মেসিকে ‘প্রায়’ বিদায় করা বার্তোমেউ আবার সভাপতি হতে চান
বার্সেলোনা সমর্থকদের একটা বড় অংশের চক্ষূশূল সাবেক বার্সা সভাপতি হোসে মারিয়া বার্তোমেউ। তার বোর্ড ক্ষমতায় থাকাকালীনই আর্থিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্লাবটি। লিওনেল মেসির সাথে দ্বন্দ্ব, মাঠের খারাপ পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে ২০১৯ সালের পর থেকেই আর বড় কোন সাফল্য পায়নি দলটি।
এবার নতুন এক ঘোষণা দিয়ে আবারও আলোচনায় চাপের মুখে পদত্যাগ করা এই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমি আবারও নির্বাচনে দাড়াব। আমি ১২টি মৌসুম কাটিয়েছি এখানে। শুরুতে লাপোর্তা, রোসেল এবং পরবর্তীতে নিজে প্রেসিডেন্ট হিসেবে।’
বার্সেলোনা সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল সেই ২০১৫ সালে। এরপর থেকে ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতায় কেবল দুঃস্মৃতিই উপহার পেয়েছে বার্সা। অধরা সেই ট্রফিটা ন্যু ক্যাম্পে ফেরানোর একটা দারুণ ইচ্ছা ছিল মেসির। সে কারণেই দলে থাকাকালে সব সময়ই তৎকালীন অধিনায়কের চাওয়া ছিল একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্কোয়াড, একটা যুতসই ক্রীড়া প্রকল্প। কিন্তু বার্তোমেউর বোর্ড সেটা দিতে পারেনি তাকে। সে কারণে ২০১৯-২০ মৌসুম শেষে দল ছেড়ে চলেই যেতে চেয়েছিলেন।
বার্তোমেউর ‘কীর্তি’ এখানেই শেষ নয়। বর্তমানে বার্সার অর্থনৈতিক সমস্যার মূলে তার অধীনে থাকা বোর্ডই। শেষ চার বছরের বার্সার অপরিকল্পিত সব দলবদল তো আছেই, খেলোয়াড়দের বেতনও প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি দিয়েছে তার বোর্ড, চুক্তির দরকষাকষিতেও দূরদর্শিতার ছাপ দেখাতে পারেনি।
ফলে করোনাকালে ক্লাবের নিয়মিত আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড় আর্থিক সমস্যাতেই পড়তে হয়েছে দলটিকে। যে কারণে মেসিকে ক্লাবে রাখা সম্ভব হয়নি বার্সার। মেসির দল ছাড়তে চাওয়া, এক মৌসুম পর মেসির থাকতে চেয়েও বার্সা ছাড়ার কারণ বনে যাওয়ায় বার্তোমেউ বার্সেলোনা সমর্থকদের মাঝে বেশ অজনপ্রিয়। সেই বার্তোমেউই আবার সভাপতি হওয়ার আশা ব্যক্ত করলেন।
তবে সাবেক এই সভাপতি স্বীকার করেছেন তার অতীতের কিছু ভুল। বার্তোমেউ আমলের অন্যতম কলংকিত অধ্যায় ছিল ২০১৮-১৯ মৌসুমে আনফিল্ডে লিভারপুলের কাছে হার। ওই খেলার পরপরই কিছু পরিবর্তন আনা দরকার ছিল মনে করেন তিনি।
ই স্পোর্টস থ্রিকে স্প্যানিশ এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘লিভারপুলের বিপক্ষে পরাজয়ের পর দলে পরিবর্তন না আনাটা ভুল ছিল। আমি খেলোয়াড়দের কথা শুনেছিলাম এবং আমি ভুল ছিলাম। আমরা আমাদের আর্থিক সীমায় পৌঁছে গিয়েছিলাম ও তার পরপরই মহামারির ফাঁদে পড়লাম আমরা।’
বার্তোমেউর আমলে বেশ কিছু অপরিকল্পিত দলবদল সম্পন্ন করে বার্সেলোনা। তার আমলে কেনা অধিকাংশ খেলোয়াড়ই ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হন দলে। এই তালিকায় আছেন উসমান দেম্বেলে, ফেলিপে কৌটিনিও, অ্যান্টোয়ান গ্রিজম্যানসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু খেলোয়াড় যাদেরকে আমরা দলে ভিড়িয়েছিলাম প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কারও কারও পিছনে অনেক অর্থ খরচ হত, কিন্তু এগুলো ফুটবলে হয়ে থাকে। কৌটিনিও ও দেম্বেলেকে দলে নেয়ার পর সবাই তাদেরকে সাধুবাদ জানিয়েছিল। ইনিয়েস্তা চলে যাচ্ছিল তাই কৌটিনিও এসেছিল। সে প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড় ছিল। নেইমারের বিদায়ের কারণে দেম্বেলেকে আনা হয়।’
এআইএ/এনইউ