৭২/৭ থেকে ২০৮/১০, ওয়ানডে সিরিজও হারল ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান

১, ৩, ১, ৫, ৯— দেখতে ফোন নম্বরের ডিজিট মনে হলেও, এটি মূলত পাকিস্তানের টপ অর্ডার ব্যাটারদের রান! নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প ছিল না মোহাম্মদ রিজওয়ানের দলের সামনে। ২৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়েছিল তারা। এরপর ৭২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে নিজেদের হারের এপিটাফটাও লিখছিল নিখুঁতভাবে। তবে শেষটা ঠিক শুরুর মতো হয়নি, সপ্তম ও একাদশ ব্যাটারের ফিফটিতে তারা হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
হ্যামিল্টনে ৭৮ রানের হারে মূলত সিরিজটাই হাতছাড়া করেছে সফরকারী পাকিস্তান। এর আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও তারা অল্পের জন্য হোয়াইটওয়াশ এড়ায়। অথচ আইপিএলের কারণে এই সিরিজে খেলছেন কিউইদের বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার। প্রথমবার অধিনায়কত্ব করতে নেমে মাইকেল ব্রেসওয়েলও পাকিস্তানকে টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডেতেও সিরিজ হারানোর স্মরণীয় উপলক্ষ্য পেল।
পাকিস্তানকে মূলত বড় ব্যবধানে হার থেকে বাঁচিয়েছেন ফাহিম আশরাফ ও নাসিম শাহ। টেল-এন্ডারে নামা দুজনেই ওয়ানডেতে প্রথম অর্ধশতক পেয়েছেন। ‘মেন ইন গ্রিন’ জার্সিধারীদের এমন আনপ্রেডিক্টেবল আচরণের সঙ্গে অবশ্য ক্রিকেটবিশ্ব আগে থেকেই পরিচিত। ফাহিমের ৭৩ ও নাসিমের ৫১ রানের পরও অবশ্য পাকিস্তান ৪১.২ ওভারেই ২০৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। কিউইদের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথমবার ফাইফার (৫ উইকেট) পেয়েছেন পেসার বেন সিয়ার্স।
বিজ্ঞাপন
এর আগে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯২ রান সংগ্রহ করে। তাদের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা মিচেল হেই অপরাজিত থেকে ক্রিজ ছাড়েন ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের ষষ্ঠ ওয়ানডে খেলতে নেমে ৭৮ বলে তিনি ৯৯ রান করেছেন। এ ছাড়া মুহাম্মদ আব্বাস ৪১ ও নিক কেলি করেন ৩১ রান। পাকিস্তানের ওয়াসিম জুনিয়র ও সুফিয়ান মুকিম ২টি করে উইকেট শিকার করেছেন।
বিজ্ঞাপন
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য কিইউ টপ অর্ডাররা ক্রিজে থিতু হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। পঞ্চম উইকেট পর্যন্ত প্রত্যেকেই রান পেলেও জুটি বড় করতে ব্যর্থ। ষষ্ঠ উইকেটে ৭৭ রানের জুটিই মূলত তাদের বড় পুঁজির ভিত গড়ে দেয়। পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত ও সাবেক ক্রিকেটারের সন্তান আব্বাস ৪১ রানে আউট হলে ভাঙে সেই জুটি। যদিও দলের হাল ধরতে গিয়ে তার ইনিংস ছিল ধীরগতির। ৬৬ বলের ইনিংসে মাত্র ৩টি চার হাঁকান আব্বাস। এ ছাড়া শেষ পর্যন্ত অপরাজিত মিচেল হেই ছিলেন তার বিপরীত। ৭৮ বলে ৭টি করে চার-ছক্কায় করেন ৯৯ রান। যা হতে পারত তার প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। তবে এটাই তার প্রথম ফিফটি।
অন্যদিকে, ব্যাট হাতে পুরোদমে ব্যর্থ পাকিস্তানের বাবর আজম (১), রিজওয়ান (৫), ইমাম-উল-হক (৩), আব্দুল্লাহ শফিক (১) ও সালমান আলি আগার (৯) মতো টপ অর্ডাররা। অর্থাৎ, ছয় নম্বরে নামা তৈয়ব তাহিরই (১৩) প্রথম দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। এই অবস্থায় বড় হারই অবধারিত ছিল পাকিস্তানের। ফাহিম ও নাসিম শাহ মিলে সেই ধ্বংসস্তূপ সামলেছেন। এই মুহূর্তে ৫ এপ্রিল হতে যাওয়া তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে হবে পাকিস্তানের হোয়াটওয়াশ এড়ানোর বড় লক্ষ্য!
এএইচএস