ত্রিশ বছরে ক্রীড়াঙ্গন একই জায়গায় : সাবেক দ্রুততম মানব বিমল

দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে বাংলাদেশের দ্রুততম মানবের সর্বশেষ খ্যাতি ১৯৯৩ সালে। ১৯ বছরের যুবক বিমল চন্দ্র তরফদার ১০.৬১ সেকেন্ড টাইমিং দৌড়িয়ে স্বর্ণ জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব বছর তিনেক পর ১৯৯৬ আটলান্টা অলিম্পিক গেমসে খেলতে গিয়ে আর দেশে ফেরেননি।
দ্রুততম মানবের অলিম্পিক খেলে দেশে না আসা, ক্রীড়াঙ্গনে মেধা পাচার, বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্স ও সামগ্রিক ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে সুদূর নিউইয়র্ক থেকে মুঠোফোনে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ঢাকা পোস্টের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার আরাফাত জোবায়েরকে।
ঢাকা পোস্ট : দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব বিমল চন্দ্র তরফদার। এত বড় অর্জনের পরেও ক্রীড়াঙ্গনে হারিয়ে যাওয়া এক নাম। ভাবতে একটু খারাপ লাগে না?
বিমল: আমি এ নিয়ে অনুতপ্ত নই। আমি নিজেই প্রবাস জীবন বেছে নিয়েছি ক্রীড়াঙ্গন থেকে দূরে সরেছি। এই নিভৃতযাপনে আলোচনায় থাকব না স্বাভাবিক। এ নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। তবে মানুষ হিসেবে অতীত কখনো ভোলার নয় দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব হয়েছিলাম এটা অবশ্যই আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত।

ঢাকা পোস্ট : অলিম্পিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর। সেই আসরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব দেশে না ফিরে সেখানেই রয়ে গেল। এ নিয়ে অনেক সমালোচনা বা হৈ চৈ হয়েছিল না সেই সময়
বিমল: আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। আমার ইভেন্ট শেষ করেছি। এরপর সিদ্ধান্ত নেই এখানে থেকে যাওয়ার। প্রথমে নিজে সিদ্ধান্ত নেই এরপর পরিবারকে জানাই। দেশে না ফেরায় কিছুটা তো আলোচনা হয়েছিলই।
ঢাকা পোস্ট : আপনার বয়স তখন মাত্র ২২-২৩ বছর ছিল। সেই বয়সেই কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন?
বিমল: বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলাম আবার খেলছি। নিজের একটা খরচ রয়েছে। সেই খরচ যদি নিজ থেকে নির্বাহ করতে না পারি এবং পরিবার থেকেই চলতে হয় তাহলে আর খেলাধুলা করে লাভ কি। খেলাধুলা করলেও আগামীতে একটা মানসম্মত জীবনের নিশ্চয়তা পাওয়া নিশ্চিত নয়। এত অনিশ্চয়তা নিয়ে তো আসলে জীবন চলা কঠিন।
খেলাধুলায় আমি যতটুকু পথ এগিয়েছিলাম এর প্রায় পুরোটা কৃতিত্ব বিকেএসপির। বিকেএসপি ছাড়ার পর আরও ২ বছর আমি সেখানে থাকার ও অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছি। মাত্র ক’দিন আগে মারা গেলেন খালেক ভাই (বিকেএসপির চীফ অ্যাথলেটিক্স কোচ) নিয়মিত ছাত্রদের পাশাপাশি আমাকে বিশেষ সময় দিয়েছেন। সুফিয়া আপা (সাবেক কোচ) অনেক স্নেহ করেছেন। সেই সময়ের মহাপরিচালকও আমাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন।
ঢাকা পোস্ট : অ্যাথলেটিক্সে অধিকাংশ খেলোয়াড় সার্ভিসেস সংস্থায় যুক্ত ছিল। আপনি দ্রুততম মানব হওয়া সত্ত্বেও কেন কোনো সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হননি?
বিমল: একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। সেই সংস্থা আমাকে যোগ্য মনে করেনি তাই নেয়নি। এর বেশি কিছু বলার নেই।
ঢাকা পোস্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানে পড়াশোনা করছিলেন। খেলাধুলায় আর্থিক নিশ্চয়তা না থাকলেও মনোবিজ্ঞানী বা মনোবিদ হওয়ার একটা সুযোগও ছিল। সেই দিকটা কি ভেবেছিলেন?
