প্রয়াত স্বামীর চাওয়ায় ছেলেকে ক্রিকেটার বানাবেন রুবেলের স্ত্রী
দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে গত ১৯ এপ্রিল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল। ছোট্ট রুশদান এখনও হয়তো বুঝতে শেখেনি যে তার বাবা আর কোনোদিনও ফিরবেন না! অসুস্থ থাকাকালীন রুবেল নিজ বাসার যে বিছানায় থাকতেন, সেখানেই বাবার জন্য অপেক্ষা রুশদানের। রুবেলের সহধর্মিণী চৈতি ফারহানা রূপা কী দিয়ে বুঝ দিবেন ছেলেকে? ভাষা হারিয়ে নির্বাক দৃষ্টিতে শুধু চেয়ে থাকেন তিনি।
রুবেলে নিজে ক্রিকেটার ছিলেন, খেলেছেন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট। নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকা বিভাগকে। রুবেলের স্বপ্ন ছিল, একদিন তার মতোই ছেলে রুশদানও বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াবেন। রুবেলের সেই স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে চান চৈতি। ছেলেকে ক্রিকেটার হিসেবে তৈরি করতে চান তিনি। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে অভিভাবক হিসেবে পাচ্ছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলামকে।
আজ (শুক্রবার) সংবাদমাধ্যমকে চৈতি বলেন, ‘রুবেলের খুব ইচ্ছা ছিল ছেলেকে ভালো ক্রিকেটার বানানোর। তার এই ইচ্ছা পূরণ করতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। মেয়র আতিক বলেছেন, পারিবারিক অভিভাবক হিসেবে উনি থাকবেন সবসময়। আমরা হয়ত বিসিবিকেও পাশে পাব।’
দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেন ক্রিকেটার রুবেল। শেষ কিছুদিন ভর্তি ছিলেন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মাঝে তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই খবর ভুল প্রমাণ করে আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গিয়েছিলেন রুবেল। কিন্তু গত ১৯ এপ্রিল অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন তিনি।
রুবেলের নিথর দেহ সমাহিত হয়েছে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। সেখানকার নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি কবরের স্থায়িত্ব দুই বছর। স্থায়ী করতে হলে এক কোটি টাকার প্রয়োজন। রুবেলের মৃত্যুর পর তার পরিবারের ইচ্ছে ছিল, রুবেলের কবরটা যেন স্থায়ী হয়। মেয়র আতিকুল রুবেলের কবরকে স্থায়ীকরণের অনুমোদন দিয়েছেন। বিদেশ থেকে ফিরে আতিকুল আজ রুবেলের বাসায় যান তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
সেখানে মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে চৈতি বললেন, ‘মাননীয় মেয়রের কাছে আমি অসম্ভব রকমের কৃতজ্ঞ। রুবেল মারা যাওয়ার পর আসলে আমার একটাই চাওয়া ছিল। আমার আর কোনো চাওয়া নেই। রুবেলকে যেন আমরা দেখতে পারি। তার শরীরটা তো ওখানেই আছে। আমরা পুরো পরিবার মেয়রের কাছে কৃতজ্ঞ। অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
সঙ্গে যোগ করেন তিনি, ‘আর কোনো চাওয়া নেই আসলে আমার। সবার কাছেই আমি কৃতজ্ঞ। গণমাধ্যম খবরটা মেয়রের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন, নাহলে এটা হত না। আপনাদের কাছেও কৃতজ্ঞ। রুবেল কেমন মানুষ ছিল এটা তো আপনারা সবাই জানেন। ও একজন নিখাদ ভদ্রলোক। একজন মানুষের যত ভালো গুণ থাকতে হয় রুবেলের সব ছিল।’
টিআইএস/এইচএমএ