‘জার্সি খোলার ভাবনা নিয়েই নেমেছিলাম’
গোলের খেলা ফুটবলে সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত গোল উদযাপন। সেই উদযাপনে অবশ্য ফিফার কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে। বিশেষ করে জার্সি খুললে হলুদ কার্ড দেখেন সংশ্লিষ্ট ফুটবলার। এরপরও আজ (মঙ্গলবার) নাকি জার্সি খোলার পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলেন আবাহনীর ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহীম।
ইব্রাহীমের একমাত্র গোলই আবাহনী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামডোনকে হারিয়েছে। গোল করেই জার্সি খুলে উদযাপন করেছেন তিনি। পরে এর কারণ জানিয়ে ইব্রাহীম বলেন, ‘৮ বছর আগে মোহামেডানের হয়ে আবাহনীর বিপক্ষে গোল করেছিলাম। সেই সময় জার্সি খুলে উদযাপন করেছি। এবার আবাহনীতে আসার পর থেকে মোহামেডানের বিপক্ষে গোল করেও এমন উদযাপনের ইচ্ছে ছিল। যাতে দুই দলের সমর্থকরাই খুশি থাকেন। তাই আজ গোলের পর এই উদযাপন করেছি।’
বাংলাদেশের দুই ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় ক্লাব আবাহনী ও মোহামেডান। দুই ক্লাবে খেলা এবং দুই ক্লাবের বিপক্ষেই গোল করে জেতানোর তালিকা খুব সংক্ষিপ্ত। তাই ইব্রাহীম একটু বেশিই উচ্ছ্বসিত, ‘গোল করা সবসময়ই আনন্দের। আর ডার্বি ম্যাচে গোল করাও অবশ্যই আনন্দের। বেশ কয়েক বছরের ব্যবধানে আমার একমাত্র গোলে দুই দলই জিতেছে। এটা আমার জন্য বড় তৃপ্তির।’
আট বছর আগে ও পরে কেবল স্কোরলাইন ও গোলদাতার মাঝে সামঞ্জস্য নয়, গোলের সময়ও বেশ কাছাকাছি। দুটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ইব্রাহীম অর্ধ যুগ আগের ও পরের গোলের তুলনা করলেন এভাবে, ‘আট বছর আগে আমি উঠতি পর্যায়ের খেলোয়াড় ছিলাম। সেই গোল আমাকে বিশেষ পরিচিতি দিয়েছিল। আজকের গোলটি ক্লাবের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আবাহনী চলতি মৌসুমে বিদেশি ছাড়াই খেলছে। ফেডারেশন কাপ ও লিগ মিলিয়ে আট ম্যাচের মধ্যে হার ও ড্র মাত্র একটি। সব মিলিয়ে আবাহনীর জালে বল জড়িয়েছে মাত্র একবার। বিদেশি ছাড়া আবাহনীর এই পারফরম্যান্স সম্পর্কে ইব্রাহীম বলেন, ‘আমাদের দলে সবাই দেশি খেলোয়াড়। জাতীয় দলের ৬-৭ জন ফুটবলারও রয়েছেন আমাদের স্কোয়াডে। প্রতিটি ম্যাচই আমরা মনে করি জাতীয় দলের জন্য খেলছি। ক্লাব হলেও আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে তাড়না থাকে দেশের জন্য ভালো কিছু করতে হবে।’
এক সময় জাতীয় দলে নিয়মিত ফরোয়ার্ড ছিলেন ইব্রাহীম। এরপর অনিয়মিত, তারপর এক পর্যায়ে দলে ব্রাত্য তিনি। চলতি মৌসুমের পারফরম্যান্সে আবারও লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়ানোর ইচ্ছে কক্সবাজারের এই ফুটবলারের, ‘সব ফুটবলারই চায় জাতীয় দলে খেলতে। মাঝে আমি নিয়মিত ক্লাবে খেলতে পারিনি এবং গোল পাইনি। এতে হয়তো কোচও বিবেচনা করেনি। এবার আশা করছি জাতীয় দলে ডাক পাব।’
ইব্রাহীম ২০১৫ সালে মোহামেডানে খেলে তারকা খ্যাতি পেলেও পরবর্তীতে বসুন্ধরা কিংসে অনেক সময় কাটিয়েছেন। সেখানে অর্থ পেলেও বেশি সুযোগ পাননি খেলার। বসুন্ধরা-শেখ রাসেল ঘুরে এবারই প্রথম আবাহনীতে এসেছেন। আগের ক্লাবগুলোতে না খেলার স্মৃতি আর স্মরণ করতে চান না। আবাহনীর হয়ে আজ গোল করলেও মৌসুমের গোলসংখ্যা নিয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই তার, ‘আসলে আমরা ১-২টি গোল দিয়ে রক্ষণে মনোযোগ দেই। আমাদের এ রকমই কৌশল। যখনই সুযোগ পাই গোলের চেষ্টা করব।’
এজেড/এএইচএস