তাইজুলের আলোয় উজ্জ্বল সকাল
চট্টগ্রাম টেস্টে একাদশে চার বোলার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ দল। সাগরিকার পাড়ে পঞ্চম বোলারের অভাব ছিল স্পষ্ট। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আজ (শনিবার) মিরপুরে মাঠে নেমেছে টাইগাররা। সাকিব আল হাসান ফেরায় একাদশে পাঁচজন বিশেষায়িত বোলার। প্রায় আড়াই বছর পর একাদশে ফেরানো হয়েছে পেসার খালেদ আহমেদকে, তবে খুব বেশি ফায়দা মিললো না ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনের সকালে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাট করত নামে পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজমের সিদ্ধান্তের স্বার্থকতা প্রমাণ দিয়েছেন সফরকারী দুই ওপেনার। তাতে খেই হারালেন স্বাগতিক বোলাররা। যদিও মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে বাংলাদেশের বিবর্ণ সকালে প্রাণের সঞ্চার ঘটালেন তাইজুল ইসলাম। প্রথম সেশন শেষে তাইজুলের নেওয়া ২ উইকেট হারিয়ে ৭৮ রান পাকিস্তানের বোর্ডে। বাংলাদেশের আক্ষেপ বাড়ল সকালেই ২টি নষ্ট করে।
মিরপুরের উইকেট দিনের প্রথম ঘণ্টা বরাবরই চ্যালেঞ্জিং ব্যাটসম্যানদের জন্য। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে আরো বেশি বেগ পাওয়ার কথা ব্যাটসম্যানদের। তবে এদিন দেখা গেল উল্টো চিত্র। শুরুটা দেখেশুনে করলেও দুই পেসার এবাদত হোসেন আর খালেদ আহমেদের উপর চড়াও হন পাকিস্তানের দুই ওপেনার আবিদ আলি আর আব্দুল্লাহ শফিক।
আচমকা একাদশে জায়গা পাওয়া খালেদ নিজের প্রথম ওভারে কোন রান না দিলেও প্রথম স্পেলে পরের ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে থাকেন উইকেট শূন্য। এবাদত ৫ ওভারে খরচ করেন ১৫ রান। দুই পেসারই লাইন-লেংথে গড়বড় করেন, চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি পাকিস্তানের দুই ওপেনারকে।
উপায় না পেয়ে দুই প্রান্ত থেকে দুজন বাঁহাতি স্পিনার ব্যবহার করেন মুমিনুল হক। ইনিংসের ১৬তম ওভারে সাকিবের করা বলে বাম পা সামনে এগিয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন শফিক, ব্যাট-বলে সংযোগ না হওয়ায় বল লাগে পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। একটু ভেবেই নিজেই রিভিউ নিয়ে নেন সাকিব, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বল আউটসাইড স্টাম্পে পিচ হওয়াতে রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।
শফিক অবশ্য পরে আর সুবিধা করতে পারেননি। ১৯তম ওভারে ওয়াইড ক্রিজ থেকে লেংথ বল ভেতরে ঢুকান তাইজুল। প্রতিক্রিয়া দেখাতে একটু দেরি করে ফেলেন শফিক। তার ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল আঘাত হানে অফ স্টাম্পে। ভাঙে ১১১ বল স্থায়ী ৫৯ রানের জুটি। ৫০ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ২৫ রান করেন শফিক।
এরপর সুযোগ আসে আরো একটি। ঘটনা ইনিংসের ২৩ তম ওভারের তৃতীয় বলে। ফুলার লেংথের বল আজহারের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে চলে যায় উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে। কট বিহাইন্ডের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি, বাংলাদেশ রিভিউ নিয়ে নিলে দেখা যায় বল ব্যাট স্পর্শ করেনি। প্রথম সেশন পার হওয়ার আগে ৩টি রিভিউয়ের ২টি হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়া তাইজুল হাল ছাড়লেন না। তাতে মধ্যাহ্নভোজের আগে আবার সাফল্য আসলো। এবার প্যাভিলিয়নে আগের ম্যাচের সেরা ব্যাটসম্যান আবিদ আলি। তাইজুলকে টানা ডট দিয়ে রানের জন্য যেন ছটফট করছিলেন আবিদ। ইনিংসের ২৫তম ওভারের শেষ বলটি ঠিক মতো খেলতে পারেননি এই ওপেনার ব্যাটের কানায় লেগে এলোমেলো করে দেয় স্টাম্প। ৬ চারে ৮১ বলে ৩৯ রান করেন আবিদ।
আবিদের আউটের পর সকালের সেশনে খেলা হয়েছে আরো ৬ ওভার। তবে দলকে কোন বিপদে পড়তে দেননি অধিনায়ক বাবর আর আজহার আলী। ২ উইকেট হারিয়ে দলীয় স্কোর ৭৮ রান নিয়ে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় পাকিস্তান। বিরতি থেকে ফিরে বাবর ৮ ও আজহার ৬ রানে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু করবেন।
টিআইএস/এটি