ব্রাজিলিয়ান কৌতিনিও হবেন বার্সেলোনার ‘নতুন মেসি’
লিওনেল মেসি নেই, বার্সেলোনার জন্য এখন এটাই সবচেয়ে বড় সত্য। তবে তার চলে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হচ্ছে গোল করায়, করানোতে। ফি মৌসুম কমপক্ষে ৪০টা গোল-অ্যাসিস্ট নেই হয়ে যাওয়া তো কম কিছু নয় আদৌ! এমন শূন্যতা ঢাকতে ব্রাজিলিয়ান ফেলিপে কৌতিনিওর দুয়ারেই যাচ্ছেন কোচ রোনাল্ড কোম্যান, দিতে চাইছেন শেষ সুযোগ। এমনটাই জানাচ্ছে স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো।
গেল মৌসুমে এই কৌতিনিও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আর লা লিগা মিলিয়ে খেলেছেন ১৪ ম্যাচ, গোল করেছেন তিনটি, করিয়েছেন আরও দুটি। এরপরই পড়েছেন চোটের কাটায়। চলতি দলবদলে বার্সেলোনা চাচ্ছিল তাদের ‘প্রয়োজনের তুলনায় ভারী’ বেতনের খাতা থেকে বেশ কিছু নাম মুছে ফেলতে। ব্রাজিলিয়ান এই নাম্বার টেনের বেতনটাও যে কম নয়, প্রতি মৌসুমে ২১ মিলিয়ন ইউরো!
সেজন্যে এই একদিন আগেও ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যমে গুঞ্জন চলছিল, তার সঙ্গে পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াংয়ের অদলবদলে নাকি আগ্রহ আছে বার্সেলোনার। কিন্তু গতকালই ইউরোপীয় দলবদল বিশেষজ্ঞ ফ্যাব্রিজিও রোমানো জানিয়েছেন, তার বদলে অবামেয়াংকে দলে পেতে আগ্রহ নেই বার্সার। সঙ্গে সঙ্গে থিতিয়ে গেছে সব ধরনের গুঞ্জন।
এবার স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, সেই কৌতিনিওকে মূল খেলোয়াড় বানিয়েই একটা শেষ পরীক্ষা চালাতে আগ্রহী বার্সার ডাচ কোচ কোম্যান। চোট কাটিয়ে ফিরলেও ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডার এখনো মাঠে নামেননি।
এদিকে মেসি চলে যাওয়ার পর থেকেই বার্সেলোনার দশ নম্বর জার্সিটা পড়ে আছে শূন্য। নিয়মের বেড়াজালে সেই জার্সিটাকে তুলে রাখারও উপায় নেই বার্সার। লা লিগার নিয়মানুযায়ী ২৫ জন খেলোয়াড়কে নিবন্ধন করতে পারে ক্লাবগুলো, যাদের জার্সি নম্বর হবে ১ থেকে ২৫ পর্যন্ত। যদি ১০ নম্বর জার্সিকে অবসর দিতেই হয়, তাহলে প্রতি মৌসুমে কেবল ২৪ জন খেলোয়াড়কে নিবন্ধন করতে দেবে লা লিগা, ছাড় মিলবে না এক্ষেত্রেও।
এদিকে মেসির ফেলে যাওয়া ১০ নম্বর জার্সি যাদের পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, তারাও ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ইতোমধ্যে। অ্যান্টোয়ান গ্রিজমান সেই ৭ নম্বর জার্সি পরে খেলেছেন, নতুন দলে আসা মেম্ফিস ডিপাই ৯, পেদ্রি গঞ্জালেসকে তার আগের ১৬ নম্বর জার্সিতেই দেখা গেছে। ফলে এখন জোর সম্ভাবনা কৌতিনিওকেই ১০ নম্বর জার্সিতে দেখার। মুন্দো দেপোর্তিভো জানাচ্ছে এমন কিছুই।
১০ নম্বর জার্সি পেলে দলের আক্রমণ শুরু করা, গোল করা আর যোগান দেওয়ার মূল দায়িত্বটাও যে তার ঘাড়েই বর্তাবে তা বলাই বাহুল্য। তবে মেসির শূন্যতাটা অবশ্য সম্মিলিতভাবে পুষিয়ে দেওয়ার আশাই ব্যক্ত করেছিলেন কোচ কোম্যান।
দিন কয়েক আগে ইএসপিএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘কাজটা যে একটা খেলোয়াড়কেই করতে হবে, বিষয়টা এমন নয় আদৌ। এখন বিষয়টা সবাই মিলে করতে হবে। কিছুটা ভাগ্যেরও প্রয়োজন আমাদের। চোট থেকে ফেরা আনসু ফাতি, ফেলিপে কৌতিনিওদের নিয়ে আমরা এখনো একটা শক্তিশালী দল।’
তবে কোচ যাই বলুন না কেন, মেসির ফেলে যাওয়া দশ নম্বর জার্সির ওজনটা যে অনেক বেশি। সঙ্গে থাকবে বোর্ড, সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপও। গুঞ্জনকে সত্যি প্রমাণ করে যদি সেই জার্সি অবশেষে পেয়েই যান কৌতিনিও, সেই চাপটা সামলে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন কিনা, সেটাই হবে দেখার বিষয়।
এনইউ/এটি