ট্যাকটিক্স নয়, খেলোয়াড়দেরই কৃতিত্ব দিলেন মারুফুল

বাংলাদেশের ফুটবলে অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক। কোচিং শিক্ষা ও মাঠের ফলাফলে নিজেকে প্রমাণ করেছেন অসংখ্যবার। এবার বিদেশিহীন আবাহনীর কোচ হয়ে নিয়েছিলেন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। আজ (মঙ্গলবার) ফেডারেশন কাপের কোয়ালিফায়ারে ১০ জন নিয়েও শক্তিশালী বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে ফাইনালে তুলেছেন আবাহনীকে।
একজন কম নিয়ে খেলা ফুটবলে বেশ কঠিন। সেই কঠিন কাজ করেই আবাহনীকে জিতিয়ে এনেছেন মারুফ। ১০ জন নিয়ে খেলায় কোচের কৌশল বারবার পরিবর্তন করতে হলেও ম্যাচ জয়ের কৃতিত্ব দিচ্ছেন খেলোয়াড়দেরই, ‘ট্যাকটিক্স নয়, ম্যাচ জয়ের কৃতিত্ব খেলোয়াড়দেরই। কোচ যত ট্যাকটিক্সই করুক, খেলোয়াড়রা যদি সেটা বাস্তবায়ন না করতে পারে তার সফলতা নেই। খেলোয়াড়রা ঠিকমতো খেলতে পেরেছে এজন্যই জয় পেয়েছি।’
ম্যাচের ৪২ মিনিটে ডিফেন্ডার আসাদুজ্জামান বাবলু দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। পরে ৫৭ মিনিটে মজিবর রহমান জনির গোলে পিছিয়ে পড়ে আবাহনী। আবার ৮৪ মিনিটে আকাশের গোলে সমতা আসায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তিন মুহূর্তে তিনবার কৌশল পরিবর্তন নিয়ে মারুফ বলেন, ‘দশ জন হওয়ার পর মিডফিল্ড কমিয়ে ডিফেন্স ঠিক রাখলাম। এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পর থ্রি-ব্যাক করেছি। সমতা ফিরে আসার পর ফোর ব্যাকে গিয়েছি। দশ জন হওয়ার আগে আমরা আক্রমণাত্মক মুডে ছিলাম, এরপর লো ব্লক লো ডিফেন্ডিংয়ে যেতে হয়েছে।’

আবাহনী প্রথম লেগ খেলেছে বিদেশি ফুটবলার ছাড়াই। দ্বিতীয় লেগে দুইজন বিদেশি যুক্ত হয়েছে। দুই বিদেশি নিয়ে কোচের মূল্যায়ন, ‘আগে আমরা গোলের সুযোগ কম তৈরি করতে পারতাম এবং ম্যাচে নিয়ন্ত্রণও ছিল কম। আজ দুই বিদেশি যোগ দেওয়ায় এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছি। এই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট অবশ্যই রাফায়েলের ফ্রি-কিক। যেখান থেকে গোল পেয়েছি।’ জাতীয় দলে এখন এক নম্বর গোলরক্ষক মিতুল মারমা। এবারের মৌসুমে প্রায় এক হাজার মিনিট তিনি ক্লিনশিট রেখেছিলেন। আজ কিংসের গোলের পেছনে মিতুলের কিছুটা ভুল দেখছেন মারুফ, ‘ডিফেন্সের জনিকে ট্র্যাক করা প্রয়োজন ছিল। মিতুল কিছু স্টেপ আগে থাকলে এটা প্রতিহত করতে পারত।’
ঘরোয়া ফুটবলে চিরাচরিত দ্বৈরথ আবাহনী-মোহামেডান অবশ্য গত অর্ধ যুগে শুধুই কাগজে-কলমে। বাস্তবিকভাবে সেই লড়াই এখন কিংস-আবাহনীর মধ্যে। আবাহনী বিগত কয়েক বছর কিংসকে হারাতে পারেনি তুলনামূলক শক্তিশালী দল নিয়েও। এবার মারুফের অধীনে দুই বারই কিংসকে হারাল আবাহনী। এ নিয়ে কোচের প্রতিক্রিয়া, ‘এই ম্যাচ নিয়ে বেশি মনোযোগ থাকে। ভিডিও অ্যানালাইসিস, হোম ওয়ার্ক বেশি হয়।’
আজকের ম্যাচে রেফারি সাইমুন সানি ১০টি হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন। আবাহনীর একজন দুই হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেও রেফারিং নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই আবাহনী কোচের। ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহে আবাহনী ফাইনাল খেলবে। মারুফ অবশ্য নিজ জেলায় কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি স্পর্শ করার আশা করছেন, ‘ময়মনসিংহে খেলোয়াড় হিসেবে আমার শিরোপা রয়েছে। কোচ হিসেবে যেন প্রথম শিরোপা পাই এজন্য সবার দোয়া প্রার্থী।’
এজেড/এএইচএস