বিপিএলে অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাল এনএসসি
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান একাদশ আসরের পর্দা ওঠার আগেই কনসার্ট ও অন্য আয়োজন দিয়ে আলোড়ন তুলেছিল। মাঠের খেলা শুরু হওয়ার দিন থেকে অব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক আলোচনার সূত্রপাত। যা চোখ এড়ায়নি ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক সংস্থা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের।
গত ৩০ ডিসেম্বর বিপিএলের উদ্বোধনী দিনে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেননি। অনুষ্ঠানে ছিলেন ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। তার চোখে বিপিএলের অব্যবস্থাপনা চোখে পড়েছে। তিনি বিষয়টি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদকে অবহিত করেছেন।
বিপিএল অব্যবস্থাপনা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব জাহেদী বলেন, ‘টিকিটিং নিয়ে দর্শকদের একটা ভোগান্তি ছিল। পাশাপাশি স্টেডিয়ামে মুগ্ধ কর্নারসহ অসঙ্গতি ছিল আরও বেশ কিছু বিষয়ে। এই বিষয়গুলো উত্তরণের জন্য বিসিবি সভাপতিকে বলা হয়েছে।’
উদ্বোধনী দিনের মতো আজও বিপিএলে অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে। মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের কোল ঘেষেই সুইমিংপুল কমপ্লেক্স। সেই কমপ্লেক্সে টিকিট না পেয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাঁতার ফেডারেশনের কয়েকটি কক্ষের কাচ ও গ্রিল ভেঙে গেছে। সামগ্রিক ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। এ ছাড়া বিসিবির কাছেও একটি নির্দেশনামূলক চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। এনএসসি’র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে টিকিট সংক্রান্ত বিষয়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনার পাশাপাশি বিপিএল আয়োজনকে আরও গতিশীল ও অধিকতর স্বচ্ছ করার জন্য বিসিবিকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিসিবি সভাপতি বরাবর প্রেরিত এই চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বিসিবির সকল পরিচালককেও।
বিসিবি অন্য সকল ফেডারশেনের মতোই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধিভুক্ত। গত প্রায় দেড় যুগ বিসিবির ওপর তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণই ছিল না এনএসসি’র। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবিকে জবাবদিহিতার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবির অভিভাবক সংস্থা। বিসিবির বর্তমান সভাপতি আবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত পরিচালকও। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে মন্ত্রণালয়-এনএসসির বিসিবি সভাপতির প্রতি যেকোনো বার্তা স্বাভাবিকই।
আরও পড়ুন
বিপত্তি ঘটেছে অন্যত্র। ৩০ ডিসেম্বর বিসিবি সভাপতির সঙ্গে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মাহফুজ আলমের বিপিএল অব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে বাদানুবাদ হয়েছে। উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার সঙ্গে বিসিবি সভাপতির মতানৈক্যের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব সেই সময় উপস্থিত ছিলেন। এই প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, ‘বিপিএলের সঙ্গে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ও যুক্ত হয়ে কাজ করছে সুন্দর একটি তারুণ্যের উৎসব উপহার দেওয়ার জন্য। আমরা ক্রীড়া মন্ত্রণালয় চাই বিপিএল সুন্দর ও সকলের অংশগ্রহণের হোক। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি (মাহফুজ আলম) পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন।’
জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বর্তমান সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা হয়েছেন। উপদেষ্টা/মন্ত্রী ইচ্ছা অনুযায়ী কয়েকজন ব্যক্তি নিয়োগ প্রদান করতে পারেন। ক্রীড়া সাংবাদিক মাহফুজ আলমকে ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (প্রেস সেক্রেটারি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। ক্রীড়া উপদেষ্টা আগে ক্রীড়াঙ্গনে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন না। মাহফুজ ক্রীড়া সাংবাদিকতা করায় ক্রীড়াঙ্গনের অনেক বিষয়েই জ্ঞাত। তাই তার ওপরই উপদেষ্টার নির্ভরশীলতা একটু বেশি বলে ভাবেন অনেকেই।
এজেড/এএইচএস