এক যুগে অ্যাডহকের বৃত্তে টেনিস ফেডারেশন
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ক্রীড়া ফেডারেশন ও সংস্থাগুলো চলেছে অ্যাডহক কমিটি ভিত্তিতে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ক্রীড়াঙ্গনেও গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের ব্যবস্থা চালু করে। ১৯৯৮ থেকে ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচনের প্রথা শুরু হয়ে অনেক ফেডারেশন নির্বাচন পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠলেও একমাত্র ব্যতিক্রম টেনিস।
টেনিস ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৪ সালে। চার বছর মেয়াদী কমিটি মেয়াদউত্তীর্ণ হয় ২০০৮ সালে। এরপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করতে পারেনি। ২০০৮ সালে কিছু আইনী প্রক্রিয়া চলছিল। এতে নির্বাচন স্থগিত করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এক পর্যায়ে ২০০৯ সালে অ্যাডহক কমিটি করে।
এক যুগ পেরিয়ে গেলেও সেই অ্যাডহক বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন। এক যুগের মধ্যে অ্যাডহকের বদলে অ্যাডহক হয়েছে পাঁচবার। প্রতিবার অ্যাডহকে সাধারণ সম্পাদক পরিবর্তন হলেও সভাপতি পরিবর্তন হয়নি।
২০০৯ সালে প্রথম অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ইসতিয়াক আহমেদ কারেন। পরের অ্যাডহক কমিটির সম্পাদক হন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক আব্দুর রহমান। দ্বিতীয় অ্যাডহক কমিটি দুই বছর থাকার পর আরেকটি অ্যাডহক কমিটি হয়।
সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক খুরশিদ আনোয়ার। ’১৭ সালে গঠিত অ্যাডহকে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন গোলাম মোর্শেদ। এটি সর্বশেষ অ্যাডহক কমিটি। এই কমিটি একটি পদে পরিবর্তন এসেছে।
সাধারণ সম্পাদকের ওপর নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তার পরিবর্তে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরই সচিব মাসুদ করিমকে টেনিসের সম্পাদক মনোনীত করে। তার এই সময়ের মধ্যে টেনিস কমপ্লেক্সে সংস্কার কাজ হয়। রমনা টেনিস কমপ্লেক্সের নাম শেখ জামালের নামে নামকরণ হয়। কোর্ট, ফ্লাডলাইটসহ বিভিন্ন সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে এই সময়ে।
চলতি বছর ১৩ এপ্রিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক শাহ আলম সরদারকে প্রধান করে টেনিসের নির্বাচন কমিশন গঠন হয়। এরপর সাত মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি ফেডারেশন।
টেনিস ফেডারেশনের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে মাসুদ করিম বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আমাদেরকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাউন্সিলরের তালিকা দিতে বলেছে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।’
মাসুদ করিম সম্প্রতি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব থেকে অন্য মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়েছেন। গত এক যুগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে তিন জন মন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন। কোনো মন্ত্রীই টেনিসে গণতান্ত্রিক ধারা ফেরাতে পারেননি। এবার ওই ধারা ভাঙে কি না, সেটিই দেখার।
এজেড/এমএইচ