অসাধুদের ফাঁদে ক্রিকেট-ক্রিকেটার, দায় কার?
অবিশ্বাস্য সব অফারের সঙ্গে চটকদার বিজ্ঞাপন। সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে ই-কমার্সের নামে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত বেশ কয়েকটি ‘প্রতারক’ প্রতিষ্ঠানের ফাঁদ ছিল এমনই। তাদের নানা আয়োজনে সব অঙ্গনের নামিদামি তারকাদের ভিড় ছিল নিয়মিত দৃশ্য। তার মধ্যেও আলাদা ছিল ক্রিকেটার ও ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা গড়ে তোলার চেষ্টা!
নাটক-সিনেমায় ভাটার টান, সঙ্গীতেও আশার আলো নেই তেমন। দেশের অন্য সব খেলাধুলার অবস্থাও হতাশাজনক। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্রিকেটাররাই দেশের সবচেয়ে বড় তারকা। স্বভাবতই নিজেদের প্রচারে সব প্রতিষ্ঠানেরই প্রথম পছন্দ এখন তাঁরাই।
কিন্তু এর মধ্যে মিশে যাচ্ছেন প্রতারকরাও। সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, তারকা ক্রিকেটারদের দেখেই আগ্রহী হচ্ছেন তারা। পা দিচ্ছেন অসাধুদের ফাঁদে। ক্রিকেটারদেরও পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই না বুঝে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন তারা। পরে সাধারণ ক্রেতাদের তোপের মুখে পড়তে তো হচ্ছেই, ঘটছে বাড়ি ঘেরাও করার মতো ঘটনাও।
সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, তারকা ক্রিকেটারদের দেখেই আগ্রহী হচ্ছেন তারা। পা দিচ্ছেন অসাধুদের ফাঁদে। ক্রিকেটারদেরও পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই না বুঝে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন তারা। পরে সাধারণ ক্রেতাদের তোপের মুখে পড়তে তো হচ্ছেই, ঘটছে বাড়ি ঘেরাও করার মতো ঘটনাও
ক্রিকেটাররা বলছেন, স্বল্প সময়ের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন তারা। নির্দিষ্ট ওই সময়ের আগে বা পরে প্রতিষ্ঠানগুলো কী করছে তা দেখার কোনো দায় তাদের নেই। কিন্তু আসলেই চুক্তি করার আগে ক্রিকেটারদের কোনো কিছু দেখার দায় আছে কি না? অথবা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলে কি কোনো দায়ই নেই?
আমি কি মালিক?
ই-অরেঞ্জ, এসপিসি ও সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত রিং আইডি। তিনটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বক্তব্য হচ্ছে, তিনি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। প্রতিষ্ঠানটির জন্য কয়েকটি বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছেন, এতটুকুই। এর বাইরে কোনো দায় তার নেই। কোম্পানির অন্য দায়ের বিষয়ে তাকে খোঁজায় ‘বিরক্ত’ এই সংসদ সদস্য।
এ বিষয়ে কয়েকদিন আগে মাশরাফি বিন মুর্তজা ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, ‘আমার আসলে দায় কেন? আমি কি মালিক? যারাই আসছেন তাদের তো বলতে পারতাম যে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন। সেটাও তো আমি বলিনি কাউকে। বলেছি, আমি আমার মতো চেষ্টা করছি।’
‘আমি একজন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। আমার কাছে এসব বলে লাভ কী? আমি যদি তাদের শেয়ার হোল্ডার হতাম বা এমন কিছু... তাহলে একটা কথা ছিল। আইনের বাইরে গিয়ে মাশরাফি কী করবে? তারা জেলে আছে, তদন্ত হচ্ছে। সেটা তো এখন পুলিশের বিষয়।’
‘বৈধ প্রতিষ্ঠানের’ সঙ্গেই চুক্তি করে বিসিবি
কেবল ক্রিকেটারই নয়। ‘প্রতারক’ এমন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা গেছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবিকেও। প্রতারণার দায়ে সিইও ও চেয়ারম্যান গ্রেফতার হওয়া প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি চলতি বছরের নিউজিল্যান্ড সফরেও বিসিবির স্পন্সর ছিল।
তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রতারণার কথা তারা তখন জানতেন না বলে দাবি বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনের। সরকারের অনুমোদিত বৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই চুক্তি করেছেন বলে দাবি তার। ইভ্যালির সঙ্গে বিসিবিকে যেন না জড়ানো হয়, এই অনুরোধও জানিয়েছেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী।
ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘বিসিবি এর সঙ্গে জড়িত নয়। বিসিবি বাংলাদেশের যেকোনো বৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারে। এখন পুলিশিং করার দায়িত্ব তো ক্রিকেট বোর্ডের নয়। বাংলাদেশের যেকোনো বৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকবে বিসিবির। কোনো প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে যদি অবৈধ কার্যকলাপে যুক্ত হয় এবং এর প্রমাণ পাওয়া যায়, তার সঙ্গে বিসিবির সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। সহজ ব্যাপার।’
বৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা ব্যবসা করে তারা নিশ্চয়ই বৈধ লাইসেন্স নিয়ে করে। সেটা ব্যাংকিং বলেন, মেডিকেল সেক্টর বলেন অথবা ই-কমার্স। যেকোনো সেক্টরেই একই অবস্থা। কোনো অবৈধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিসিবি চুক্তি করে না। আমাদের সঙ্গে তারা যদি বাণিজ্যিক চুক্তিতে যায়, তাদের ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। সেগুলোতে যদি ঝামেলা থাকে, তাহলে তো আমরা চুক্তিতে যাব না।’
নিজেই ইভ্যালির প্রসঙ্গ টেনে বিসিবি সিইও বলেন, ‘অনেকের মাথার মধ্যে যেটা ঘুরছে, ইভ্যালির সঙ্গে বিসিবির চুক্তি ছিল। তখন তাদের সঙ্গে অনেকেই যুক্ত ছিল। সরকারের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এনডোর্সমেন্ট-এ তারা সহযোগিতা করেছে। এখন যদি প্রমাণ হয় যে তাদের উদ্দেশ্য অসৎ ছিল, তাহলে তো এর দায় সংশ্লিষ্ট কেউ নেবে না, নেবে কি?’
চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা কার বিজ্ঞাপন করতে পারবেন, কার পারবেন না
দেশের ক্রিকেট তারকাদের নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সবার আগ্রহ থাকে তুঙ্গে। বিজ্ঞাপনের বাজারেও তাদের কদর বেশি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোটি টাকার চুক্তিতেও যান ক্রিকেটাররা। কিন্তু ওইসব প্রতিষ্ঠানের আদৌ ভবিষ্যৎ কী, এটা নিয়ে আসলে তারা কতটুকু ভাবেন— এসব বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কথা হচ্ছে এসব ক্ষেত্রে তাদের দায়বদ্ধতার ব্যাপারেও।
বিসিবির সঙ্গে যেসব ক্রিকেটার চুক্তি করেন, মূলত তাদের নিয়েই ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। বিসিবির সঙ্গে চুক্তিতে কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা যাবে, এ নিয়ে নির্দিষ্ট করে একটি শর্তও জুড়ে দেওয়া আছে। যদিও তাতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অথবা প্রতারণা নিয়ে তেমন কোনো কিছুর কথা জানা যায়নি।
ক্রিকেটারদের বিজ্ঞাপন বা কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘বিজ্ঞাপন নিয়ে ক্রিকেটারদের অবশ্যই বলা থাকে। খেলোয়াড়দের পার্সোনাল এনডোর্সমেন্ট নিয়ে আলাদা একটা শর্ত দেওয়া থাকে। সেখানে খেলোয়াড়রা কী করতে পারবেন; কীভাবে, কী— এগুলো বলা থাকে।’
কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা যাবে না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে খেলোয়াড়রা আমাদের জানান। আমাদের একটা অ্যাপ্রুভাল প্রসিডিউর আছে। যদি বৈধ লাইসেন্স থাকে তাহলে তাদের অনুমতি দিই। আমাদের কিছু রেস্ট্রিকশনও আছে। অ্যালকোহল বা তামাক, এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ক্রিকেটাররা যুক্ত হতে পারবেন না। এর বাইরে যারা বৈধভাবে ব্যবসা করছেন তাদের সবার সঙ্গে পারবেন।’
আদৌ কি বিস্তারিত দেখা সম্ভব?
বিসিবির দাবি অনুযায়ী, যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার আগেই সব কাগজপত্র দেখে নেন তারা। বৈধ লাইসেন্স থাকলেই তাদের সঙ্গে চুক্তি করেন। তবে খুব বেশি বিস্তারিত দেখা যাবে কি না— এমন বাস্তবতা ভিন্ন। পিআর এজেন্সিগুলোই মূলত চুক্তির বিষয়গুলো দেখভাল করে।
তাদের পক্ষে এত বিস্তারিত দেখা সম্ভব না বলেই মনে করেন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় বিষয়গুলো পিআর এজেন্সিগুলো দেখভাল করে। যখন তারা এসব করে তখন ওই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কী নিয়ে ব্যবসা করছে, এটা নিয়ে আসলে এত বেশি বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়। কিছুটা হয়তো করা যায়। কিন্তু বিস্তর বিশ্লেষণ করা যায় না।’
ক্রিকেটারদের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে কথা হয় সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নন, যেকোনো ধরনের তারকাই যেকোনো কিছুর সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। ধরুন, রূপ-সচেতন বিষয়ে কোনো নায়িকা যুক্ত হন, সেখানেও ভালো বা খারাপ বিষয়টা থাকে। কিন্তু এসব ব্যাপারে ক্রিকেটারদের আরও সচেতন হওয়া দরকার।’
সময় এসেছে নতুন করে ভাবার, ভবিষ্যতে দায় নিতে হবে আরও বেশি
ক্রিকেটার কিংবা বোর্ড বলছে, তাদের কোনো দায় নেই। তবে বাস্তবতা আসলে ভিন্ন। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, এসপিসি কিংবা পাবজির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বারবার জড়িয়ে পড়ছেন ক্রিকেটাররা। এসব ক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের আরও সতর্ক হতে হবে বলে মনে করেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা।