বিমল: মনোবিদ হওয়ার একটা বিকল্প ছিল যদিও সেটা তখন খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখিনি। এর চেয়ে প্রবাস জীবনই বেশি সম্ভাবনাময় মনে হয়েছে। এজন্য সেটাই বেছে নিয়েছিলাম। তবে এটাও ঠিক মনোবিদ হওয়ার সুযোগ ছিল। মনোবিজ্ঞানে ভর্তি হওয়ার পেছনে ফারুক ভাইয়ের (ফেডারেশনের কর্মকর্তা ও বিকেএসপির পরিচালক) একটা প্রভাব ছিল।
ঢাকা পোস্ট : তিন দশক আগে থেকে ক্রীড়াঙ্গনে পলায়ন সংস্কৃতি বা মেধা পাচার শুরু হয়েছে। এখনো চলছে। এটা কেমন লাগে আপনার কাছে?
বিমল: খুবই খারাপ লাগে। কারণ এতদিন পরও বিষয়গুলো পরিবর্তন হয়নি যা খুবই দুঃখজনক। এই সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে ভালো ক্রীড়াবিদ আসবে না। এখনও যখন দেখি এ রকম হচ্ছে এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না। মানুষ কখনোই খুব ইচ্ছায় দেশ ছাড়তে চায় না। আর যারা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে তারা তো আরও না। ফলে যারা ছাড়ে তারাই বোঝে এর কষ্ট কেমন।
ফুটবলার ও ক্রিকেটাররাতো খেলা চলাবস্থায় এভাবে দেশ ছাড়ে না কারণ তাদের আর্থিক নিশ্চয়তা ও সামাজিক মর্যাদা আছে। অন্য খেলায় সেটা নেই। একজন ক্রীড়াবিদ যদি সাপোর্ট না পায় তাহলে কিভাবে থাকবে? ত্রিশ বছর আগে আমি এসেছি। এখনও অনেকে খেলার টপ ফর্মে থেকে আসতে বাধ্য হচ্ছে কারণ একটাই সাপোর্টের অভাব। ত্রিশ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড়দের (ক্রিকেট ও ফুটবলের বাইরে) আর্থিক অবস্থা, ভবিষ্যত নিশ্চয়তা তো সেখানেই আছে। নাহলে এখনো খেলোয়াড়রা খেলা চলাবস্থায় দেশ ছাড়ার চিন্তা করতে হয় কেন?
ঢাকা পোস্ট : খেলোয়াড় থাকাবস্থায় খেলা ছেড়ে অন্য দেশে স্থায়ী হওয়ার চেষ্টাকে অনেকে দেশপ্রেমের অভাব হিসেবেও দেখেন। আপনার দৃষ্টিতে কি?
বিমল: একজন খেলোয়াড় দেশের জন্য লড়ে পদক আনছে। এরপরও যখন দেখবে নিজের জীবিকা ও জীবনের গতি অনিশ্চিত তখন সে কি করবে? রাষ্ট্রের অবশ্যই উচিত ক্রীড়া সম্পদ দেশে ধরে রাখার ব্যবস্থা করা। দুঃখজনক হলেও বাস্তব সত্য রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক এমনকি ক্রীড়াঙ্গনের কর্মকর্তারাও এটা নিয়ে তেমন ভাবেন না। এ রকম প্রসঙ্গ আসলে খেলোয়াড়দের দেশপ্রেমকে উল্টো প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়।
ফুটবলার ও ক্রিকেটাররাতো খেলা চলাবস্থায় এভাবে দেশ ছাড়ে না কারণ তাদের আর্থিক নিশ্চয়তা ও সামাজিক মর্যাদা আছে। অন্য খেলায় সেটা নেই। একজন ক্রীড়াবিদ যদি সাপোর্ট না পায় তাহলে কিভাবে থাকবে? ত্রিশ বছর আগে আমি এসেছি। এখনও অনেকে খেলার টপ ফর্মে থেকে আসতে বাধ্য হচ্ছে কারণ একটাই সাপোর্টের অভাব। ত্রিশ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড়দের (ক্রিকেট ও ফুটবলের বাইরে) আর্থিক অবস্থা, ভবিষ্যত নিশ্চয়তা তো সেখানেই আছে।
ঢাকা পোস্ট : সত্তর আশির দশকে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। যদিও ৯৫ সালের আগ পর্যন্ত ফুটবলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য ছিল না। তত দিনে শুটিংয়ে কমনওয়েলথে স্বর্ণ, আপনি দক্ষিণ এশিয়ায় একবার সেরা , শাহ আলম দু’বার দ্রুততম মানব। দাবায় নিয়াজ মোর্শেদ উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার। ফুটবল, ক্রিকেটের বাইরে অন্য খেলাগুলো সাফল্যের পরেও ধুকছে কেন?
