কোচের মন্তব্যে বিদ্রোহীদের ‘ইউটার্ন’, আমিরাত সফরে নেই ম্যানেজার!

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার অনবরত গণমাধ্যমে মন্তব্য করেই যাচ্ছেন। বিদ্রোহী ফুটবলাররা নমনীয় হয়ে অনুশীলনে ফেরার চিন্তা করলেও তারা আবার বেঁকে বসতে যাচ্ছেন কোচের সেসব মন্তব্যের কারণে!
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় দলের এক সিনিয়র খেলোয়াড় বলেন, ‘ফেডারেশনের বারবার অনুরোধে আমরা খানিকটা নমনীয় হয়ে ভাবছিলাম। আরব আমিরাত থেকে দল ফেরত আসার পর কোচ–ফেডারেশন সবাই মিলে আমরা একটা সমাধানের দিকে যাব। আমরা যখন এরকম ভাবছি, তখন কোচ সমাধানের আগেই আমাদের কয়েকজনকে নেবে না, বাদ দিয়ে দেবে বলে মন্তব্য করেই যাচ্ছে। এভাবে হলে তো আর ফেরা যায় না।’
ব্রিটিশ কোচ পেশাদারত্ব ও শৃঙ্খলার কথা বললেও ফুটবলারদের দৃষ্টিতে বাটলার বড়ই অপেশাদার ও নিজেই শৃঙ্খলা ভাঙছেন। জাতীয় নারী দলের একাধিক ফুটবলারের মতে, ‘আমরা ফেডারেশনের সঙ্গে এখনও চুক্তি করিনি। ফ্রি থাকলেও কোনও মন্তব্য করিনি ফেডারেশন নিয়ে। যা বলার বিশেষ কমিটিকে বলেছি, অথচ কোচ আমাদের থাকা-খাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছে। কোন কোন খেলোয়াড় নেবে প্রতিদিনই মিডিয়ায় বলে বেড়াচ্ছে। এটা কোন শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে?’
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
১৮ জন ফুটবলার বিদ্রোহ করলেও কোচ চার-পাঁচ জনের ওপর বেশি নাখোশ ছিলেন। তার দৃষ্টিতে এই আন্দোলনের নেপথ্যে সেই পাঁচজনই মূলত। সেই সংখ্যা এখন বেড়ে আটে দাঁড়িয়েছে। তাই এক ফুটবলারের ক্ষোভ, ‘ক্রমেই তার এই সংখ্যা বাড়ছে, এতে স্পষ্ট তিনি আমাদের কোনোভাবেই নিতে চান না। আমিও ব্যক্তিগতভাবে তিনি থাকলে খেলতে চাই না। কারণ তিনি আমাদের আসলে ভালোভাবে গ্রহণ করবেন না, এটা তো স্পষ্টই।’
বিজ্ঞাপন
বাফুফে মেয়েদের শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়টি বারবার বলছে। অথচ কোচ নেপালের কাঠমান্ডু থেকে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার ও মন্তব্য করেই আসছে, এটি যেন ফেডারেশনের চোখেই পড়ছে না। বিশেষ কমিটির তদন্ত চলাকালে কোচ মন্তব্য করেছেন, আবার যখন ফেডারেশন মেয়েদের অনুশীলনে ফেরানোর জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করছে, ঠিক সেই সময়ে আবারও কয়েকজন খেলোয়াড়কে না নেওয়ার মন্তব্য করে বিষয়টি পুনরায় উসকে দিয়েছেন কোচ। বাটলারের ওপর ফেডারেশনের যেন নিয়ন্ত্রণ নেই অথবা ফেডারেশনের কাছে শৃঙ্খলার সংজ্ঞা যেন ভিন্ন।
২৪ ফেব্রুয়ারি বাটলার জুনিয়র ফুটবলারদের নিয়েই আরব আমিরাতে রওনা হবেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চ দু’টি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। বাফুফে এখনও সেই স্কোয়াড ঘোষণা করেনি। তবে বিদেশ সফরের আগে সরকারি আদেশ/অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। আজ আরব আমিরাত সফরের জন্য বাফুফের প্রেরিত তালিকার ভিত্তিতে কোচিং স্টাফ-খেলোয়াড়সহ ৩৩ জনের তালিকা সরকারের অনুমতি পেয়েছে। বিদেশে ফুটবল দলের ম্যানেজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ। ৩৩ জনের মধ্যে বাফুফে কোনও ম্যানেজার রাখেনি।
সরকারি আদেশে নাম থাকা আরব আমিরাত সফরের ফুটবলাররা হলেন– আফিদা খন্দকার, ইয়ারজান, মিলি আক্তার, শাহেদা আক্তার রিপা, মুনকি আক্তার,স্বপ্না রাণী, কোহাতি কিসকু, আইরিন খাতুন, অর্পিতা বিশ্বাস, সুরভী আকন্দ প্রীতি, আলমিনা, ঐশী খাতুন, সুলতানা, তনিমা বিশ্বাস, মেঘলা রাণী, মারিয়াম বিনতে হান্না, কানম আক্তার, আকলিমা খাতুন, বন্যা খাতুন, সুরমা জান্নাত, হালিমা আক্তার, অয়ন্ত বালা, উমহেলা মারমা, জয়ন্ত বিবি রিতা ও নাবরিন খাতুন। কোচের আস্থাভাজন ও এদের মধ্যে তুলনামূলক ভালো পারফর্মার হওয়ায় ডিফেন্ডার আফিদা খাতুনের হাতে আর্মব্যান্ড ওঠার সম্ভাবনাই বেশি।
এজেড/এএইচএস