নেইমারের আরেক ভূবন
ওপার বাংলার জনপ্রিয় কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন-‘একলা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি/তোমার জন্য গলির কোণে.../ভাবি আমার মুখ দেখাব মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে।’
-বিশ্বায়নের এই যুগে এখন সব কিছুতেই বিজ্ঞাপন। সব কিছুরই বিজ্ঞাপন! স্পন্সরদের আবদারে সেই কাজটা তো করতেই হচ্ছে। এবার শখের বশে শুরু হয়েছে উল্কি উন্মাদনা। শংখ ঘোষের কবিতার প্যারোডি যেন-‘শরীর ঢেকে যায় উল্কিতে!’ ডেভিড বেকহ্যামই এ ‘ট্যাটু খেলা’য় মেতে উঠেছিলেন সবচেয়ে বেশি। ইংলিশ অধিনায়ক এখন সাবেকদের তালিকায়।
এ উল্কি উন্মাদনায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন ব্রাজিলের ফুটবলাররা। সেই খবর জানার আগে চলুন জেনে নেই ট্যাটু আসলে কী?
উল্কি হল দেহের মধ্যে আঁকা অমোচনীয় কালির জলছাপ। দেহের পরিবর্তন হলেও ট্যাটু থেকে যাবে তার জায়গা মতোই। এটা তুলতে হলে অস্ত্রোপচার টেবিলে শুতে হবে আপনাকে। আধুনিক ফ্যাশনের অংশ হয়ে যাওয়া এ উল্কির প্রচলনটা অবশ্য যিশু খ্রিস্টের জন্মের ছয় হাজার বছর আগে থেকে শুরু হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকানরাই এর জনক। পাশ্চাত্যের অনেক দেশেই বয়স ১৮-এর আগে ট্যাটু আঁকানো নিষেধ!
নেইমাররা অবশ্য ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পরই এ ফ্যাশনে মেতেছেন। ব্রাজিল দলের অনেকেরই শরীরের রোমকূপে আছে সেই অমোছনীয় কালির ছোঁয়া। দলের সেরা তারকা নেইমার একাধিক ট্যাটু আঁকিয়েছেন। ঘাড়ের পাশে, হাতে এমনকি বুকেও এ ফ্যাশন করিয়েছেন। ঘাড়ের পাশে লাতিন শব্দে লিখেছেন, ‘টুডো পাসা’। বাংলা করলে অর্থ দাঁড়ায়-‘কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়’। দার্শনিকের মতো কথা! মা আর ছেলে দু’জনই এ পৃথিবীতে নেইমারের প্রিয় মানুষ। ব্রাজিলের এই মহাতারকা তাদের নামটাও ট্যাটুতে লিখেছেন নিজের শরীরে।
সান্তোসের ট্যাটু শিল্পী আদাও রোসা এঁকেছেন সেসব উল্কি। তিনিই জানালেন কী করে এ ফ্যাশনের স্রোতে ভাসল পুরো ব্রাজিল। বলছিলেন, ‘আমি আসলে পুরো কৃতিত্ব দেব নেইমারকে। ও আইকন। তার ট্যাটু দেখে সবাই এ ফ্যাশনে ঝুঁকেছে। বিশ্বাস করুন, আমি দম ফেলার সময় পাই না। সারাদিন শুধু কাজ করে যাই। অথচ একসময় কাজের অপেক্ষায় বসে থাকতাম। আসলে নেইমার আমার জীবনটাই বদলে দিয়েছে। ওর জন্যই আজকের এই আমি!’ একই সঙ্গে জানালেন, সবাই এখন ঠিক নেইমারের মতোই ট্যাটু আঁকতে চায়।
আসলে শখ বলে কথা। শখের বশে না হয়, শরীরটা ডায়রি কিংবা শিল্পীর ক্যানভাস হয়ে উঠল! মন্দ কী।
এটি