ডর্টমুন্ডকে গুঁড়িয়ে দিয়ে সেমিতে এক পা বার্সেলোনার

বার্সেলোনা ৪ : ০ বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড
এক ঝলক দেখলে হঠাৎ করেই মনে হতে পারে, এ বুঝি বার্সেলোনার সোনালি দিনের প্রতিচ্ছবি। প্রতিপক্ষ যেইই হোক, বার্সেলোনা ভয় পাচ্ছে না। বরং মাঠে নামলেই ক্ষুধার্ত দলটার সামনে অসহায় বিপক্ষ দলের ট্যাকটিক্স। ২০২৫ সালের বার্সেলোনা ঠিক এতটাই ভয়ানক। চলতি বছরের ২৩ ম্যাচে কোনো ম্যাচেই তারা হারেনি।
বার্সেলোনার এমন দুর্ধর্ষ ফর্মের নতুন শিকার বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। জার্মানির ক্লাবটিকে নিজেদের ঘরের মাঠে রীতিমত দুমড়েমুচড়ে দিয়েছে কাতালুনিয়ার ক্লাবটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বার্সা জয় পেয়েছে ৪-০ গোলের বড় ব্যবধানে। এমন জয়ের পর সিগন্যাল ইদুনা পার্কে দ্বিতীয় লেগের ৯০ মিনিটের খেলার আগেই সেমির বাতাস পাচ্ছে ব্লু-গ্রানারা।
এই জয়ের পর এক ক্যালেন্ডার বছরে টানা অপরাজিত থাকার নতুন রেকর্ড করেছে বার্সেলোনা। ২০১৬ সালে লুইস এনরিকের অধীনে ২২ ম্যাচ অপরাজিত ছিল বার্সা। জার্মান কোচ হ্যান্সি ফ্লিক এবারে সেটাকে নিয়ে গেলেন ২৩ ম্যাচে।
আরও পড়ুন
গেল আসরের রানারআপ বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ওপর এদিন অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধেই বেশি চড়াও হয়েছে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের জালে এক গোল পুরলেও দ্বিতীয়ার্ধে পুরেছে তিন গোল। স্কোরশিটে দুইবার নাম তুলেছেন ডর্টমুন্ডেরই সাবেক তারকা রবার্ট লেভানডফস্কি। আর একটা করে গোল লামিনে ইয়ামাল এবং রাফিনিয়ার। আক্রমণের তিন তারকাই যেন দায়িত্ব নিয়ে বার্সেলোনাকে এনে দিয়েছেন দারুণ এই জয়।
অবশ্য প্রথমার্ধেই বার্সেলোনা পেতে পারতো চার গোলের দেখা । শুরুর ১০ মিনিটের মাঝেই ডর্টমুন্ডের কোবেল দুইবার বার্সেলোনার আক্রমণ ফিরিয়ে দেন। প্রথমে ইয়ামাল আর পরে লেভানডফস্কিকে হতাশ করেন সুইস এই গোলরক্ষক। শুরুর এই চাপটাই বার্সেলোনা ধরে রেখেছিল অনেকটা সময় ধরে। আর সেটার ফল আসে ২৫ মিনিটে।
ফ্রি কিকে ইনিগো মার্তিনেসের হেডে বল পেয়ে যান পাউ কুবার্সি। তার শটই জালে যাচ্ছিল। উদযাপনও করেছিলেন তিনি। তবে রিপ্লেতে দেখা যায়, গোললাইন পার করার সময়ে তাতে পা লাগিয়েছিলেন রাফিনিয়া। টুর্নামেন্টে রাফিনিয়া আদায় করে নেন নিজের ১২তম গোল।
গোল খেয়ে কিছুটা আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল ডর্টমুন্ড। খুব বড় সুযোগ না হলেও ম্যাচের প্রথমার্ধে অন্তত দুই গোল পাওয়ার মতো অবস্থায় ছিল জার্মান ক্লাবটি। দুই পক্ষের কেউই গোল না পেলে ১-০ ব্যবধান ধরে রেখেই টানেলে ফেরে দুই দল।
বিরতির পর তিন মিনিটের মাথায় নিজেদের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেয় বার্সা। এই গোলে অবদান ছিল বার্সার আক্রমণ ত্রয়ীর প্রত্যেকেরই। ইয়ামালের ক্রস খুঁজে নেয় রাফিনিয়াকে। তার হেড লক্ষ্যে না থেকে চলে যায় লেভানডফস্কির কাছে। পোলিশ স্ট্রাইকার সহজেই বল জড়ান জালে। ৬৬ মিনিটে ফের গোল করেন লেভা।
৭৭তম মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করে নেয় বার্সেলোনা। রাফিনিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে পোস্ট ঘেঁষে ঠিকানা খুঁজে নেন ইয়ামাল। এই গোলের পরেই তিন তারকাকেই উঠিয়ে নেন কোচ হ্যান্সি ফ্লিক। বার্সেলোনাও খুব জোরালো কোনো আক্রমণ করতে পারেনি শেষে এসে। ৪-০ গোলের জয়েই মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
আগামী ১৫ এপ্রিল ডর্টমুন্ডের মাঠে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল।
জেএ