ধোঁয়া কাণ্ডের চার মাস, ফেডারেশনের ঘুম ভাঙেনি

২২ নভেম্বর কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংস-মোহামেডানের মধ্যকার চ্যালেঞ্জ কাপের ম্যাচ হয়েছিল। বসুন্ধরা কিংস লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় হোম ভেন্যুতে ম্যাচটি খেলেছিল। কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে সমর্থকরা স্মোক ছুঁড়েছিল। এতে খেলা মিনিট দশেক বন্ধ ছিল। ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্টে এটি উল্লেখ থাকলেও চার মাস পেরিয়ে গেলেও ফেডারেশন কিংসের ওপর কোনো শৃঙ্খলামূলক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
ঘরোয়া ফুটবলে ধোঁয়া উড়িয়ে খেলা বিঘ্ন করার ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেনি। এমন ঘটনা ঘটার পর মোহামেডান ফেডারেশনে কড়া চিঠি দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি। তাই বেশ ক্ষুব্ধ ক্লাবটির ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, ‘এ রকম একটি ঘটনার শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত এখনো দিতে পারেনি ফেডারেশন। এটা খুবই দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। গতকালও বিষয়টি ফেডারেশনের সভাপতিকে অবহিত করেছি।’
খেলার সঙ্গে শৃঙ্খলার সম্পর্ক অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। লিগ, টুর্নামেন্ট চলছে পুরোদমে। অথচ ফেডারেশন এখনো নাকি ডিসিপ্লিনারী কমিটিই করতে পারেনি পুরোপুরি। সংশ্লিষ্ট ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে জানা গেছে, ডিসিপ্লিনারী কমিটির চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন পূর্নাঙ্গ কমিটি তালিকা পাননি। কোনো ফাইল তার কাছে যায়নি এমনকি কোনো সভাও হয়নি। এখন পর্যন্ত লিগের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি বাফুফে থেকে পাওয়া যায়নি। বিগত বছরগুলোতে বাফুফে লিগের শৃঙ্খলা ভঙের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করত।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম দুই জনই ফুটবলে গতিশীলতা ও নতুনত্বের বুলি আওড়ান ৷ বাস্তবিক অর্থে ফেডারেশনের সাংগঠনিক কাঠামোই রুপ দিতে পারেনি নতুন কমিটি নির্বাচিত হওয়ার পাঁচ মাস পরেও। ডিসিপ্লিনারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ কমিটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হয়নি এবং একটা বিশেষ ঘটনার ব্যবস্থা পাচ মাসেও নেয়নি এতেই স্পষ্ট কর্তাদের বুলির সঙ্গে বাস্তবতার কত ফারাক।
নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তারা তাদের ব্যক্তিগত, ব্যবসায়ীক ও রাজনৈতিক অনেক ব্যস্ততায় থাকেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক প্রশাসনিক প্রধান। তিনি ফুটবল ফেডারেশনের দৈনন্দিন সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ফুটবলের স্বার্থে কোনো কাজগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন সেগুলো সমাধানের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সাধারণ সম্পাদকের মনোযোগ ও কাজের বড় অংশ জুড়ে শুধু ফিন্যান্স আর কমপ্ল্যায়েন্স। অন্যদিকে তার তেমন কোনো নজর নেই। নীতি-নির্ধারণী তে নয়-ই সাধারণ দাপ্তরিক বিষয়াদি নিয়েও গণমাধ্যমে মন্তব্য করতে জড়তায় থাকেন ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী।
পরশু দিন কিংস অ্যারেনায় লিগের ফিরতি লেগে কিংস-মোহামেডান মুখোমুখি হবে। তাই কিংস অ্যারেনার শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে আবার প্রশ্ন জেগেছে। সাধারণ সম্পাদক বরাবর আগের ঘটনায় চিঠি দিয়ে কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় এবার সভাপতিকে চিঠি দিয়েছিল মোহামেডান। সেই চিঠির উত্তরে খানিকটা আশ্বস্ত সাদা কালো দলের ম্যানেজার, ‘সভাপতি চিঠির আনুষ্ঠানিক উত্তরে শৃঙ্খলা বিষয়টি আশ্বস্ত করেছেন। পাশাপাশি মৌখিকভাবেও বলেছেন বিষয়টি ফেডারেশন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ফুটবলের স্বার্থে আমরা কিংস অ্যারেনায় খেলতে যাচ্ছি শনিবার।’
এজেড/এফআই