পেশাদার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় এবার তেমন কোনো দায় দেখছেন না তারা। তবে ভবিষ্যতে আবারও একই রকম কাজে জড়িয়ে পড়লে আরও বেশি দায় নিতে হবে তাদের— এমনটি মনে করছেন ক্রিকেট বিশ্লেষক ও কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘কেউই আসলে চান না তার দ্বারা অন্য কারও ক্ষতি হোক। এসব কোম্পানি ওই উদ্দেশ্যেই (খারাপ) তাদের নিয়েছে। এরা যাতে বুঝতে না পারে সেটাও তারা নিশ্চিত করেছে। ওরা জানে ক্রিকেটাররা যদি আমাদের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়, তাহলে মানুষ আগ্রহী হবে। খারাপ নিয়ত নিয়েই তারা এটা করেছে, যেটা ক্রিকেটাররা বুঝতে পারেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন এটা উন্মুক্ত হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে যখনই কেউ করবে, নিশ্চয়ই পেশাদার পর্যায়ে চিন্তা করবে। এখন আর অজুহাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে আরও বেশি দায় নিতে হবে সেলিব্রেটিদের।’
হুটহাট ক্রিকেটারদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেটা বললাম, এখন দায় নিতেই হবে। আর কোনো উপায় নেই। এখন আমরা সবাই জানি কী জন্য তারা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর বানায়। সবাই যে এই উদ্দেশ্যে বানায়, এমন নয়। কে ভালো, কে খারাপ সেটা যাচাই করতে হবে। ভবিষ্যতে যদি আবার এমন হয় তাহলে দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।’
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্রিকেটাররা না বুঝে যুক্ত হন কি না— জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টকে গুণী এই কোচ বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা আগে খুব একটা ঘটেনি। যে কারণে এসব যাচাই করার ব্যাপারে সেই পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি এখনও আসেনি আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে। সুদূরপ্রসারী প্রভাব কী হতে পারে, সেটা নিয়েও ভাবেননি তারা। আমি নিশ্চিত এখন এই ঘটনার পর সবাই নিশ্চয়ই ভাববেন।’
সতর্ক হওয়ার পরামর্শ নাফীসের
জাতীয় দলের এক সময়ের তারকা ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীসের সঙ্গেও কথা হয় এ প্রসঙ্গে। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে ক্রিকেটারদের। তবে সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত বিষয়গুলোতে ক্রিকেটারদের দায় দেখছেন না বিসিবির এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়দের এনডোর্সমেন্ট-এর ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্ক হওয়া উচিত। কিন্তু তাদের কোনো দায় আমি দেখি না। বাংলাদেশে ক্রিকেট এখন অনেক বড় পণ্য। সবাই চায় ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হতে। যে মুহূর্তে স্ক্যামটা ধরা পড়েছে, ওই সময়ের পর থেকে কোনো ক্রিকেটারই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।’
‘নিজেও প্রস্তাব পেয়েছিলেন’ জানিয়ে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘যখন এই স্ক্যামগুলো চলছে, মানে কথা উঠেছে যে এগুলো লিগ্যাল কি না; আমাকে কিন্তু স্পন্সর করতে চেয়েছিল এমন একটি প্রতিষ্ঠান। আমি রাজি হইনি। আমি যেটা চিন্তা করেছি, যখন এটা নিয়ে কথা উঠছে, আমি যদি এটার সঙ্গে যুক্ত হই তাহলে আমার ওপর দায়টা আসবে।’
কাগজে-কলমে খুব একটা দায় নেই ক্রিকেটারদের। ব্যাপারটি যেমন সত্যি তেমনি অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কাগজের দায় না থাকলেও তাদের নৈতিক দায় আছে কি না। তবে শাহরিয়ার নাফীসের দাবি, ক্রিকেটাররা নৈতিকভাবে সঠিক অবস্থানেই আছেন।
ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘নৈতিক দায়ের কথা যদি বলেন, বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার কি সিগারেটের ব্র্যান্ডিং করেছেন? মদের ব্র্যান্ডিং করেছেন? কোনো অবৈধ জিনিসের ব্র্যান্ডিং কিন্তু করেন নাই। ইভ্যালি বা ই-অরেঞ্জ যাই হোক না কেন, যখন তারা যুক্ত হয়েছেন তখন কিন্তু আইনিভাবেও বৈধ ছিল তারা। কোন ব্যবসার মধ্যে কী চুরি আছে, সেটা তো আর দেখা সম্ভব নয়। খেলোয়াড়দের কোনো দায়ই আমি দেখি না।’
ক্রিকেটার কিংবা বোর্ড দায় নিতে না চাইলেও ভুক্তভোগীদের চোখে দায় আছে তাদের। মাঠের ক্রিকেট ছাপিয়ে বহুদিন ধরেই দেশের ক্রিকেটাররা সবক্ষেত্রে আদর্শ হয়ে উঠেছেন সবার কাছে। এখন তাদের সব বিষয়েই আরও সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার সময় এসেছে— মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এমএইচ/এটি