নেদারল্যান্ডস : ২০০৯ এর পুনরাবৃত্তি হবে আবার?
নিজেদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস ক্রিকেট দল। ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে এসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো আবারো সেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল ডাচরা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ইংলিশরা ১৩৩ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ৮৮ রানে অলআউট হয়েছিল। ২০২১ সালে নিজেদের চতুর্থ বিশ্বকাপেও কি আগের মতো চমক দেখাতে পারবে রায়ান টেন ডোশে’রা।
২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় পিটার সিলারের দল। ডাচরা এই বিশ্বকাপে দারুণ পারফর্ম করবে বলে আশাবাদী ভক্তরা। কারণ তাদের দলে রয়েছে অভিজ্ঞ রোয়েলফ ভ্যান ডার মারওয়ি ও রায়ান টেন ডোশে’র মতো ক্রিকেটাররা।
ক্রিকেটে ডাচদের আগমন:
ফুটবলের জন্য জনপ্রিয় ইউরোপের এই দেশটিতে ক্রিকেটের আগমন ঘটে উনিশ শতকের দিকে। ১৯৬৬ সালে আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে ক্রিকেটের মর্যাদা পায় ডাচ ক্রিকেট। ১৯৯৬ সালে নেদারল্যান্ডস সর্ব প্রথম তাদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে। তার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে পরপর ৩ টি ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে ডাচরা।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আবির্ভাবের পর পরই নেদারল্যান্ডস ক্রিকেট এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট খেলার মর্যাদা লাভ করে। ২০০৮ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ডাচদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। তারপর আর পিছে ফিরে তাকে হয়নি ইউরোপের এই দলটিকে। একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বকে।
অভিষেক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডাচরা লর্ডসের মাঠে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইতিহাস গড়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে। পুরো ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছিল নতুন এক ক্রিকেটীয় জাতিকে যারা প্রথমবারের মতো এসেই নিজেদের শক্তির জানান দিয়েছিল।
বিশ্বকাপে যাদের উপর নজর থাকবে:
ডাচরা অভিজ্ঞ ও তরুণদের নিয়ে দারুণ এক দল ঘোষণা করেছে ২০২১ বিশ্বকাপের জন্য। বাঁহাতি স্পিনার পিটার সিলারের উপরই নেতৃতের দায়ভার রেখেছে ডাচ ক্রিকেট বোর্ড। এক যোগের ও বেশি সময় ধরে কাউন্টি ক্রিকেট খেলা টেন ডাস্কেটের পাশাপাশি সাবেক দক্ষিন আফ্রিকান অলরাউন্ডার ভ্যান ডার মারওয়িও আছেন ডাচদের বিশ্বকাপ দলে। মারওয়ি নেদারল্যান্ডসের নাগরিকত্ব পাওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে ডাচদের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে আসছেন।
ব্যাটিংয়ে গুরু দায়িত্ব থাকবে নেদারল্যান্ডসের হয়ে গত বিশ্বকাপে বিধ্বংসী পারফর্ম করা স্টিফেন মাইবার্গের উপর। তিনি গত বিশ্বকাপে ডাচদের হয়ে ১৪৬ স্ট্রাইক রেটে ২৮০ রান করেছেন। মিডেল অর্ডারের দায়িত্বে থাকবেন অভিজ্ঞ টেন ডো।
বোলিংয়ের দায়িত্ব থাকছে অভিজ্ঞ কাউন্টি ক্রিকেট খেলা লুগান ফন ভিকের উপর। তার সঙ্গে তরুণ পেসার ডি লিডে। স্পিন আক্রমণে অধিনায়ক সিলারের পাশাপাশি রয়েছেন অভিজ্ঞ ভেন ডার মারওয়ি।
টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডাচরা সব থেকে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিল ২০১৪ সালের বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে। সেখানে তারা ৭টি ম্যাচের মধ্যে ৩টিতে জয় লাভ করেছিল। ইংলিশদের ৮৮ রানে অলআউট করে দ্বিতীয়বারের মতো ইতিহাস রচনা করেছিল ইউরোপের এই দলটি।
এবারের বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড ও নামিবিয়ার মুখোমুখি হবে ডাচরা। শ্রীলঙ্কা ও আইরিশদের বিপক্ষে জয় পেতে হলে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে সিলারের দলকে।
বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের ঘোষিত দল:
পিটার সিলার (অধিনায়ক), কলিন একারম্যান, ফিলিপ বোইসেভেইন, বেন কুপার, বাস ডি লিড, স্কট এডওয়ার্ডস, ব্র্যান্ডন গ্লোভার, ফ্রেড ক্লাসেন, স্টিফেন মাইবার্গ, ম্যাক্স ও’ডাউড, রায়ান টেন ডোশে’, লোগান ভ্যান বেক, টিম ভ্যান ডার গুগেন, রোয়েলফ ভ্যান ডার মারওয়ি, পল ভ্যান মিকারেন।
রিজার্ভ: টোবিয়াস ভিসি, শেন স্নেটার।
বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের খেলার সূচি:
ম্যাচ | বাংলাদেশ সময় | তারিখ |
নেদারল্যান্ডস-আয়ারল্যান্ড | বিকেল ৪ টা | ১৮ অক্টোবর ২০২১ |
নেদারল্যান্ডস-নামিবিয়া | বিকেল ৪ টা | ২০ অক্টোবর ২০২১ |
নেদারল্যান্দস-শ্রীলঙ্কা | রাত৮ টা | ২২ অক্টোবর ২০২১ |
*ডাচদের প্রথম দুটি ম্যাচ হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে ও শেষ ম্যাচটি হবে শারজায়।
এমএফ/এনইউ