জয়ের জন্য বাংলাদেশের চাই ১৪১ রান
বাংলাদেশ দলের এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনের প্রতিপাদ্য, ‘ব্যারিয়ার’ বা ‘দেয়াল’ ভাঙার মিশন। কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের তেমন কোন সাফল্য তো নেই-ই, সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে এক ম্যাচ ছাড়া বড় কোন দলের বিপক্ষেও জয় নেই। এবার সে দেয়াল ভাঙার লক্ষ্য টাইগারদের। তার আগে টপকাতে হবে প্রথম পর্বের বাধা। সেই চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে আজ (রোববার) স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ দল।
ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়াম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি মিরপুর নাকি মাসকাট। বাংলাদেশ দল মাঠে ঢোকার আগেই ভরে যায় স্টেডিয়াম গ্যালারি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল পেয়েছে ভিন্ন এক স্বাদ। করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর ‘সপক্ষের’ এতো সমর্থকদের সামনে খেলতে নামল টাইগাররা। এ ম্যাচে টস জিতে স্কটল্যান্ডকে আগে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ১৪০ রানে আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। আসরের প্রথম ম্যাচে প্রথম জয়ের জন্য লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রয়োজন ১৪১ রান।
ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদদের সামনে খেই হারায় স্কটিশরা। ১০টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পর ৩ পেসার নিয়ে মাঠে নামে টাইগার শিবির। এর ফল মেলে হাতেনাতে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তৃতীয় পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে অ্যাটাকে এনে সফল অধিনায়ক মাহমুদল্লাহ।
দুর্দান্ত এক ইয়ার্কারে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক কাইল কোয়েটজারকে তুলে নেন সাইফউদ্দিন। রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন স্কটিশ ওপেনার। পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারে স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান।
মিরপুরে নিয়মিত নতুন বলে হাত ঘোরান শেখ মেহেদীকে ইনংসের অষ্টম ওভারে নিয়ে আসেন মাহমুদউল্লাহ। বোলিংয়ে এসে মেহেদীর জোড়া আঘাত। শিকার বানান জর্জ মুন্সি ও ম্যাথিউ ক্রসকে। উইকেটরক্ষক ব্যাটার ক্রস ১১ ও ২৯ রান করে আউট হন জর্জ।
এরপর দৃশ্যপটে সাকিব আল হাসান। ইনিংসের ১১তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন তিনিও। আউট করেন রিচি বেরিংটন (২) ও মাইকেল লিস্ককে (০)। এই দুই উইকেট তুলে বিশ্বরেকর্ড গড়েন সাকিব। ১০৮ উইকেটের মালিক বনে যাওয়ার পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিতে সর্বাধিক উইকেটও তার। ৮৪ ম্যাচ খেলে ১০৭ উইকেট নিয়ে শেষ হয়েছে লাসিথ মালিঙ্গার ক্যারিয়ার। আজ প্রথম উইকেট নেওয়ার সময় লঙ্কান কিংবদন্তি ছুঁয়ে ফেলেন সাকিব। পরে লিস্ককে আউট করে এককভাবে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক বনে যান তিনি।
সাকিবের উৎসবের দিনে মিরপুরকেই যেন মনে করালেন মেহেদী। শের-ই-বাংলায় যে স্পিনে ঘায়েল হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো প্রতিপক্ষ, যে মন্থর উইকেট বানিয়ে সমালোচিত বাংলাদেশ, ওমানের আল আমেরাতের ব্যাটিং বান্ধব উইকেট যেন রূপ নিলে স্পিন ট্রাকে। এবার মেহেদীতে কুপোকাত ক্যালাম ম্যাকলয়েড। এই স্কটিশ আউট হলেন ৫ রান করে। নিজের কোটার ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট অফ স্পিনার মেহেদীর। এই ফরম্যাটে এটি তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
সপ্তম উইকেটে জুটি জমিয়ে তোলেন মার্ক ওয়াট আর জশ ডেভি। তাদের জুটিতে ৫১ রানের জুটির উপর ভর করেই দলীয় রান একশোর কোটা পার করে স্কটল্যান্ড। ২২ রানে থাকা ওয়াটকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। পরে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ক্রিস গ্রিভস। তার ২৮ বলে খেলা ৪৫ রানের ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ১৪০ রানের পুঁজি পায় স্কটল্যান্ড। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৪১ রান।
বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী ৩, সাকিব ২, মুস্তাফিজ ২, সাইফউদ্দিন ও তাসকিন সমান ১টি করে উইকেট নেন।
টিআইএস