এরপরও বাংলাদেশ ফুটবলের উন্নতি দেখছেন আশফাক
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ঢাকা সাফে চ্যাম্পিয়ন দল মালদ্বীপ। সেই দলে ছিলেন না দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা তারকা ও মালদ্বীপের কিংবদন্তী ফুটবলার আলী আশফাক। কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বে টুর্নামেন্টে খেলা হয়নি তার। মালদ্বীপ দলের জন্য তিন বছর পর সাফ হলেও আশফাকের জন্য এই সাফ ছয় বছর পর।
ছয় বছর পর সাফে আশফাকের শুরুটা বিস্মরণযোগ্য হয়েছে নেপালের কাছে হেরে। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে এক গোল করে আশফাক দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছেন। পুনরায় সাফে গোল করতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত এই ফরোয়ার্ড, ‘গোল করা সবাই আনন্দের। সাফের মতো আসরে গোল করতে পারা আরো গর্বের। আজ মালদ্বীপের জাতীয় দিবসের দিনে গোল করে জয়ে অবদান রাখতে পারায় আরো খুশি।’
হামজা বাইসাইকেল কিকে এক গোল এবং আশফাক পেনাল্টি থেকে এক গোল করেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বিচারকদের দৃষ্টিতে আশফাক ম্যাচ সেরা হয়েছেন।
এক যুগের বেশি সময় আলী আশফাক মালদ্বীপ দলকে টেনে যাচ্ছেন। ৮৪ ম্যাচ খেলে তার আন্তর্জাতিক গোল সংখ্যা ৫৪। এর মধ্যে ২১ গোলই তিনি করেছেন সাফের আসর থেকে। ২১ গোল করে তিনিই সাফে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
মালদ্বীপ দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচ কমই হয়। সাফে একই গ্রুপে না পড়লে অনেক সময় খেলাও হয় না মালদ্বীপের সঙ্গে। বাংলাদেশ মালদ্বীপের সঙ্গে সর্বশেষ খেলেছিল ২০১৬ সালে। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ০-৫ গোলে হেরেছিল। আলী আশফাক সেই ম্যাচেও খেলেছিলেন। পাঁচ বছর পর আবার খেললেন বাংলাদেশের সঙ্গে। দুই বাংলাদেশকে তুলনা করলেন এভাবে, ‘আজ বাংলাদেশ হারলেও ভালো খেলেছে। অনেকটা সংগঠিত দলই ছিল। আগে এমনটা দেখেনি। বাংলাদেশের আগের চেয়ে এখন পরিকল্পিত ফুটবলই খেলছে।’
গত দুই ম্যাচের বাংলাদেশের সাথে মালদ্বীপ ম্যাচের বাংলাদেশ একেবারে ভিন্ন। মিডফিল্ডে নিয়ন্ত্রণ ছিল না একেবারেই, পাশাপাশি ছিল না তেমন আক্রমণও। এরপরও বাংলাদেশ দলকে আগের চেয়ে ভালোই বলেছেন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম কিংবদন্তি ফুটবলার ও মালদ্বীপের সেরা ফুটবলার।
বাংলাদেশ মালদ্বীপকে সর্বশেষ হারিয়েছে ২০০৩ সালে। এরপর আর হারাতে পারেনি। মূলত আলী আশফাক যুগে মালদ্বীপকে আর হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
আলী আশফাকের বয়স এখন ৩৬। পায়ে কাজ যথেষ্ট থাকলেও ফিটনেসে অন্যদের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। তাই নিজ থেকে জায়গা ছেড়ে দিতে চান নতুনদের জন্য, ‘ফুটবলে ৩৬ অনেক বয়স। নতুনদের জন্য জায়গা ছেড়ে দেয়াটা উত্তম।’
নতুনদের কাছে জায়গা ছাড়ার আগে আশফাক একটি স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন, ‘দেশের মাটিতে মালদ্বীপকে দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন ট্রফি স্পর্শ করতে চাই’। ২০০৮ সালে মালদ্বীপ প্রথম বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়। সেটার যৌথ আয়োজক মালদ্বীপ হলেও ফাইনাল ছিল শ্রীলঙ্কার কলম্বো। এক দশক পর আবার সাফের শিরোপা জিতে মালদ্বীপ। সেই ফাইনাল ছিল ঢাকায়। সেইবার অবশ্য তিনি দলেই ছিলেন না। এবার মালদ্বীপের কিংবদন্তীর ইচ্ছে দেশের মাটিতে ট্রফি স্পর্শ করার।
এজেড/এনইউ