বিমল : সহজ বিষয় অন্য খেলা নিয়ে সেভাবে কেউ ভাবে না। ফেডারেশন, মন্ত্রণালয়, সরকার সবার ভাবনাই ফুটবল, ক্রিকেট কেন্দ্রিক। অন্য খেলার জগত যে এত প্রসারিত এবং সম্ভাবনাময় ও সাফল্যও আসছে সেটা বরাবরই উপেক্ষিত। ভাবনা বা কাজ করার জায়গা প্রথমে ফেডারেশনের। ফেডারেশনগুলোতে যারা থাকেন তারা এই সকল খেলার একটি জাতীয় চ্যাম্পিয়শীপ,জুনিয়র আয়োজন করেই সন্তুষ্ট। আর নিয়মমাফিক দুয়েকটি আন্তর্জাতিক খেলায় পাঠিয়েই দায়িত্ব শেষ। ফুটবল বৈশ্বিক খেলা হলেও বাংলাদেশের গণ্ডি মূলত। সেটাও নিচের দিকে আর ক্রিকেট তো সব মিলিয়ে খেলেই কয়েকটা দেশ। ব্যক্তিগত ইভেন্টে সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের বৈশ্বিক পর্যায়ে কিছু করার সামর্থ্য আছে কিন্তু সেটা কখনোই ভাবে না।
ঢাকা পোস্ট : অ্যাথলেটিক্সের একাল-সেকাল নিয়ে কি বলবেন?
বিমল: ১৯৯৩ সালে ১০.৬১ সেকেন্ড টাইমিংয়ে আমি দৌড়িয়েছি। এখনকার বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা সেটাই করছেন (ইমরান বাদে অন্যরা)। ত্রিশ বছরেও টাইমিংয়ের উন্নতি তেমন হয়নি। দীর্ঘদিন জাতীয় খেলা হ্যান্ডটাইমিংয়ে হয়েছে। এভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য আসা করা উচিতও না।
শিরিন এক টানা চ্যাম্পিয়ন হয়েই যাচ্ছে। এর অর্থ তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কেউ আসেনি ৷ অ্যাথলেটিক্সের মূল ভিত্তি স্কুল ক্রীড়া। আন্তঃস্কুল অ্যাথলেটিক্স নেই হয়তো থাকলেও নামকাওয়াস্তে। খেলা না হলে খেলোয়াড় আসবে না। আবার খেলোয়াড়দের অনেক ক্ষেত্রে নিজের খেয়ে বনের মহিষ তাড়ানোর মতো অবস্থা হয়।
ঢাকা পোস্ট : আপনার যে পারফরম্যান্স ছিল সেটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও ভালো করার সুযোগ ছিল নিশ্চয়ই
বিমল: আমাকে কলকাতার একটা চিকিৎসকের কাছে নিয়েছিল একটি টেস্টের জন্য। সেই টেস্টে আমার সক্ষমতা সম্পর্কে বলেছিল ৬০ মিটার পর্যন্ত আমার যে গতি সেটা বিশ্ব ইনডোর মানের। এটা তখনকার সময় কর্মকর্তারাও জানে কিন্তু কখনো ইনডোরে আমাকে পাঠায়নি।
ঢাকা পোস্ট : অথচ বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্সে এশিয়ান পর্যায়ে প্রথম স্বর্ণ এসেছে ইনডোর থেকেই। ২০২৩ সালে ইমরানুর রহমান এই পদক জেতেন। এতে আপনার সেই সময়ের কথা আরও স্মরণ হয়নি।
বিমল: বিশ্ব ইনডোরে আমারও কিছু করার সামর্থ্য ছিল কিন্তু সেই সুযোগ পাইনি। দুই যুগ পর হলেও আমার দেশের কেউ একজন পেয়েছে এতেও তৃপ্ত আফসোসের চেয়ে।
ঢাকা পোস্ট : আপনি দেশের একজন কিংবদন্তিতুল্য ক্রীড়াবিদ। কিন্তু খেলতে গিয়ে না আসায় আপনি লোকচক্ষুর আড়ালে এবং জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারও পাননি এ নিয়ে আফসোস নেই।
বিমল : আমি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাইনি এ নিয়ে কোনো দুঃখ নেই। অলিম্পিকে অংশ নিতে এসে দেশে যাইনি আমাকে বিবেচনা নাই করতে পারে তা নিয়েও আমার কোনো আফসোস নেই। দুঃখ হচ্ছে যারা দেশে আছে অ্যাথলেটিক্সেই অনেকে রয়েছে তারা পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য তাদের না পাওয়া দুঃখজনক। আবার যাদের এসএ গেমসে পর্যায়ে পদক আছে তাদের অনেকেই পায়নি। আমার সবচেয়ে দুঃখের জায়গা ফেডারেশনে নাকি আমার নাম-ই নেই। একাধিকবার জাতীয় রেকর্ড ও দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানবের নাম কেন থাকবে না ফেডারেশনে। আমাকে অনেকে জিঞেস রেকর্ড ও টাইমিং নিয়ে এগুলো তো আমার কাছে থাকার কথা না। ফেডারেশনে খোঁজ নিলে শোনা যায় সেখানে নাকি কোনো রেকর্ড নেই এটা খুব দুঃখের।
ঢাকা পোস্ট : আপনি যখন দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব তখন আপনি মাত্র বিকেএসপির শিক্ষার্থী। এত কম বয়সে দক্ষিণ এশিয়ার মানব হলেন?
