজমুল বলেন, ‘সারাজীবন কি সাকিব আর লিটন খেলবে? বিকল্প খেলোয়াড় তো তৈরি করতে হবে। যার যার ব্যক্তিগত অনেক মত থাকে, কিন্তু আমার মনে হয় সারাজীবন তো সাকিব-লিটনের ওপর নির্ভর করে থাকব না। সাকিব না থাকলেও অধিনায়ক হওয়ার মতো অনেকে আছে।’
এসএইচ/এএইচএস