আগের চেয়ে বেশি সুবিধা দিচ্ছি, কিন্তু এবার সফল হইনি
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল সৌদি আরব যেতে পারল না শেষ পর্যন্ত। অন্য দিকে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের গ্রুপে থাকা ভারত ও আফগানিস্তান দেশের বাইরে ক্যাম্প করছে ও অনুশীলন ম্যাচ খেলছে। ফুটবলীয় শক্তিতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দুর্বল দেশ নেপাল। সেই নেপালও ইরাকের বিরুদ্ধে খেলবে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে।
দেশের ফুটবলাঙ্গনে কয়েক দিন যাবৎ ঘুরেফিরে জাতীয় দলের অনুশীলন ম্যাচ নিয়ে আলোচনা। বাফুফে কর্মকর্তারা গত দুই-তিন দিন মিডিয়ায় এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি। আজ (বুধবার) দুপুরে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর ব্যক্তিগত অফিসে জাতীয় দল নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে।
জাতীয় দল দেশের বাইরে গিয়ে অনুশীলন ও ম্যাচ খেলতে না পারার বিষয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, ‘আমরা জাতীয় দলকে সৌদি আরব পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলাম ১০-১২ দিন আগে থেকে। সৌদি পাঠানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছি। তাদের ফুটবল ফেডারেশনও যথেষ্ট আন্তরিক ছিল। আমরা সেখানে অনুশীলন ম্যাচ ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পেতাম। শেষ পর্যন্ত আমরা সাকসেসফুল হইনি’।
বাফুফে ভিসা, টিকিট, হেলথ ইন্স্যুরেন্স, সব কিছু নিশ্চিত করলেও কোয়ারেন্টাইনে ছাড়ের বিষয়ে কাগজ হাতে পায়নি। করোনার সময়ে কোয়ারেন্টাইনে ছাড়ই মূল বিষয়। সেই কাগজ হাতে না পেয়েই সৌদি গমন নিশ্চিত যৌক্তিক ছিল কি না এই প্রসঙ্গে তার উত্তর, ‘সৌদি ফুটবল ফেডারেশন কোয়ারেন্টিন মওকুফের আশ্বাস দিয়েছিল এবং সর্বাত্মক চেষ্টাও করছিল। আমরা সফরের জন্য অন্য প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করেছিলাম। কোয়ারেন্টাইন মওকুফের জন্য অপেক্ষা করলে তখন আবার এই কাজগুলো পিছিয়ে পড়ত। আমরা সকল কাজ সম্পন্ন করে কোয়ারেন্টিন মওকুফের কাগজের অপেক্ষায় ছিলাম। রওনা হওয়ার আগের রাতে যখন সৌদি থেকে জানতে পারি কোয়ারেন্টাইন এখনো মওকুফ করাতে পারেনি। তখন জাতীয় দল ম্যানেজিং কমিটি অনিশ্চয়তার মধ্যে দল পাঠাতে চায়নি।’
সেই কোয়ারেন্টিন মওকুফের কাগজ বাফুফে পেয়েছে অবশেষে, ‘আমরা গতকাল সৌদি থেকে কোয়ারেন্টাইন ছাড়ের কাগজ পেয়েছি। সেটা অনেক বিলম্ব হওয়ায় আমরা আর সৌদি যাচ্ছি না’ বলেন সোহাগ।
বাফুফের প্রথম পরিকল্পনা ছিল চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে কাতারে দলকে পাঠিয়ে দেয়া এবং সেখানে কোনো ক্লাবের সঙ্গে খেলা। কাতারে জিম, সুইমিং সুবিধা না পাওয়ার জন্য দল যায়নি। ভারত ১৯ মে কাতার পৌছে অনুশীলন করছে এবং ২৮ মে ফিলিপাইনানের বিরুদ্ধে একটি অনুশীলন ম্যাচ খেলারও ব্যবস্থা করেছে। ভারতকে কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের এই সুবিধার ব্যাপারে বাফুফের বক্তব্য, ‘অন্য দেশ কি করল আমরা সেই মন্তব্যে যাবো না। কাতার আমাদের লিখিত দিয়েছে জিম সুইমিং সুবিধা থাকবে না। তখন আমাদের কোচিং স্টাফরা জোরালো কণ্ঠে কাতার যেতে রাজি হয়নি।’
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন কাতারের জিম, সুইমিং সংকটের জন্য তখন বলেছিলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে আমার খেলোয়াড়রা আমার কাছে থাকাই নিরাপদ মনে করি।’ পরবর্তীতে কোচের চাহিদার প্রেক্ষিতে বাফুফে দলকে সৌদি পাঠানোর চেষ্টা করে। বাফুফের বিকল্প পরিকল্পনা ছিল এখানেই স্পষ্টত।
সেটা পরোক্ষভাবে গতকাল অনুশীলন শেষে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন, ‘অন্যরা বাইরে খেলছে। আর আমরা এখন পরিকল্পনা করি।’ অধিনায়কের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সাধারণ সম্পাদকের প্রত্যুত্তর, ‘আমরা জাতীয় দলকে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করছি। আমাদেরও পরিকল্পনা ছিল কিন্তু সফল হতে পারিনি’।
এজেড/এমএইচ