বিমল: আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। সেই পরিশ্রমের ফসলই পেয়েছি। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল পারব। ১০.৬১ টাইমিংয়ে আমি দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়েছিলাম। পরের গেমসে (১৯৯৫ মাদ্রাজ) আমি ১০.৬০ সেকেন্ড টাইমিংয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছি। নিজের টাইমিংয়ে উন্নতি করেও স্বর্ণপদক ধরে রাখতে পারিনি।

ঢাকা পোস্ট : স্প্রিন্টে দীর্ঘদেহী খেলোয়াড়রা বেশি সফল হন। আপনার উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুটের কাছাকাছি। এত স্বল্প উচ্চতায় আপনি কিভাবে স্প্রিন্টে এত সফল এবং আপনাকে কার্ল লুইসের সঙ্গে তুলনা হয়েছে বাংলাদেশে।
বিমল : আমার দৌড়ের অন্যতম অংশ ক্ষিপ্রতা। কার্ল লুইসের সাথে তুলনা সেটা ঐ ক্ষিপ্রতার কারণেই। স্প্রিন্টে স্টেপিং অনেককে এগিয়ে রাখে। উচ্চতার কারণে আমার স্টেপিং বেশি লাগলেও তীব্র ক্ষীপ্ততা দিয়েই অনেককে পেছনে ফেলার চেষ্টা করেছি। ফিনিশিংয়েও আমার যথেষ্ট দক্ষতা ছিল যা অন্যদের চেয়ে আমাকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রেখেছে।
ঢাকা পোস্ট : ৯৩ সাফ গেমসে শেষ ৩০ মিটার আপনি যেভাবে দৌড়িয়েছিলেন সেটা প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের চোখে লেগে আছে আবার অনেকের কাছে এখনো রহস্যময়। আপনার দৃষ্টিতে কি?
বিমল: যারা দেখেছে তারাই ভালো বলতে পারবে। আমার দৃষ্টিতে ঐ দিন আমার সব কিছু পারফেক্ট ছিল। স্টার্টিং থেকে শুরু করে এন্ড। কোনো কিছুর বিচ্যুতি ছিল না।
ঢাকা পোস্ট : গেমসে মূল আকর্ষণ ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। ঢাকায় অনুষ্ঠিত গেমসে আপনি সেরা হলেন। সরকার বা ফেডারেশন থেকে কেমন মূল্যায়িত হয়েছিলেন?
বিমল : সর্বসাকুল্যে আমি ২ লাখ টাকা পেয়েছিলাম। এ ছাড়া আর কিছু পাইনি।
ঢাকা পোস্ট : আশি-নব্বইয়ের দশকে ফুটবলের রমরমা অবস্থা। সেই সময় আপনি অ্যাথলেটিক্সে আসলেন কিভাবে?
বিমল : আমিও ফুটবল পছন্দ করতাম এবং খেলতামও। স্কুলের শিক্ষক আমার দৌড়ের গতিতে আকৃষ্ট হয়ে অ্যাথলেটিক্সে আগ্রহ সৃষ্টি করেন। সাভারে বেড়ে ওঠা আমার। বিকেএসপিতে অ্যাথলেটিক্সে ভর্তি হওয়ার পরই অ্যাথলেটিক্সই ক্যারিয়ার।
ঢাকা পোস্ট : প্রবাস জীবনের কর্মক্ষেত্রে যখন জানে আপনি প্রায় একশ কোটি মানুষের অঞ্চলে দ্রুততম মানব এবং অলিম্পিয়ানও ছিলেন। তখন কেমন প্রতিক্রিয়া পান?
বিমল : একশ কোটি নয় দেড়শ কোটির বেশি। ভারত নব্বইয়ের দশকেই একশ কোটি জনসংখ্যার দেশ ছিল। সাফ অঞ্চলে দেড়শ কোটি জনসংখ্যা হওয়ার কথা নব্ববইয়ের দশকে। দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব এবং অনেক আন্তর্জাতিক তারকাদের সঙ্গে ছবি দেখে তারা বিস্মিত হন এবং বাড়তি সম্মানও করেন। আমেরিকায় অ্যাথলেটিক্স নিয়ে কিছুদিন কাজও করেছিলাম।
এজেড/এফআই